হযরত ইবরাহীম,(আ) ইসমাইল(আ) বিবি হাজেরা, প্রবিত্র ক'বাগৃহ পুনঃ নির্মান, এবং কুরবানি,ও ইসহাক(আ) প্রসঙ্গে, একটি হাদীসের কথা,
হযরত ইবরাহীম(আ) কর্তৃক পবিত্র ক ‘বাগৃহ পুনঃ নির্মাণ , ইসমাঈল(আ) সহ বিবি হাজেরার নর্বাসন,দরজার চৌকাঠ বদলে ফেলা, চৌকাট বহাল রাথা ইত্যাদি প্রসঙ্গে ইবনে আব্বাস বর্ণিত একটি হাদিস;
জেদ্দা ,দারুসসালাম থেকে প্রকাশিত এবং প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মুজীবুর রহমান কর্তৃক অনুবাদ করাঃ কুর’আনুল কারীম এর বাংলা তাফসীর গ্রন্থের ১৪নং সুরা ইবরাহীম এর ৩৭ নং আয়াতের নিচে টিকা হিসাবে উল্লখিত ইবনে আব্বাস(রা)কর্তৃক বর্ণিত টিকার কিছু, এ লেখার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক অংশ, নিম্নে উল্লেখ করা হলো ।
ইবনে আব্বাস(রা) বলেছেন , বিবি হাজেরা,ও বিবি সারাহ্ , উভয়ের মনোমালিন্য চরমে পৌছলে আল্লাহর আদেশে ইবরাহীম(আ) হাজেরা ও তাঁর শিশুপুত্র ইসমাঈলকে নির্বাসন দানের উদ্দেশ্যে খানা-এ-কবার নিকট উপস্থিত হয়ে , মসজিদের উচুঁ অংশে যমযমের উপরিস্থ একটি বৃক্ষতলে তাদেরকে রাখলেন, এবং কিছু খেজুর আর একটি মশকে স্বল্প পরামান পানি দিয়ে তিনি নিজ গৃহ অভিমুখে ফিরে চললেন । তখন হাজেরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, এই নির্বাসনের আদেশ কি আল্লাহ্ তাকে দিয়েছেন ? তিনি হাঁ জবাব দিলে, হাজেরা বললেন, তাহলে আল্লাহ্ আমাদের ধ্বংস ও বরবাদ করবেন না । হাজেরা তখন ইসমাঈলকে নিজের বুকের দুধ খাওয়াতেন আর নিজে রেখে যাওয়া মশকের পানি পান করতেন । পরিশেষে মশকে যা পানি ছিল তা ফুরিয়ে গেল । তখন তিনি নিজেও তৃষ্ণার্ত হলেন আর শিশু পুত্রটিও পিপাসায় কাতর হয়ে পড়ল । তখন তিনি তাঁর অবস্থানের সংলগ্ন পর্বত ‘ সাফা’ এর উপর উঠে দাঁড়ায়ে এদিক সেদিক তাকিয়ে কাউকে না দেখতে পেয়ে সাফা পর্বত থেকে নেমে পড়লেন । এরপর তিনি নিচু ময়দান অতিক্রম করে মারওয়া পাহাড়ের উপর উঠে দাঁড়ালেন । কাউকে না দেখতে পেয়ে তিনি পাহাড়দ্বয়ের মধ্যে সাতবার দৌড়াদৌড়ি করলেন ।
ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন , নবী(সঃ) বলেছেন , এজন্যেই হজ্জের সময় মানুষ এই পাহাড়দ্বয়ের মধ্যে সাতবার সায়ী বা দৌড়াদৌড়ি করে এবং এটা হজ্জের একটি অঙ্গ।
………..এর এক পর্যায়ে যমযমের কাছে একজন ফেরেশতাকে দেখতে পেলেন, তখন ঐ ফেরেশতা সেখানে তাঁর পায়ের গোড়ালি বা আপন ডানা দ্বারা আঘাত হানলেন এবং আঘাতের স্থান থেকে পানি উপছে উঠতে লাগল । হাজেরা তখন এর চার পাশে বাঁধ দিয়ে তাকে হউযের আকার দানকরে পানি সংগ্রহ করলেন , যা পরবর্তীতে যমযমকুপে রূপান্তরিত হয়েছে ৷
বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর হাজেরা পানি পান করলেন এবং শিশুপুত্রকে দুধ পান করালেন । তখন ফেরেশতা তাঁকে বললেন, ধ্বংসের কোন আশংকা আপনি করবেন না , এখানেই আল্লাহর ঘর রয়েছে, এই শিশু তাঁর পিতার সাথেমিলে এটি পুনঃ নির্মান করবে এবং আল্লাহ্ তাঁর পরিজনকে কখনই ধ্বংস করেন না ৷
হাজেরা এভাবেই দিন যাপন করছিলেন। …….. আর ইসমাঈলও আস্তে আস্তে বড় হলেন, এবং সেখানে বসতি স্থাপন করা কয়েকটি খান্দানের ভাষা আরবী ও শিখে তাদের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠলেন । যখন তিনি যৌবনপ্রাপ্ত হলেন, তখন তারা তাদেরই এক মেয়েকে তার সঙ্গে বিয়ে দেয় । ইসমাঈলের বিয়ের পর তাঁর মাতা হাজেরা ইন্তিকাল করেন ।
ইসমাঈলের বিয়ের পর ইবরাহীম(আ) তার পরিত্যক্ত পরিজনকে দেখার জন্য এখানে আসলেন । কিন্তু এসে ইসমাঈলকে পেলেন না, তার স্ত্রী থেকে জানতে পারলেন ,ইসমঈল রিযিকের সন্ধানে বেরিয়ে গেছেন । তিনি তার স্ত্রীর কাছ থেকে তাদের আর্থিক দুর্দশার কথা ও জানলেন, এবং তার কাছ থেকে অভিযোগ ও পেলেন তাদের আর্থিক কষ্টের ব্যাপারে । তিনি চলে যাওয়ার আগে তাকে বললেন ,তোমার স্বামী বাড়ি আসলে আমার সালাম জানিয়ে বলবে , সে যেন তার ঘরের চৌকাঠ বদলিয়ে নেয় ,এবলে তিনি চলে গেলেন ।
ইসমাঈল বাড়ি আসলে তার স্ত্রী তাকে বলল, এমন এমন আকৃতির একজন বৃদ্ধ এসেছিলেন । তিনি বলে গেছেন, আপনি যেন আপনার ঘরের দরজার চৌকাঠ বদলিয়ে ফেলেন । ইহা শুনে ইসমাঈল(আ) বললেন, তিনি আমার পিতা এবং আমাকে নির্দেশ দিয়ে গেছেন, যেন তোমাকে আমি পৃথক করে দেই । সুতরাং তুমি তোমার পিত্রালয়ে আপন লোকদের কাছে চলে যাও । এ বলে ইসমাঈল(আ) তাকে তালাক দিয়ে দিলেন এবং জুরহুম গোত্রের অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করলেন ।
অতঃপর আল্লাহ্ যদ্দিন চাইলেন, ইবরাহীম(আ) তদ্দিন এদের থেকে দুরে রইলেন, পরে আবার দেখতে আসলেন । কিন্তু আবারও ইসমাঈল(আ) কে ঘরে পেলেন না । তিনি পুত্রবধুর ঘরে ঢুকে ইসমাঈল(আ) সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে, তার স্ত্রী জানালেন, তিনি আমাদের খাদ্যের সন্ধানে বেরিয়ে গেছেন । এক প্রশ্নের জবাবে , পুত্রবধু জানালেন তারা ভাল অবস্থা ও সচ্ছলতার আছেন বলে তিনি আল্লাহ্র প্রশংসাও করলেন এই সঙ্গে । ইবরাহীম(আ) আলাপ শেষে পুত্রবধুকে বললেন, তোমার স্বামী আসলে, তাকে আমার সালাম বলবে এবং তাকে আমার পক্ষ থেকে