কিছু মেডিকেল ট্রিপস ও জলবসন্তের প্রতিকার ।


    স্বাস্থ্য কণিকা
যে খাদ্য ফ্যাট কমিয়ে দেয়

* মাছ : ওমেগা-৩ থাকে প্রচুর
* সিম : সকল প্রকার সিমে ফ্যাট কম আঁশ বেশি, প্রোটিন বেশি এবং গ্লুকোজে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম।
* বাদাম : বাদামও আপনার চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে
* ডিম ও চর্বি পোড়ানোর মোক্ষম খাদ্য
* ব্রকোলিতে খুব বেশি ভিটামিন সি থাকে। চর্বি পোড়ানোর খুবই ভাল খাদ্য ব্রোকোলি।


ইউরিক এ্যাসিড তথা বাত বাড়ে যে খাদ্যগুলোতে

ইউরিক এ্যাসিড পিউরিন ভেঙে হয়, ইউরিক এ্যাসিড শরীরে একটা গ্রহণযোগ্য সীমার মধ্যে শরীরে থাকে এবং কিডনির মাধ্যমে তা নিষ্কাশিত হয়। যদি খাদ্যে পিউরিনের গ্রহণ বেশি হয় তবে ইউরিক এ্যাসিড অগ্রহযোগ্য মাত্রায় বেড়ে যায়।
এবং গাউট বা বাত করতে পারে।

যে খাদ্যগুলো শরীরে ইউরিক এ্যাসিড বাড়ায় তা হলো

* মাংস : মাংসে সবচেয়ে বেশি পিউরিন থাকে। গরু বা খাসির লিভার, হৃদপিন্ড, কিডনি ও ব্রেনে সবচেয়ে বেশি পিউরিন থাকে। যদি আপনি বাতে ভুগেন তবে অবশ্যই আপনাকে লাল মাংস পরিত্যাগ করতে হবে।
* সামদ্রিক মাছ : ক্রাব, চিংড়ি সারডাইনস, টুনাতে এবং স্যামন ফিসে প্রচুর পিউরিন থাকে। তাই গ্রহণে ইউরিক এ্যাসিড বেড়ে যাবে। পরিত্যাজ্য বাতের রোগীদের বেলায়।
* শাকসবজি : যদিও কিছু শাকসবজিতে প্রচুর পিউরিন থাকে। কিন্তু তা লাল মাংস বা সামদ্রিক মাছের মতন ইউরিক এ্যাসিড বাড়ায় না। তবে পরিমাণ মতন এগুলো খেতে হবে যেমন মাশরুম, সিম, পিয়াজ, ডাল ব্রোকোলি, কফি, গাজর, স্পিনাক।
* ইস্ট : যে খাদ্যে ইস্ট থাকে তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য কারণ এগুলোতে অতিমাত্রায় পিউরিন থাকে। যেমন বেয়ার এবং ব্রেডে।
* ফল : কিছু ফলে পিউরিন থাকে যেমন খেজুর ও ডুমুর। কলা, আপেলে পিউরিন থাকে।
দুভাবে শরীরে ইউরিক এ্যাসিডের ব্যালান্স সম্ভব, যে খাদ্যে শরীরে ইউরিক এ্যাসিড বেড়ে যায় তা পরিত্যক্ত করে এবং যে খাদ্যে বা ফলে কার্বহাইড্রেট ও পানির পরিমাণ বেশি তা গ্রহণ করে


