মাদার তেরেসা এবং তার কাজের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে কিছু তথ্য ৷ লেখক ও বিশ্লেষক আশরাফ মাহমুদ ৷ ( সৌজন্য ; সচলায়তন )



                                 মাদার তেরেসা: সন্ত না শয়তান?

                   সচলায়তনে লিখেছেন লেখক  ও বিশ্লেষক  আশরাফ মাহমুদ 

খ্রিস্টধর্মের ধর্মনেতা পোপ ফ্রান্সিস মাদার তেরেসাকে ক্যাথলিক গির্জা ও খ্রিস্টধর্মের ক্যাথলিক শাখার পক্ষ থেকে সন্ত হিসেবে ("Saint Teresa") ঘোষণা করেছেন। তিনি এটি করেছেন তেরেসার দুটো তথাকথিত "অলৌকিক ক্ষমতার" পুরষ্কার হিসেবে। তারা দাবি করেন যে মাদার তেরেসা ভারতের মনিকা বেসরা (Monica Besra) নামের এক বাঙালি মহিলার পেটের ক্যান্সার ভালো করে তুলেছিলেন, মহিলার কাছে মাদার তেরেসার ছবিসম্বলিত এক লকেট ছিলো, যেটি থেকে আলো বিচ্ছুরিত হয়ে মনিকাকে সারিয়ে তোলে, তার টিউমারের ক্ষয় হয়। অন্যদিকে ব্রাজিলের এক লোকের মস্তিষ্ক-ক্যান্সার (ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশন থেকে সৃষ্ট) ভালো হয়ে যায় মাদার তেরেসার অলৌকিক ক্ষমতার আর্শীবাদে। এবং তিনি এইসব করেছেন মৃত্যুর পরে অলৌকিক ক্ষমতায়, যেহেতু তার অলৌকিকতা প্রমাণ করে যে তিনি স্বর্গে আছেন এবং সেখান থেকে ক্ষমতা বলে অলৌকিকতার প্রমাণ দিয়েছেন!
মাদার তেরেসা আলবেনিয়ায় জন্মগ্রহণ করলে-ও ১৮ বছর বয়েসের দিকে তিনি প্রথমে আয়ারল্যান্ডে এবং পরবর্তীতে ভারতের কলকাতায় আসেন এবং ১৯৫০ সালে মিশনারিজ অফ চ্যারিটি নামক রোমান ক্যাথলিক ধর্মীয় ধর্মসভা বা ধর্মসংস্থা গড়ে তোলেন যেটি বর্তমানে প্রায় ১৩৩টি দেশে ৪৫০০ এর অধিক নান দ্বারা পরিচালিত। তিনি ১৯৭৯ সালের দিকে শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন কলকাতার গরিব অসুস্থ মানুষদের জন্য তার সংস্থার কর্মকাণ্ডের জন্য। 
জয়গানের পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে গর্ভপাত-বিরোধী মনোভাব, চিকিৎসার চেয়ে ধর্মীয় প্রথাকে তুলে ধরা, যেসব জায়গায় তিনি গরিবদের চিকিৎসা করতেন সেখানের পরিবেশ ও অবস্থার নাজুকতা ইত্যাদি নানা গুরুতর অভিযোগ আছে।