হুকুম করবে ,সে যেন তার দরজার চৌকাট বহাল রাখে । অতঃপর ইসমাঈল(আ) বাড়ি আসলেন, স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলেন, কেউ এসেছিলেন কি ? স্ত্রী বললেন, হাঁ , একজন সুন্দর আকৃতির বৃদ্ধ এসেছিলেন । স্ত্রী তাঁর প্রশংসা করলেন । স্ত্রী আরো বললেন , তিনি আপনাকে সালাম বলেছেন আর নির্দেশ দিয়ে গেছেন, যেন আপনি আপনার দরজার চৌকাঠ বহাল রাখেন। এই কথা শুনে ইসমাঈল(আ) বললেন, ইনিই আমার পিতা, আর তুমি হলে চৌকাঠ। তোমাকে স্ত্রী হিসাবে বহাল রাখার নির্দেশ তিনি আমাকে দিয়েছেন ৷
পুনরায় ইবরাহীম(আ) তাদের কাছে আসলেন ।এবং ইসমাঈল(আ) কে যমযমের নিকটস্থ একটি বৃক্ষতলে বসে নিজের তীর মেরামত করতেছেন, দেখতে পেলেন । সাক্ষাত ও কৌশলাদি বিনিময়ের পর ইবরাহীম(আ) বললেন, হে ইসমাঈল ! আল্লাহ্ আমাকে একটি কাজের হুকুম করেছেন । তুমি আমাকে সাহায্য করবে কি ? ইসমাঈল(আ) বললেন, হাঁ , আমি আপনাকে সাহায্য নিশ্চয়ই করব । তখন তিনি বললেন , আল্লাহ্ আমাকে এখানে এর চারপাশ ঘেরাও করে একটা ঘর বানাবার নির্দেশ দিয়েছেন , বলে তিনি উচুঁ টিলাটির দিকে ইশারা করে স্থানটি দেখালেন । তখনি তারা কাবা ঘরের দেয়াল উঠাতে লেগে গেলেন । দেয়াল উচুঁ হয়ে গেলে মশহুর পাথরটি আনলেন এবং এর ওপর দাঁড়িয়ে ইমারত নির্মাণ করতে লাগলেন ………এর পর তাঁরা কাবা ঘরের চারদিকে ঘুরেছিলেন এবং উভয়ে এ দু’আ করছিলেনঃ “ হে আমাদের প্রভু ! আমাদের এ শ্রমটুকু কবুল করে নিন । নিশ্চয় আপনি সব শুনেন ও জানেন ৷ ( সুরাঃ বাকারা, ১২৭ আয়াত ) (বুখারী, হাদীস নং ৩৩৬৪ )
এখানে উল্লেখযোগ্য যে ইসমাঈল(আ) কে দুধ খাওয়া শিশু অবস্থায় মা হাজেরার সঙ্গে নির্বাসিত করা হয়, এবং তিনি যৌবনপ্রাপ্ত হয়ে বিয়ে করা ও তার মা হাজেরার ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত পিতা ইবরাহীম(আ) আর ঐ স্থানে আসেননাই বলে ঐ বর্ণনা থেকে অনুমিত হয় । পরে ইবরাহীম(আ) মোট ৩ বার এখানে আসলেও মাত্র ১ বারই ইসমাইল(আ)এর সঙ্গে সাক্ষাত হয়,এবং তখনই কা’বা গৃহ পুনঃ নির্মান করেন । তাই ইসমাঈল(আ) কে কুরবানি দেওয়ার কোন ঘঠনা এই বর্ণনা কারী বর্ণনা করেন নাই এই বর্ণনায় ৷ পবিত্র কুর’আনের ৩৭ নং মক্কী সুরা সাফ্ফাত এর ১০১ নং আয়াতে এক স্থিরবুদ্ধি পুত্রের সুসংবাদ দেওয়া হয় ,এবং ঐ সুরার ১১২নং আয়াতে সুসংবাদ দেওয়া পুত্রের নাম ইসহাক(আ) বলে উল্লেখ করা হয়েছে । আর ঐ সুরার ১০২ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে , “ অতঃপর সে (সন্তান) যখন তার পিতার সাথে কজ করার মত বয়সে উপনীত