স্বাস্থ্যময় হৃৎপিন্ডের জন্য

* খাদ্যের পরিমাণ সম্পূর্ণ। খাবেন বেশি করে অল্প ক্যালরির অতিপুষ্টিকর খাদ্য এবং কম খাবেন বেশি ক্যালরি ও সোডিয়ামযুক্ত খাদ্য।
* বেশি করে শাকসবজি খান
* খোসা সমেত যেমন ব্রাউন আটা, খোসা সমেত সিরিয়াল ইত্যাদি বেশি করে খাবেন।
* খারাপ ফ্যাট, যেমন ঘি মারজারিন পরিত্যাজ্য এ ছাড়া মাংস থেকে ফ্যাটটুকু ছাড়িয়ে নিন।
* অলিভ ওয়েল, কানোলা ওয়েল হার্টের জন্যে ভাল খারাপ- ঘি, ব্যাকন চর্বি, ঝোল, কোকো বার্টার যা কিনা চকোলেটে দেয়া থাকে।
* অল্প ফ্যাটের প্রোটিন সন্ধান করুন
যেমন মুরগির মাংস ও মাছ ও ডিম হার্টের জন্যে ভাল। দুধের ক্ষেত্রে মাখন তোলা দুধ এবং মুরগির চামড়াবিহীন মুরগির মাংস খেতে হবে। মাছে প্রচুর ওমেগা-৩ থাকে যা কিনা শরীরের ভাল ট্রাইগ্লিসারাইডস কমিয়ে দেয়। ওমেগা-৩ বেশি থাকে ফ্লাস্কসিডে বাদামে সয়াবিন ও ক্যানোলা তেলে।
সিম, পিয়াজ ডালে প্রচুর প্রোটিন থাকে, ফ্যাট কম থাকে এবং কোলেস্টেরল থাকেই না।
* সোডিয়াম তথা খাওয়ার লবন কমিয়ে দিন
* আগেভাগে আপনার খাদ্য মেনু ঠিক করুন
* দু’একদিন ব্যত্যয় ঘটলে কিছু হবে না


জলবসন্ত শুরু হয় জ্বর ও গোটা দিয়ে। গোটাগুলো বিভিন্ন আকার ও প্রকৃতির হয়। ২-৫ দিন গোটা গোটা র‌্যাস বের হয়।

মুখমন্ডলে ও শরীরের মধ্যখানে প্রথমে বের হয়। তারপর হাত পায়ের দিকে ছড়াতে থাকে। সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গে এই গোটা হয়ে থাকে। এমনকি মুখগহ্বরের মধ্যেও হতে পারে।
সঙ্গে থাকে চুলকানি। চুলকানিতে ঘটে দ্বিতীবারের মতো প্রদাহ, কালো দাগ হয়ে যেতে পারে। 

যদি ১০ দিনেরও বেশি র‌্যাস বের হতে থাকে।


চিকিৎসা ও যত্ন


এ কথা ঠিক, চিকেনপক্স বা জলবসন্ত রোগের জন্য কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তবে চুলকানি কমিয়ে একটু আরাম দেয়া যেতে পারে এবং অতি মাত্রায় ছড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতাকে রোধ করা যেতে পারে।
ব্যথা নিরোধক : যদি রোগীর গায়ে বেশি ব্যথা থাকে বা উচ্চতাপমাত্রায় ভুগতে থাকে, তবে ব্যথা নিরোধক বড়ি বা সিরাপ প্যারাসিটামল দিতে হবে। আইকুপ্রোফেন না দেয়াই ভাল। কারণ  সেক্ষেত্রে ত্বকে প্রতিক্রিয়া হতে পারে। এ্যাজমা থাকলেও আইব্রুফেন দেয়া যাবে না। পেটের ব্যথা থাকলেও দেয়া যাবে না।

