বর্তমান বিশ্বের প্রায় সব দেশেই যে ধর্মীয় ও সামাজিক অসহিষ্ঞ্চুয়তার সৃষ্টি হয়েছে তা প্রতিরোধের একটি সাম্ভাব্য উপায় !
বর্তমান বিশ্বের
প্রায় সব দেশেই
যে ধর্মীয় ও
সামাজিক অসহিষ্ঞ্চুয়তার সৃষ্টি হয়েছে
তা প্রতিরোধের একটি সাম্ভাব্য
উপায় !
বর্তমানে বিশ্বের
গরীব ধনী উন্নত
ও উন্নয়নশীল প্রায় সব দেশে এখন কম
বেশী সামাজিক ও
ধর্মীয় অসহিষ্ঞ্চুয়তা প্রভাব
পরিলক্ষিত হচ্ছে ৷
মসজিদ , মন্দির বা গির্জায়
প্রার্থনারত মানুষকে হত্যা করা
হচ্ছে কোনো কারণ
ছাড়াই ৷ এর
সমাধান খুঁজা এখন
জরুরী হয়ে গেছে
৷ এই সব
ব্যাপার নিয়ে যারা
চিন্তা ভাবনা করেন
তাদের অভিমত হচ্ছে সমস্ত
বিশ্বই এখন নানা
সংকটে ভরপুর হয়ে
গেছে ৷ তবে
সবচেয়ে বেশী সংকটের
জন্ম হয়েছে মানুষের
শিক্ষা ও সংস্কূতির
ক্ষেত্রে ৷
এই
সংকটের মূল কারণের
অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে বিশ্বের
বর্তমান অর্থনীতি একতরফা পুঁজিবাদী
ধারার অর্থনীতির ধারার
সঙ্গে জড়িয়ে পড়া ৷ কারণ পুঁজিবাদের
ভিত্তি হচ্ছে ব্যক্তিগত
সম্পত্তি অর্জন ও মুনাফা
করা ৷
কিত্তু সংস্কৃতির
প্রবণতা হচ্ছে মানুষকে
সামাজিক জীবে পরিণত করা ৷
আর সঠিক
শিক্ষাই মানুষকে সব
কুসংস্কার থেকে সরিয়ে
এনে একটি মানুষকে
যুক্তিবাদী ও বিজ্ঞানমনষ্ক
মানুষে পরিণত করে ৷
পুঁজিবাদী
অর্থনীতির কারণে বিশ্বসমাজে
ব্যক্তি স্বার্থটাই এখন
প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে
৷ ফলে মানুষ এখন
অতিরিক্ত ভাবে অধীক
মুনাফা ও ব্যক্তিগত
ভোগ ও বিনোদন
অর্জনে আগ্রহী হয়ে
উঠেছে ৷ ফলে মানুষ
দিন দিন হয়ে
অসামাজিক ও অন্ধ ও কুসংস্কারে বিশ্বাসী
৷ আর বর্তমান বিশ্বের
মূল সংকটাই এর
মধ্যে নিহিত হয়ে
আছে ৷
এই
সংকট থেকে বের
হয়ে আসার উপায়
যেমন রাজনৈতিক , তেমনি সামাজিকও ৷ তাই
এর জন্যে
অবশ্যই আলোকিত শিক্ষার
সঙ্গে উপযুক্ত সংস্কৃতিক
আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে
৷ আর এই
আন্দোলনকে সফল করতে বিশ্বের বর্তমান
শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি
নতুন বিষয় যুক্ত
করতে হবে আন্তর্জাতিকভাবে ৷ এই বিষয়টি
হবে মানব সভ্যতার বিবর্তনের ঐতিহাসিক ধারা , সমাজতত্ত এবং
তুলনামূলক ধর্মতত্তের মৌলিক
বিষয় নিয়ে একটি পাঠ্যক্রম
তৈরি
করে সেই পঠ্যক্রম সমস্ত
বিশ্বের শিক্ষা কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত
বাধ্যতামূলক করা ৷ এবং বিশ্বের সকল দেশকে এই
পাঠ্যক্রম অনুসরণ করতে বাধ্য করা ৷ এটা করা সম্ভব হলে আগামী প্রজন্ম অন্তত