হলো তখন ইবরাহীম(আ) বললঃ হে আমার বৎস ! আমি স্বপ্নে দেখি যে , তোমাকে আমি যবেহ করছি …….” আর্থাৎ শিশু অবস্থার পরে ইসমাঈল(আ) এর সঙ্গে যখন পুনঃরায় ইবরাহীম(আ) এর সঙ্গে দেখা হয় তখন তিনি বিবাহিত ছিলেন, এখনে উল্লেখিত বর্ণনাকারী ইবনে আব্বাস(রা) বর্ণনা অনুসারে ৷ তাই বাইবেলে তথ্য না মানলে ও এক্ষেত্রে একটা অস্পষ্টতা থেকেই গেল, অন্ততঃ আমার কাছে ৷
পবিত্র কোরানে হযরত ইব্রাহীম(আ) ...এবং ইতিহাসের আলোকে ইব্রাহীম (আ)প্রসঙ্গে
(১) পবিত্র কোরানে হযরত ইব্রাহীম (আ,) হজরত ইসমাঈল( আ) এবং হজরত ইসহাক(আ) এর সম্পর্কে নাজিল হওয়া কিছু আয়াত এবং ইতিহাসের আলোকে হযরত ইব্রাহীম(আ) প্রসঙ্গে;-
সেমিটিক ঐতিহ্যবাহী ৩টি মহাধর্ম -ইহুদী ধর্ম, খৃষ্টধর্ম ও ইসলাম এর একক ও অভিন্ন জনক হযরত ইব্রাহীম(আ) এর প্রথম পুত্র ইসমাঈল(আ)- এর বংশে আবির্ভূত মহানবী হযরত মুহাম্মদ(সঃ) -উম্মতরা মুসলমান ।
পক্ষান্তরে, তাঁর দ্বিতীয় পুত্র ইসহাক(আ) এবং তাঁর পুত্র ইয়া’কুব (আ)- এর বংশধর বাইবেলে বর্ণিত মোশি (মৃসা আ) -এর উম্মতরা নিজেদেরকেইহুদী এবং বাইবেলে বর্ণিত যীশুখৃষ্ট (ঈসা আ) এর উম্মতরা নিজেদেরকে খৃস্টান বলে দাবী করেন । এই হিসাবে ইহুদী, খৃস্টান ও মুসলিম এই তিন জাতির লোকেরাই মিল্লাতে ইব্রাহীম ।
একজন গবেষকের (ড. মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান-এর কুরানের বাণী) এর মতে খৃষ্টপূর্ব ২১৬০ অব্দে বর্তমান ইরাকের ‘উর’ নামক স্থানে তিনি(ইব্রাহীম) জন্মগ্রহন করেন , এবং সত্যধর্ম প্রচারে ফিলিস্তীন গমন করেন এবং খৃষ্টপূর্ব ১৯৮৫ অব্দ, ১৭৫ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন । হযরত ঈসার(আ) জন্মের প্রায় ২০০০ বছর আগে (সূত্র-বিশ্বকোষ) হযরত ইব্রাহীম(আ) তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র হযরত ইসমাঈল(আ)-এর সহযোগে কাবাগৃহ পুনঃ নির্মাণ করেন ।
( Mecca is located 1,000 kilometers - across barren desert - away from the Holy Land. The record of Abraham's journey as detailed in Scripture and confirmed by archaeology, precludes any notion of Abraham, Hagar or Ishmael ever having been in Mecca. Additionally, they lived almost 1,000 years before the first caravan route was ever established along the Red Sea in Arabia. Indeed Abraham’s journey never brought him within about 1000, to as much as 1500, kilometers of Mecca .) it is just for an information only , not for faith !
By Dr. Rafat Amari
By Dr. Rafat Amari
হযরত ইব্রাহীম(আ)- এর মোট ৩জন বিবি ছিলেন। প্রথমা স্ত্রী বিবি সারাহ্, দ্বিতীয় স্ত্রী বিবি হাজেরা এবং তৃতীয়া স্ত্রী বিবি কতুরা । এই তিন স্ত্রির গর্ভজাত সন্তানের সংখ্যা ছিল মোট ৮ জন, তন্মধ্যে ৩ জন হলেন,-১, হযরত ইসমাঈল(আ) ২. হযরত ইসহাক(আ) ও ৩. মিদিয়ান । (আদিপুস্তক)
প্রথমা স্ত্রী বিবি সারাহ প্রথমে নিঃসন্তান ছিলেন, এবং তাঁর অনুরোধেই মিশর হতে সংগৃহীত তাঁর এক দাসী বিবি হাজেরাকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসাবে গ্রহন করেন হযরত ইব্রাহীম(আ) এবং প্রথম সন্তান হযরত ইসমাঈল(আ)জন্মকালে তাঁর বয়স ছিল ৮৬ বছর(আদিপুস্তক,১৬ :১৬)
হাজেরার গর্ভ ইসমাঈলের জন্মের প্রায় ১৪ বছর পর প্রথমা স্ত্রী ৯০ বছরের বৃদ্ধা বিবি সারাহ.র গর্ভে ইব্রাহীম(আ)- এর দ্বিতীয় পুত্র ইসহাকের জন্ম হয় । আদিপুস্তক ,১৬: ১-১৬, ২১: ১২-১৪ ) এবং এর ৩৭ বছর পর বিবি সারাহ. ১২৭ বছর বয়সে(৯০+৩৭) হেব্রনে ইন্তেকাল করেন। (আদিপুস্তক,২৩:১-২)
এরপর হযরত ইব্রাহীম(আ) আবার কতুরা নাম্নী আরেক মহিলাকে বিয়ে করেন। আর ঐ স্ত্রীর গর্ভে আরো ৬ জন সন্তান জন্মগ্রহন করেন;-তাঁরা হলেন :-১. সিম্রণ, ২. যকষণ ,৩. মদান, ৪. মিদিয়ান, ৫, যিশবক ও শূহ ।(আদিপুস্তক, ২৫:১-২ ) এই ৬জনের মধ্যে মিদিয়ানের বংশে ই পরবর্তীকালে হযরত শূ’আইব(আ) -এর জন্ম হয়।
পরবর্তীতে এক প্রত্যাদেশ প্রাপ্ত হয়ে, হযরত ইব্রাহীম (আ) তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী হাজেরা সহ পুত্র ইসমাঈলকে সুদূর মক্কার বিজন মরুপ্রান্তরে নির্বাসন দিয়ে আসেন ।
নূহ(আ) -এর যুগের মহাপ্লাবনে ধ্বংসপ্রাপ্ত পবিত্র কাবাগৃহ পুনঃ নির্মাণের ব্যাপারে আল্লাহ্ র তরফ থেকে আদিষ্ট হয়ে ইব্রাহীম(আ) ও তাঁর নির্বাসিত পুত্র ইসমাঈল(আ) অর্থাৎ পিতা-পুত্র উভয়ে মিলে অক্লান্ত পরিশ্রম করে কা’বাগৃহ পুনঃ নির্মান কজ সম্পন্ন করেন । কা’বা শরীফ থেকে কিছু দূরে অবস্থিত “মাকামে ইব্রাহীম” এ স্মৃতির জ্বলন্ত সাক্ষ্য। ইহুদীদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী, হযরত ইবাহীম(আ)-এর জীবনকল ১৭৫ বছর,(আদিপুস্তক-২৫:৭) এবং হযরত ইসমাঈলের(আ) জীবনকাল ছিল-১৩৭ বছর,(আদিপুস্তক:-২৫;-১৭)
এককথায়, ইসলামের মহানবী হযরত মুহাম্মদ(সঃ) যেমন হযরত ইব্রাহীম (আ) এর প্রথম পুত্র হযরত ইসমাঈল(আ)র বংশধর, ইহুদী ও খৃষ্টানদের স্বীকৃত নবী-রাসূল হযরত মূসা(আ), দাউদ(আ), সুলায়মান(আ)এবং যীশুখৃষ্ট তথা হযরত ঈসা(আ) প্রমুখও তেমনি ইবরাহীম(আ) -এর দ্বিতীয় পুত্র হযরত ইসহাস(আ) এবং তাঁর পুত্র ইয়া’কুব(আ) -এর বংশধর। অতএব, ইহুদী , খৃস্টান ও মুসলিম- সেমিটাক ঐতিহ্যবাহী এই তিন জাতির লোকেরাই বংশানুক্রমিকভাবে হযরত ইবরাহীম(আ) -এর একই রক্তের উত্তরাধিকারী ।