 রোগী  গর্ভবতী হলে এবং বসন্ত রোগে আক্রান্ত হলে

ব্যথার জন্য প্যারাসিটমলই উপযোগী ওষুধ। এ্যাসপিরিন বড়ি বসন্ত রোগে অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
গর্ভবতী মহিলা যদি বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয়, তবে তাঁকে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে দ্রুত। এজন্য তাকে এন্টিভাইরাল-এ্যাসাইক্লোভির ও ইমিউনোগ্লোবিন দিতে হবে।
পানি খেতে হবে  বেশি করে : বেশি করে পানি পান ন  করলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা  দিতে  পারে  ।পানিশূন্যতা সুস্থতাকে বিঘ্নতা   করে। পানি মুখের ভেতর বসন্তজনিত ক্ষতকে আরামদায়ক করে তুলে।
লবণযুক্ত খাদ্য কম খাবেন
বেশি চুলকাবেন না : বিশেষ করে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে চুলকানোটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে নখগুলো কেটে দিতে হবে। চুলকানি বেশি হলে লোশিওক্যালামিন ব্যবহার করা যেতে পারে। ক্লোরামফেনিকল বড়ি বা সিরাপ (এভিল, হিস্টাল) চুলকানোর জন্য নিরাপদে ব্যবহার করা যেতে পারে।
ঢিলেঢালা পোশাক পড়ুন
ঢিলেঢালা সুতি পোশাক পরতে হবে, না অতি গরম না অতি ঠান্ডা পোশাক। ত্বকে যেন ঘর্ষণজনিত ক্ষত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এন্টিভাইরাল প্রদান
সাধারণত এ্যাসাইক্লোভির (এন্টিভাইরাল) ওষুধ দেয়া হয় না। তবে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে দেয়া যেতে পারে।
১. বসন্ত আক্রান্ত গর্ভবতী মহিলাকে দেয়া যেতে পারে।
২. বয়স্ক মানুষ বসন্তে আক্রান্ত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়।
৩. নবজাতকের ক্ষেত্রে।
৪. যে সব মানুষের জন্মগত বা চিকিৎসাজনিত কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে।
৫. আদর্শগতভাবে এ্যাসাইক্লোভির গায়ে গুটি বের হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিতে হয় এবং এক্ষেত্রে ফলাফল ভাল হয়। এ্যাসাইক্লোভির প্রদানে বসন্তের প্রকোপ কম হয় এবং ছড়ায় কম।
এ্যাসাইক্লোভির খেলে অবশ্যই পানির পরিমাণ বাড়িয়ে দেবেন। কারণ এ্যাসাইক্লোভিরে বমি বমি ভাব এবং ডায়রিয়া হতে পারে।

ইমিউনোগ্লোবিন চিকিৎসা

ইমিউনোগ্লোবিন হলো শারীরিকভাবে সুস্থ ব্যক্তির শরীর থেকে নেয়া এন্টিবডির সম্ভলিত ঔষধ। এটা ইনজেকশনের মাধ্যমে দেয়া হয়। বসন্তের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার হয় না। বরং যাদের অনেক বেশি মারাত্মক বসন্ত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাদের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। যেমন-
* গর্ভবতী মহিলা, নবজাতক এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের ক্ষেত্রে।
* গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে ইমিউনোগ্লোবিন প্রদানে নবজাতক ভয়াবহ আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে।
* ইমিউনোগ্লোবিন বাজারে কম পাওয়া যায় এবং অপেক্ষাকৃত মূল্য বেশি। তাই বিশেষ ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তির জন্য শুধু ইমিউনোগ্লোবিন ব্যবহার করা হয়।
বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রগুলো হলো; -
* বসন্ত রোগীর সঙ্গে অনেক মুখোমুখি স্পর্শ।
* বসন্ত রোগীর সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তির ১৫ মিনিটের বেশি অবস্থান।
* যদি কোন ব্যক্তির রক্ত পরীক্ষায় প্রমাণিত হয় যে, তার শরীরে বসন্ত রোগের এন্টিবডি তৈরি হয়নি, তবেই ইমিউনোগ্লোবিন দেয়া যায়।
* নবজাতকের ক্ষেত্রে ইমিউনোগ্লোবিক পরীক্ষা ছাড়াই দেয়া যেতে পারে।
বসন্ত রোগীদের যখন গুটি বের হয়, তখনই ছড়ায় বেশি বেশি সংক্রমিত করে । শুকানোর সময় বরং ছড়ায় না।
রোগীকে সাধারণত প্রথম গোটা বের হওয়ার পর থেকে প্রথম ৬ দিন অন্যদের থেকে আলাদা ও বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হবে।
লেখক-
ডাঃ এটিএম রফিক উজ্জ্বল
সৌজন্য ; দৈনিক  জনকণ্ঠ ।


-%E0%A6%95%E0%A6%A3%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE#sthash.4MHEceKG.dpuf

মন্তব্যসমূহ