পৌরাণিক ও অন্ধ ধর্ম কুসংস্কার থেকে মুক্ত হতে পারবে এবং বড় হবে একটি বৈজ্ঞানিক ও
যুক্তিবাদী মন ও মানুসিকতা নিয়ে ৷ তখন এর
প্রভাব পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে ও পড়বে ৷ মানুষ হয়ে উঠবে সামাজিক জীব এবং মানুষের
সংস্কিতিক দিকেরও উন্নতি সাধিত হবে ৷
মানুষের মধ্যে তখন এক নুতন মানবতাবোধেরও সৃষ্টি হবে ৷
মানুষকে যুক্তি ও বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা সম্ভব
হলে বর্তমান বিশ্বের অনেক সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করা যায় ৷
এ প্রসঙ্গে দার্শনিক ও পণ্ডিত ব্যক্তিত্য বার্ট্রান্ড
রাসেলের কিছু বক্তব্য উল্লেখ করা
হল ৷ তিনি প্রায় ৯২ বছর বয়সে ১৯৬৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে শান্তির সন্ধানে নুতন প্রয়াস নামে একটি প্রবন্ধ লিখেন যা তার আত্মকথা বা Bertrand Rassell
Autobiography তে প্রকাশ করেন ৷ আজ থেকে
প্রায় ৫১ বছর আগে বিশ্বশান্তি
প্রতিষ্ঠা করতে হলে কি কি কাজ করতে
হবে তার কিছু বিবরণ দিয়েছেন তিনি তার ঐ
লিখায় ৷ এই ব্যক্তব্যে তিনি শিক্ষার
ক্ষেত্রে কি করা উচিত তার যে বিবরণ দিয়েছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল -
যদি
বিশ্বশান্তি নিশ্চিত করতে হয় তাহলে বর্তমান শিক্ষার মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে ৷
মানুষ যে আসলেই একটি বিশ্বপরিবারের সদস্য যে ধারণা শিশুদের প্রথম শিক্ষাক্রম থেকেই
দেওয়া আরম্ভ করতে হবে ৷ এখন একমাত্র এক নুতন
ধরনের একটি শিক্ষার প্রবর্তন করতে হবে যে শিক্ষায় একদল নুতন মূল্যবোধ সম্পূর্ণ মানুষের
সৃষ্টি করবে ৷
শিক্ষার্থির মনে এই কথাটি প্রতিষ্টিত করতে হবে
যে কোনো ছুতায় একজন মানুষকে হত্যা করা
ছাড়াও সাহস ও শক্তি প্রদর্শনের বিশ্বে আরো অনেক ক্ষেত্র রয়েছে ৷সে সব দিকেই
শিক্ষার্থিদের উৎসাহিত করতে হবে ৷
রাসেল তখন বয়স্ক নরনারীদের শিক্ষার প্রয়োজনের
কথাও বলেছেন ৷ তিনি বলেছেন বিশ্বব্যাপী পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্কই মানবজাতির বিশ্বে
বেঁচে থাকার একমাত্র পথ এবং প্রধান শর্ত ৷তাই বিশ্ব শান্তি করতে হলে
বিশ্বের রাজনীতিবিদদের এবং সমাজ কর্মিদের এই
দিকেই দৃষ্টিপাত করতে হবে সব হানাহানি ভূলে অন্তত বিশ্বের আগামী নুতন প্রজন্মের
স্বার্থে ৷
( সূত্র; পান্না লাল চৌধুরী ও
সম্পদ বড়ুয়ার অনুদিত বার্ট্রান্ড রাসেলের আত্মকথা ,
প্রথম খন্ড থেকে রাসেলের
শিক্ষা বিষয়ক উক্তিগুলো নেওয়া হয়েছে সংক্ষিপ্ত আকারে )
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন