মুজিব ভাই - এ বি এম মূসা ( courtecy; google pdf ) and বই ঘর )



মুজিব ভাই এ বি এম মূসা ভূমিকা বই লেখা সহজ, বইয়ের ভূমিকা লেখা তত সহজ নয়। কোনো বইয়ের ভূমিকা লেখা অনেকটা সমুদ্রে সাতার কাটার মতো। কোন দিকে সাতার কাটলে সহজে তীরে পৌছােব, তা যেমন জানা থাকে না, তেমনি কোনো বইয়ের ভূমিকা লিখতে বসলেও তার কোন দিক নিয়ে লিখলে বইটির গোটা পরিচয় তুলে ধরা যাবে, তা বোঝা কষ্টকর। বন্ধুবর এবিএম মূসার মুজিব ভাই বইটি আকারে খুব বড় নয়, কিন্তু প্রকারে বড়। অর্থাৎ সমগ্র মুজিবকে বুঝতে হলে এই ছোট বইটি যত সাহায্য জোগাবে, অনেক মহাভারতসদৃশ বড় বইও তা পারবে না। বইটির নামকরণই এর সবচেয়ে বড় ভূমিকা। মূসা কেন এ বইয়ের ভূমিকা লেখার জন্য আমার মতো দূরদ্বীপবাসী অভাজনকে বেছে নিলেন, তা আমি জানি না। সে কি বন্ধুগ্ৰীতির জন্য? নাকি আমরা দুজনেই বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা হিসেবে গণস্বীকৃতি পাওয়ার পরও তাঁকে মুজিব ভাই ডাকতাম, এই সুবাদে? বঙ্গবন্ধুকে শেষ জীবনে প্রায় সকলেই বঙ্গবন্ধু নামে সম্বোধন করতেন। একেবারে অন্তরঙ্গ দু-একজন ডাকতেন লিডার। বঙ্গবন্ধু নিজেও একবার ('৭০-এর নির্বাচনের আগে) রমনার রেসকোর্সের এক উত্তাল জনসমুদ্রে দাড়িয়ে বলেছিলেন, “আমি আপনাদের নেতা নই। আপনাদের নেতা শেরেবাংলা ফজলুল হক, আপনাদের নেতা শহীদ সোহরাওয়াদী। তাঁরা এখন কবরে শুয়ে আপনাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমি আপনাদের মুজিব ভাই। আপনাদের সংগ্রামের সাথি।” তবু, ভাই থেকে তিনি জাতির পিতৃত্বে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন নিজের কর্মগুণে, সাহস ও সংগ্রামের গুণে। যে গুণের জন্য মোস্তফা কামাল পাশাকে নব্য তুরস্কের মানুষ নাম দিয়েছিল আতাতুর্ক বা তুরস্কের পিতা। শেখ মুজিবুর রহমান নামের এক নেতাকেও বাংলার মানুষ ভালোবেসে প্রথম বন্ধু (বঙ্গবন্ধু) ডেকেছে, তারপর জীবন বাজি রেখে যে বন্ধু তাদের স্বাধীনতা ও মুক্তির বার্তা ঘোষণা করেছেন, তাকে স্বেচ্ছায় সানন্দে পিতৃত্বে বরণ করে নিয়েছে। তিনি হয়েছেন জাতির পিতা। গঠন করেছেন একটি স্বাধীন দেশ ও স্বাধীন জাতি । এতৎসত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু তাঁর ‘মুজিব ভাই' সম্বোধনটি খুব ভালোবাসতেন। কেউ ভুলেও তাকে মুজিব ভাই ডেকে ফেললে দেখতাম, তার চোখেমুখে আনন্দের প্রতিভাস। মনে হতো, তিনি যেন আপনি সত্তায় ফিরে গেছেন। আমার এক দিনের ঘটনা মনে আছে। বঙ্গবন্ধু তখন রাষ্ট্রপতি। ছােটবড় সকলেই তাঁকে বঙ্গবন্ধু নামে সম্বোধন করেন। একদিন দ্বিতীয় গণভবনে তাজউদ্দীন আহমদ এসেছেন। আমিও তখন বঙ্গবন্ধুর কাছে বসা। তাজউদ্দীন আহমদকে বঙ্গবন্ধুই ডেকেছিলেন। কী