যে দুটো "অলৌকিক ঘটনা"কে ভিত্তি করে তাকে সন্ত উপাধি দেয়া হয়েছে সেগুলো মূলত বিজ্ঞানের অবদান! পৃথিবীতে অলৌকিকতা বলে কিছু নেই, আছে আমাদের ব্যাখ্যাতীত কিছু ঘটনা বা বিষয়; এইসব ঘটনা ব্যাখ্যাতীত কারণ যথেষ্ট অনুসন্ধান হয় নি বা যথেষ্ট উপাত্ত নেই তাই মানুষ যেহেতু তার জগত ও আশপাশের পরিবেশের উপাদান ঘটনা ইত্যাদিকে ব্যাখ্যা করতে আগ্রহী নিজেদের অস্তিত্ব ও স্থানের খোঁজে তাই এইসব আপাত ব্যাখ্যাহীন ঘটনাকে অলৌকিক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়; অনেকটা একটি শিশুকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কীভাবে হয় তার বুঝ দেয়া। 
মনিকা নামের মহিলাটি যদিও দাবি করেছিলেন যে তিনি টিউমারে ভুগছিলেন আসলে মূলত তিনি একটি জলকোষ বা পুঁজকোষে ভুগছিলেন, টিউমার কিংবা ক্যান্সার নয়; তার চিকিৎসকগণ ও তৎকালীন ভারতীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী পর্যন্ত এই বিষয়ে জল্পনাকল্পনার বিরুদ্ধে বলেছিলেন। ফলে তার ভালো হয়ে যাওয়ার জন্য মাদার তেরেসার লকেটের বিচ্ছুরিত আলোর প্রয়োজন পড়ে না, এবং মনিকা মিশনারিজদের সাথে যোগাযোগের আগে ও পরে স্থানীয় হাসপাতাল থেকে তার রোগের জন্য ওষুধ ও সেবা নিয়েছিলেন। অর্থাৎ, বিজ্ঞানের পন্থা ব্যবহার করে ধর্মের অলৌকিকতার প্রচার হচ্ছে, এবং সন্ত উপাধি জুটে গেলো মাদার তেরেসার। 
ব্রাজিলের লোকটির ক্ষেত্রে-ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের অবদান ছিলো, সে তার চিকিৎসার জন্য ওষুধ নিয়েছিলো এবং মস্তিষ্ক-ক্যান্সারের জন্য সার্জারি করেছিলো! সার্জারির মাধ্যমে ভালো হয়ে যাওয়া একটি লোকের ক্ষেত্রে কী অলৌকিকতা মাদার তেরেসা শূন্যতা থেকে করেছিলেন তা সত্যি "অলৌকিক" বিষয় ঠেকে। 
ফলে পুরো ব্যাপারটি দাঁড়ালো যে দুটো ঘটনাতেই মাদার তেরেসার কোনো প্রত্যক্ষ প্রভাব ছিলো না, বরং তার মিশনের মানুষরা বিজ্ঞানের অবদানের মাধ্যমে ভালো হয়ে ওঠা মানুষের ঘটনাকে নিজেদের পুঁজি ও লাভের জন্য নিজেদের মতো করে উপস্থাপন করেছিলেন। এটি সন্তের কাজ নয়, ভণ্ডামির কাজ। 
আপনি প্রশ্ন তুলতে পারেন এতে তাদের লাভ কী? আপনি-ও এই বিষয়ে কেনো মাথা ঘামাবেন? কারণ, মিশনারিজ সংস্থাগুলো ও প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মগুলো চলে বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও মানুষের দানের উপর; অনেকটা ব্যবসার সুনাম যেমন ব্যবসার লাভ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে তেমনি এইসব অলৌকিকতাকে পুঁজি করে তারা আকৃষ্ট করতে পারে আরও অনেক শিক্ষিত অথচ কুসংস্কার-প্রবণ অথবা অর্ধশিক্ষিত কিংবা শিক্ষাহীন লোকদের এবং সবচেয়ে বড় কথা তাদের লভ্য অর্থের পরিমাণ বাড়ে যেহেতু দাতারা মনে করেন যে মিশনারিজরা আসলেই কিছু "করছেন।" দ্বিতীয়ত, এইসব ক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও চিকিৎসার ব্যবহার হলে-ও তার কৃতিত্ব দেয়া হয় না, ফলে চিকিৎসা ও বিজ্ঞানের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ে না, এবং অবকাঠামো সম্পর্কে মানুষের মনে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হয়। ব্যাপারটি এভাবে দেখতে পারেন, আপনি আপনার জ্বরের জন্য ওষুধ খেলেন এবং খাজাবাবা কিংবা উলঙ্গবাবার পানিপড়া খেলেন এবং আপনার জ্বর ভালো হলো; বস্তুত আমরা জানি যে ওষুধ খাওয়াতে আপনার জ্বর ভালো হয়েছে, পানিপড়া খাওয়াতে নয়, কিন্তু আপনি যদি সবাইকে বলে বেড়ান যে এখানে খাজাবার কৃতিত্ব তখন আপনার আশপাশের বন্ধু কিংবা মানুষ যে চিকিৎসাব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা রাখে না সে পরবর্তীতে অসুখের সময় খাঁজাবাবার কাছে যাবে; হয়তো অসুখের গুরুতর অবস্থার উপর নির্ভর করে সে ফিরে না-ও আসতে পারে। তাই এইসব ঘটনাকে লাই দেয়া মানে নিজের ক্ষতি, প্রিয়জনদের ক্ষতি, এবং সমাজ ও বিজ্ঞানের অগ্রগতির জন্য অন্তরায়। এছাড়া, আপনি এভাবে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মগুলোকে টিকে থাকতে এবং তাদের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ করে দিচ্ছেন, এবং এইসব ধর্ম এক সময় আপনাকে ঘায়েল করতে আসবে- ইতিহাস তাই বলে।