হযরত ইবরাহীম(আ) এর বংশধরগণ বিশেষতঃ মূসা(আ) ,দাঊদ(আ) এবং ঈসা(আ) যীশুখৃষ্টের আমলে সুমেরীয়, আক্কাদীয় এবং হিটিট ভাষার সমন্বয়ে হিব্রু ও আরামেইক ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশ ঘটে। সম্ভবতঃ ‘ ইব্রাহীম(আ) থেকেই ‘ইব্রীয়’ এবং তা থেকে ‘হিব্রু’ ভাষার উদ্ভব ঘটে। এই ‘হিব্রু’ ভাষার উৎকর্য সাধন হয় হযরত ইব্রাহীমের(আ) ইন্তেকালের প্রায় ৭শ থকে হাজার বছর পরে মূসা(আ), ও দাঊদের(আ) যুগে । তাই মূসা(আ) -এর উপর অবতীর্ণ ‘তাওরাত” কিতাবের ১০টি প্রত্যাদেশ , দাঊদের(আ) উপর অবতীর্ণ ‘যবুর’ কিতাব, যা সাধারণত ‘ওল্ড টেস্টামেন্ট’ হিসাবে পরিচিত, তা মূলতঃ হিব্রু ভাষায় অবতীর্ণ হয় । অন্যদিকে, খূস্টানদের যীশূখৃষ্ট তথা ঈসা(আ) এর উপর অবতীর্ণ ‘ ইঞ্জিল’ কিতাব, যা সাধারণত ‘নিউ টেস্টামেন্ট’ হিসাবে পরিচিত উহা মূলত আরামেইক ভাষায় অবতীর্ণ হয় । ১৯৪৭ সনে জর্ডানের মরুসাগর সংলগ্ন ‘কুমরান গুহায়’ কিছু মৃৎপাত্রের মধ্যে সংরক্ষিত চামড়ার উপর হিব্রুভাষায় লিখিত ওল্ড টেস্টামেন্ট ও আরামেইক ভাষায় লিখিত নিউ টেস্টামেন্টের কয়েকটি অমূল্য পান্ডুলিপি আবিস্কৃত হয়েছে । ( সূত্র-The meaning of the Dead sea Scrolls; The Documents that shed a brilliant new light on Christianity; op. Cit, p-13, এবং এই অংশের লেখায় সাহায্য নেয়া হয়েছে-ইসলামিক ফাউন্ডেশন পত্রিকার ৩৭ বর্ষ, ৩য় সংখ্যা, যা ১৯৯৮ -মার্চ মাসে প্রকাশিত ,মোহাম্মদ রেজাউল করীমের একটি লেখা থেকে)
কিছু প্রমাণিক তথ্য ইন্টানেট থেকে আগ্রহীদের জন্যে যুক্ত
করা হল ৷
peace all,
ABRAHAM/IBRAHIM was born in UR, he left UR with Terah, Sarah and his nephew Lot and Lot's family and went to HARAN and settled there.
Receiving a promise that God would make him a “great nation,” Abraham moved on to CANAAN, where he lived as a nomad, he is buried in hebron
[CANAAN stretched roughly from SYRIA in the north to EGYPT in the south].
Famine led him to EGYPT, but he was driven out for misrepresenting Sarah as his sister.
Again in CANAAN, after quarrels between Abraham and Lot and their herdsmen, they separated, Lot remaining near Sodom and Abram continuing his nomadic life.