একটা জরুরি ব্যাপারে আলোচনার জন্য। তাজউদ্দীন আহমদ বঙ্গবন্ধুকে লিডার সম্বোধন করতে দেখেছি। আগে হয়তো ডাকতেন মুজিব ভাই। সেদিন কথায় কথায় হঠাৎ বঙ্গবন্ধুকে সম্বোধন করেছিলেন মুজিব ভাই। বঙ্গবন্ধু সেই সম্বোধন শুনে কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তাজউদ্দীন আহমদকে সহসা জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, “তাজউদ্দীন, আবার একবার মুজিব ভাই বলে ডাকো। কত দিন এই ডাকটা শুনি না। বঙ্গবন্ধু, লিডার-এসব ডাক শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে গেছে। তোমার মুখে মুজিব ভাই ডাকটা শুনে মনে হলো, আমি যেন ছয় দফার সেই সংগ্ৰামী দিনগুলোতে ফিরে গেছি! আমি আবার তোমাদের পুরোনো দিনের সেই মুজিব ভাই।” বঙ্গবন্ধু হওয়ার আগে এই নেতাকে সারা বাংলার মানুষ জানত মাত্র একটি নামে, "শেখ সাহেব” । এখনো শেখ সাহেব বললে বাংলার হাজার হাজার শেখের কাউকে বোঝায় না, বোঝায় একমাত্র শেখ মুজিবুর রহমানকে। বাংলার সাধারণ মানুষ কোনো নেতাকে ভালোবাসলে তার নামের আগে বিশেষণের পর বিশেষণ বসায় না। বরং তার নামটি ছোট্ট করে ফেলে। যেমন শেরেবাংলা ফজলুল হককে তারা বলত ‘হক সাহেব' । হক সাহেব বললে বাংলাদেশে এখনো আর কোনো হক সাহেবকে বোঝায়। না, বোঝায় একমাত্র ফজলুল হক সাহেবকে। বিস্ময়ের কথা, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকেও দেশের শিক্ষিত জনেরা জননেত্রী, দেশরত্ন, ভাষাকন্যা ইত্যাদি নানা খেতাবে ভূষিত করেছেন। কিন্তু বিশাল গ্রামবাংলার সাধারণ চাষি-মজুর মানুষের কাছে শেখ হাসিনার পরিচয় শেখের বেটি। এই শেখের বেটি বললে বাংলাদেশের আর কোনাে শেখের কন্যাকে বোঝায় না, বোঝায় একমাত্র শেখ হাসিনাকে । শেখ সাহেব বা মুজিব ভাই বললেও যে হিমালয়সদৃশ মানুষটির সামগ্রিক পরিচয় ফুটে ওঠে, বঙ্গবন্ধু বা জাতির জনক বলার মধ্যে সেই সমগ্র পরিচয়টি ফুটে ওঠে না । শেষের নামগুলো পদবি, পরিচয় নয়। গ্রন্থকার মূসার দূরদর্শিতা এখানেই যে, একটি ছােট স্মৃতিচারণামূলক বইয়ে তিনি সমগ্র মুজিবকে তুলে ধরতে চেয়েছেন এবং তাতে সফল হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে এখন বাজারে ছােট-বড় অনেক বই। কিন্তু এমন অন্তরঙ্গ আলোকে নেতা, ভাই, বন্ধু এবং পিতা হিসেবে মুজিবচরিত্রের চিত্ৰায়ণ কমই চােখে পড়েছে। বইটির পাণ্ডুলিপি পড়তে পড়তে মনে হয়েছে, আমার চিরচেনা মুজিব ভাই চােখের সামনে বসে আছেন। আমরা সাংবাদিক তিন বন্ধু-ফয়েজ আহমদ, এবিএম মূসা এবং আমি। বঙ্গবন্ধু আমাদের নাম দিয়েছিলেন, আপদ, বিপদ ও মুসিবৎ। ফয়েজ ছিল আপদ, মূসা বিপদ এবং আমি মুসিবৎ। মূসা তার বইতে এ কথাটি উল্লেখ করেছেন। আমরা বঙ্গবন্ধুকে ডাকতাম মুজিব ভাই, তিনি