মাদার তেরেসার পক্ষের লোকেরা প্রায়শ বলে যে তিনি বিভিন্ন উৎস থেকে অনেক অর্থ সংগ্রহ করলে-ও নিজের জন্য ব্যবহার করেন নি, বরং গরিব লোকের মতো জীবন কাটিয়েছেন, পারলে বিরুদ্ধবাদীরা এইরকম জীবন যাপন করে দেখাক। এই হাস্যকর যুক্তি তার সন্ততা প্রমাণ করে না। শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলতে চাইলে শিশুর অভিভাবক হওয়া লাগে না, কিংবা একটি মানুষ কীভাবে জীবন কাটালো সেটি তার বদমাশিকে পুরোপুরি তুলে ধরে না, যেমন হিটলার তার প্রেমিকাকে "ভালোবাসতো" কিন্তু সে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্যতম একজন লোক। মাদার তেরেসা যিশুর জন্য গরিবের মতো করে বসবাস করেছেন, অন্যের জন্য দৃষ্টান্ত রেখে যাওয়া কিংবা গরিবদের আদর্শ হিসেবে টিকে থাকার জন্য নন, যেহেতু তিনি ভয় পেতেন যে যিশু তাকে যথেষ্ট ভালোবাসতেন না, এবং যিশুর ভালোবাসা পেতে তিনি সব করতে প্রস্তুত ছিলেন। অর্থাৎ, অস্তিত্ব প্রমাণহীন ঈশ্বর ও তার সাগরেদকে খুশি করতে গিয়ে তার এতো কিছু করা, ঠিক মানুষের কল্যাণের জন্য নয়। 
তিনি তার মিশনারিজ সংস্থার মাধ্যমে গরিবদের সেবা করলে-ও তাদেরকে কোনো ওষুধ দিতেন না, পুষ্টিকর খাবার দিতেন না সেরে ওঠার জন্য, এবং বেদনা ও ব্যথায় আক্রান্তদের বলতেন যিশুর কাছে প্রার্থনা করতে তার আরোগ্যের জন্য! হ্যাঁ, তার "নিরাময় কেন্দ্রে" অনেকে ঠাঁই পেয়েছিলেন তবে নিরাময় পেয়েছে খুব কমই। কলকাতার ডাক্তার এবং মাদার তেরেসার উপর লেখা বই Mother Teresa: The Final Verdict অরূপ চ্যাটার্জির মতে ব্যথার জন্য কোনো ব্যথানাশক ওষুধ দেয়া হতো না রোগী ও অসুস্থদের, কেন্দ্রের পরিবেশ ছিলো এতো বেশি নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর যে অসুখ নিরাময়ের চেয়ে অসুখ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো বেশি, এবং একই সিরিঞ্জ ও অন্যান্য স্পর্শকাতর সামগ্রী (যেগুলো থেকে জীবাণু সংক্রামণ হতে একজন থেকে অন্যজনে) ব্যবহার করা হতো একাধিকজনের ক্ষেত্রে।

মাদার তেরেসাকে নিয়ে দীর্ঘ বিস্তারিত ও বস্তুনিষ্ঠ বই লিখেছিলেন ১৯৯৫ সালে The Missionary Position: Mother Teresa in Theory and Practice শিরোনামে ইংরেজ সাংবাদিক ও সাহিত্য সমালোচক ক্রিস্টোফার হিচেন্স (Christopher Hitchens)। তার মতে "the medieval corruption of the church, which sold indulgences to the rich while preaching hellfire and continence to the poor. [Mother Teresa] was not a friend of the poor. She was a friend of poverty. She said that suffering was a gift from God. She spent her life opposing the only known cure for poverty, which is the empowerment of women and the emancipation of them from a livestock version of compulsory reproduction."
অর্থাৎ, "[মাদার তেরেসা] গির্জার মধ্যযুগীয় দুর্নীতির প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, যা ধনীদের কাছে ইচ্ছাপূরণের সুযোগ এবং গরীবদের কাছে জাহান্নামের আগুন এবং মিথ্যাচার বিক্রি করেছিলো। তিনি গরীবের বন্ধু ছিলেন না। তিনি ছিলেন দারিদ্র্যতার বন্ধু। তিনি বলতেন কষ্টভোগ হচ্ছে ঈশ্বরের উপহার। তিনি তার সারা জীবন ধরে দারিদ্র্যতার বিরুদ্ধে একমাত্র পরিচিত প্রতিকার- নারীর ক্ষমতায়ন এবং গৃহপালিত পশুর মতো বাধ্যতামূলক প্রজনন থেকে মুক্তির বিরুদ্ধে কাজ করে গেছেন।"
মাদার তেরেসা তার একাধিক বক্তব্যে গর্ভপাতের বিপক্ষে কথা বলে গেছে এবং তার নোবেল পুরষ্কার গ্রহণের বক্তব্যে বলেছিলেন যে "গর্ভপাত হচ্ছে পৃথিবীর শান্তির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অন্তরায়।" গর্ভপাত একজন নারীর জন্মগত অধিকার, নারীর শরীর নারীরই। গর্ভপাত সাধারণত যখন করা হয় (গর্ভধারণ বা নিষেকে ২-৩ মাসের মাঝে) তখন গর্ভস্থ কোষগুলো একজন মানুষ নয়, নারীর শরীরের অন্যান্য অংশের কিছু কোষগুচ্ছের মতো। মৃত্যুঝুঁকি, অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ (যেমন, ধর্ষণ), আর্থিক ও সামাজিক নানা কারণে গর্ভপাত করার প্রয়োজন পড়ে এবং একে পৃথিবীর শান্তির জন্য প্রধান অন্তরায় বলে মাদার তেরেসা মূলত তার অজ্ঞতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি এবং জন-অকল্যাণকর মনোভাব, বিশেষ করে নারীদের প্রতি অবমাননাকর মনোভাবকে তুলে ধরেছিলেন। গবেষণায় দেখা যায় যে গর্ভপাত নিষিদ্ধ হোক কিংবা আইনগতভাবে বৈধ হোক না কেনো গর্ভপাতের হার একই ধরণের থাকে, কিন্তু গর্ভপাত আইনগতভাবে নিষিদ্ধ থাকলে গোপন গর্ভপাতের জটিলতায় নারী বা মায়েদের মৃত্যুর হার ৩৪ গুণ বেশি হয়ে থাকে, তাই পৃথিবীর শান্তির জন্য মূলত গর্ভপাতের আইনগত বৈধতার প্রয়োজন। 
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো যে, যেসব দুঃস্থ অসহায় মানুষদের তিনি সেবার জন্য টেনে নিতেন তাদেরকে খ্রিস্টধর্মে রূপান্তরিত হওয়ার জন্য চাপ দিতেন। গার্ডিয়ানের এই তথ্যসংবাদ মতে, সুজান শিল্ডস (Susan Shields) এর উদ্ধৃতি দিয়ে (যিনি পূর্বে মিশনারিজের একজন কর্মচারী ছিলেন), তার সংস্থার টাকা ব্যাংকেই পড়ে থাকতো, মৃত্যুযাত্রীদের কল্যাণে ব্যবহৃত হতো না। মাদার তেরেসা মানবতার জন্য যতোটা কাজ করেছেন তার চেয়ে বরং খ্রিস্টধর্মের অনাচার, অবিচার এবং কুসংস্কারকে মানবতার মোড়কে করে বিক্রি করেছেন। হিচেন্সের মতে তিনি ছিলেন “একজন ধর্মীয় মৌলবাদী, রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় একজন ব্যক্তি, সেকেলে ধর্মোপদেশ দানকারী, এবং পার্থিব ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির সাগরেদ।"