বঙ্গবন্ধু হওয়ার পরেও । একটি ছোট্ট গল্প বলি। বঙ্গবন্ধু তখন স্বাধীন বাংলার অবিসংবাদিত নেতা, জাতির জনক। তাঁর পিতা শেখ লুৎফর রহমান তখনো বেঁচে ছিলেন। সাংবাদিকেরা তাকে একবার কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “আপনি এখন জাতির জনকের পিতা । কেমন বোধ করছেন?” তিনি হেসে উত্তর দিয়েছিলেন, “সে তোমাদের কাছে জাতির জনক। কিন্তু আমার কাছে সে এখনো ছোট্ট খোকা। যাকে আমি চিরকাল খোকা বলে ডেকেছি।” গ্রন্থকার মূসা ঠিকই ধরেছেন, যে মানুষটি আজ বঙ্গবন্ধু, জাতির জনক ইত্যাদি নামে বিশ্বনন্দিত বিশাল ব্যক্তিত্বে পরিণত, তিনি আমাদের মতো কিছু মানুষের কাছে এখনো মুজিব ভাই আছেন। এই নামটির মধ্যে আমরা এমন একজন মানুষকে খুঁজে পাই, যিনি মহামানব (great man) হয়েও অতি কাছের মানুষ। মূসার মুজিব ভাই বইটিতে এই কাছের মানুষটিকেই অত্যন্ত অন্তরঙ্গ আলোকে তুলে ধরা হয়েছে। এই বইয়ে এমন সব অজানা কথা আছে, যা এই বিরাট মাপের মানুষটির ঘরোয়া চরিত্রের পাশাপাশি তীর মহত্ত্ব, বিরাট হৃদয়, অসাধারণ মানবিক গুণগুলো তুলে ধরেছে। মুজিব-চরিত্র বহুমাত্রিক। পুত্র, পিতা, স্বামী, বন্ধু হিসেবে তার চরিত্রের যে বিশেষত্ব; নেতা, রাজনীতিক, সংগ্ৰামী, সেনাপতি ও রাষ্ট্রনায়ক হিসেবেও অনুরূপ বিশেষত্বগুলো রয়েছে। গ্রন্থকার মূসা ছােট ছােট স্মৃতিকথার মধ্য দিয়ে তা আশ্চর্য নৈপুণ্যের সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন। ভাষা অন্তরঙ্গ, বৰ্ণনা হৃদয়গ্রাহী। মুজিব ভাই বইটি কোনো গবেষণাগ্রন্থ নয়। বইটি পড়তে গিয়ে এখানেই স্বস্তি পেয়েছি। এক মনীষী বলেছেন, “গবেষকের দেখার মধ্যে অনেক ফাঁক থাকে। চোখের দেখার মধ্যে থাকে বিভ্রম। এই বিভ্রমটুকু কাটিয়ে উঠতে পারলে চােখের দেখার কোনো তুলনা নেই।” বন্ধুবর মূসা এই মনীষী-বাক্যটি সঠিক প্রমাণ করেছেন। তিনি বই-পুস্তক ঘেঁটে, গবেষণার দ্বারা নয়, চােখের দেখার আলোকে যে বিরাট মানুষটির ছবি ক্লোজআপে ধরে রেখেছেন, সেই ছবি ধরে রাখার কাজে চােখের দেখার বিভ্রমটুকু তিনি এড়াতে পেরেছেন। বইটি বিভিন্ন সময়ের লেখা স্মৃতিকথার সংকলন, কিন্তু বিষয়ের পারম্পর্য রক্ষা পাওয়ায় মনে হয় একটি ধারাবাহিক পৰ্যায়ক্রমিক লেখা । বইটি পড়তে গিয়ে হােঁচটি খেতে হয় না এবং যার সম্পর্কে এই স্মৃতিকথা, তাকে সঠিকভাবে চিনতেও কষ্ট হয় না। বইটির পাণ্ডুলিপিতে ১১টি অধ্যায় রয়েছে: ‘অন্তরঙ্গ আলোকে কিছু স্মৃতি’, ‘রঙ্গরসে বঙ্গবন্ধু’, ‘প্রেরণাদায়িনী ফজিলতুন্নেসা মুজিব’, ‘স্মৃতিতে কামাল-জামাল-রাসেল’, ‘সাতই মার্চের যুদ্ধ ঘোষণা’, ‘মওলানা ও তাঁর মজিবর’, ‘বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসা এবং একটি সংশ্লিষ্ট কাহিনি', 'শেখ মুজিবের বিশাল হৃদয়খানি’, ‘অকুতোভয় পিতা, নিবেদিতপ্রাণ পুত্র’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা অ্যান্ড দ্য ট্রায়াল অব হেনরি কিসিঞ্জার’ । প্রত্যেকটি অধ্যায় সুলিখিত এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ। আগেই বলেছি, বইটিতে অত্যন্ত কাছে থেকে দেখা মানুষ মুজিব আছেন। আছে তাঁর রঙ্গরসপ্রিয়তা । তার রাজনৈতিক নেতা হয়ে ওঠার পেছনে পত্নী ফজিলাতুন্নেসা ওরফে রেনুর সর্বত্যাগী, সাহসী ভূমিকার কথা। মওলানা ভাসানী ও শেখ মুজিবের সম্পর্কের অনেক অজানা তথ্য বইটিতে আছে । শেখ কামালের ব্যাংক ডাকাতির কথা যে উদ্দেশ্যমূলক বানোয়াট প্রচার ছিল, দক্ষ সাংবাদিকতার মতো তিনি তা সঠিকভাবে তুলে ধরেছেন। বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ঘোষণাতে তিনি নিজের ব্যাখ্যা যুক্ত করেছেন। বলেছেন, এটা যুদ্ধ ঘোষণা এবং স্বাধীনতা রক্ষার ডাক । বঙ্গবন্ধু যে কী বিশাল হৃদয়ের মানুষ ছিলেন, বইটিতে তার প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে। পাকিস্তানের কারাগার থেকে স্বাধীন বাংলায় ফিরে আসার পর নিজের পরম রাজনৈতিক শক্ৰদেরও ক্ষমা করে তিনি তাদের ব্যক্তিগতভাবেও গোপন সাহায্য দিয়েছেন, তার একাধিক ঘটনা মূসা উল্লেখ করেছেন । সবচেয়ে হৃদয়স্পৰ্শী ঘটনা বাংলাদেশ ও বাঙালির সঙ্গে শক্ৰতা করার জন্য কুখ্যাত মর্নিং নিউজ (অধুনালুপ্ত) পত্রিকার অবাঙালি সম্পাদক বদরুদিনের প্রাণরক্ষা এবং তাঁকে ঢাকার আসাদগেটের বাড়ি বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রায় তার পুরো দামসহ পাকিস্তানে চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া। এই বদরুদ্দিন দিনের পর দিন শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে লিখতেন, তাঁর চরিত্র হনন করতেন । এই ধরনের মহানুভবতার ঘটনা আমারও অনেক জানা আছে। ‘বাংলাদেশ’ শীর্ষক অধ্যায়টি। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে ফিরে না এলে দেশটির স্বাধীনতাই যে অর্থহীন হয়ে যেত এবং রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধে দেশটির পরিণতি কী দাঁড়াত, মিত্ৰ ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশ ছেড়ে যেত কি না, হাজার হাজার কোলাবরেটর ও তাদের নেতাদের (যারা এখন বঙ্গবন্ধুর নিন্দা ও সমালোচনায় মুখর) জীবন রক্ষা যে দুরূহ হতো, এ-সম্পর্কিত প্রশ্ন ও প্রসঙ্গ সামনে টেনে এনে একজন সৎ ও নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকের দৃষ্টি নিয়ে তিনি বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভূমিকা বিশ্লেষণ করেছেন। সিআইএ ও হেনরি কিসিঞ্জারের সংশ্লিষ্টতা তিনি ট্রায়াল অব হেনরি কিসিঞ্জার বইটির তথ্য এবং নিজের অনেক তথ্য ও যুক্তিসহ তুলে ধরেছেন। বইটিতে ছােটখাটাে কিছু ভুল, ঠিক ভুল নয়, স্মৃতিবিভ্ৰাট আছে। যেমন, এক স্থানে তিনি জেনারেল ওসমানীকে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের সর্বাধিনায়ক লিখেছেন। জেনারেল ওসমানী মুক্তিযুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন না, ছিলেন প্রধান সেনাপতি। বইয়ের আরেক স্থানে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় রাষ্ট্রপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু যে সর্বাধিনায়ক ছিলেন, সে কথাও উল্লেখ করেছেন। সুতরাং তাঁর আগের উল্লেখটি স্লিপ অব পেন মনে হয় । আরেক স্থানে ‘মওলানা ভাসানী তাঁর কিছু অনুসারীসহ আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন করেন’ কথাটিও সর্বাংশে সঠিক নয়। সাতচল্লিশের বাংলা ভাগের পর মুসলিম লীগের আবুল হাশিম ও সোহরাওয়ার্দী গ্রুপের নেতা-কর্মীরা (তাদের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানও ছিলেন) ঢাকায় এসে পাকিস্তানে একটি গণতান্ত্রিক বিরোধী দল গঠনের উদ্যোগ নেন। আবুল হাশিম। তখনো কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসেননি। সোহরাওয়ার্দীপন্থী নেতাদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী বগুড়া, টি আলী, এম এ মালেক মন্ত্রিত্বের অফার পেয়ে প্রাদেশিক মুসলিম লীগের ক্ষমতাসীন নাজিম উদ্দিন গ্রুপে চলে যান। মওলানা ভাসানী তখন সদ্য আসাম থেকে এসেছেন । প্ৰাদেশিক আইন পরিষদের সদস্য। মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিনের সঙ্গে রাষ্ট্রভাষা ও অন্যান্য ব্যাপারে তীর তীব্র মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় তিনি মুসলিম লীগ ত্যাগ করে নতুন বিরোধী দল গঠনে নেতৃত্ব দিতে রাজি হন। আওয়ামী মুসলিম লীগ নামটি তাঁরই দেওয়া। মুজিব ভাই বইটি আমি এক নিঃশ্বাসে পড়েছি। মনে হয়েছে, বইটি পড়ার সময় লেখক বন্ধুবর মূসার চেয়েও বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য পেয়েছি বেশি। তরুণ প্রজন্মের যেসব পাঠক বঙ্গবন্ধুকে ব্যক্তিগতভাবে দেখার সুযোগ পাননি, তারাও বইটি পাঠের সময় বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য অনুভব করবেন। ছােট চৌবাচ্চার পানিতে যেমন সূর্যের মতো বিরাট গ্রহের প্রতিবিম্ব ধরে রাখা যায়, তেমনি এবিএম মূসার মুজিব ভাই নামের ছােট বইটিতে এক মহানায়কের বিশাল চরিত্রকেও তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে। আবদুল গাফফার চৌধুরী লন্ডন, ১ আগষ্ট ২০১২

Read more at: https://www.banglapdf.co/2018/06/blog-post_348.html

মন্তব্যসমূহ