২০১২ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে যে তার মিশনারি কেন্দ্রের এক-তৃতীয়াংশ রোগী প্রয়োজনীয় সেবা পায় না। যখন ডাক্তারগণ মিশনারি পরিদর্শনের জন্য যান তার দেখেন যে প্রয়োজনীয় ব্যথানাশক ওষুধ, খাদ্য ইত্যাদির অভাব সর্বত্র। এমনকি সেখানকার পরিবেশ ও দুরাবস্থাকে নাৎসীদের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের অবস্থার সাথে তুলনা করা হয়েছিলো। অথচ নিজের চিকিৎসার জন্য তিনি উড়ে গিয়েছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার ক্লিনিকে! 
তিনি স্বৈরাচারের কাছ থেকে অনুদান পেয়ে স্বৈরাচারকের প্রশংসা করেছিলেন, হাইতির একনায়ক Jean-Claude Duvalier, যিনি মানুষকে অপহরণ ও গুম করার জন্য কুখ্যাত ছিলেন, তার অনুদান পেয়ে প্রশংসা করেছিলেন। তিনি এইডস রোগিদের সেবার জন্য বলতেন, অথচ কনডমকে ঘৃণা করতেন (যা এইচআইভি সংক্রামণ ও এইডস রোগ প্রতিরোধের অন্যতম উপায়)। হিপোক্রেসির চূড়ান্ত উদাহরণ যাকে বলে।
হাফিংটনপোস্টের ঋত্বিকা ভারাগুরের মতে কলকাতা এবং ভারতে মাদার তেরেসার উপস্থিতি এবং কর্মকাণ্ড মূলত তুলে ধরে বর্ণবাদ, ভারতীয় সংস্কৃতি ও প্রথার উপর পাশ্চাত্যের আধিপত্যকে। তার মতে মাদার তেরেসা ছিলেন যোদ্ধা, তবে গরিব কিংবা কলকাতা তথা ভারতের অবস্থার পরিবর্তনের জন্য লড়াই করা যোদ্ধা নয় বরং ধর্ম ও সেবাকে ব্যবহার করে শ্বেতাঙ্গদের বুর্জোয়া প্রভাব বিস্তারের জন্য লড়াই করা যোদ্ধা, যারা গরিব ও অসহায়দের ভোগাতে সৌন্দর্য দেখেন কিন্তু সেই ভোগান্তির জন্য কাজ করেন না।



মাদার তেরেসা মূলত ক্যাথলিক গির্জার মিডিয়া ও প্রপাগান্ডায় বানানো একজন সন্ত, মূলত তিনি ছিলেন ধর্মীয় গোঁড়ামিতে ভরপুর একজন মানুষ, বিজ্ঞান ও সংস্কার বিরোধী এক শয়তান, যিনি তথাকথিত সেবার কথা বলে সেবা বিক্রি করে জনপ্রিয় হয়েছেন।

(সৌজন্য ;সচলায়তন এবং লেখক ও বিশ্লেষক
আশরাফ মাহমুদ )

       

মন্তব্যসমূহ