ISMAEL was born when he was 86 years old
ISHAQ was born when he was 100 years old.
He died at the biblical age of 175 and was buried beside Sarah in the Cave of Machpelah, in what is now Hebron, West Bank.
[Ref: Encyclopedia Encarta.]
If the above information is correct then I would like to know the answers to some of the questions that come to my mind.
Did he come to Mecca? Any historical evidence beside our own books?
If he and his son were the one who constructed KAABA, Why did they abandon it and went back to Canaan?
Why none of his descendents “Jacob, Joseph, David, Solomon, Moses, Jesus etc” never tried to come to Mecca? Or talk about Mecca where their ancestor IBRAHIM had built a sacred place for worship?
28:46. And you were not on this side of the mountain when We called, but a mercy from your Lord that you may warn a people TO WHOM NO WARNER CAME BEFORE YOU, that they may be mindful.
This is a verse from chapter 28 AL-QASAS (THE STORY, STORIES) which according to the scholars was revealed in MECCA. this verse in the reason why such a query came to my mind at the first place.
If IBRAHIM and ISMAEL came to Mecca then why does the verse say “to whom no Warner came before you? Were they not the warmers?
On the other hand, If it was revealed in Medina then another question come to my mind, considering that IBRAHIM and ISMAEL came to Mecca from CANAAN, how could they have missed or avoided Medina on their way to Mecca or on their way back to CANAAN?
Why would they ignore to warn the inhabitants of a city that falls right in their way?
These are some of the questions that make me skeptical about the authenticity of the story related with the construction of KAABA [the cubical building] AT MECCA.
I remember posting a thread on this topic “why other messengers never came to Mecca” but couldn’t find it. Now after looking at the thread “Kaaba at Jerusalem and not at Mecca” I did some research to know the names of the places associated with IBRAHIM, then I downloaded an ancient map ofAssyrian empire 1800 BC to 650 BC and a modern day map of the same region, now I am even more skeptical about the story relating KAABA.
I wanted to post this query in the above mentioned thread, but beside other questions that I have asked, I want to know “WHO ACTUALLY BUILT THE KAABA THAT IS IN MECCA” [THE BLACK CUBICAL BUILDING] which is supposed to be the holiest place on the planet earth for 99.9% [my guess] of the Muslims around the world in spite of their differences.
So please enlighten me with your thoughts/views.
Jesse Toler
করা হল ৷
peace all,
ABRAHAM/IBRAHIM was born in UR, he left UR with Terah, Sarah and his nephew Lot and Lot's family and went to HARAN and settled there.
Receiving a promise that God would make him a “great nation,” Abraham moved on to CANAAN, where he lived as a nomad, he is buried in hebron
[CANAAN stretched roughly from SYRIA in the north to EGYPT in the south].
Famine led him to EGYPT, but he was driven out for misrepresenting Sarah as his sister.
Again in CANAAN, after quarrels between Abraham and Lot and their herdsmen, they separated, Lot remaining near Sodom and Abram continuing his nomadic life.
ISMAEL was born when he was 86 years old
ISHAQ was born when he was 100 years old.
He died at the biblical age of 175 and was buried beside Sarah in the Cave of Machpelah, in what is now Hebron, West Bank.
[Ref: Encyclopedia Encarta.]
If the above information is correct then I would like to know the answers to some of the questions that come to my mind.
Did he come to Mecca? Any historical evidence beside our own books?
If he and his son were the one who constructed KAABA, Why did they abandon it and went back to Canaan?
Why none of his descendents “Jacob, Joseph, David, Solomon, Moses, Jesus etc” never tried to come to Mecca? Or talk about Mecca where their ancestor IBRAHIM had built a sacred place for worship?
28:46. And you were not on this side of the mountain when We called, but a mercy from your Lord that you may warn a people TO WHOM NO WARNER CAME BEFORE YOU, that they may be mindful.
This is a verse from chapter 28 AL-QASAS (THE STORY, STORIES) which according to the scholars was revealed in MECCA. this verse in the reason why such a query came to my mind at the first place.
If IBRAHIM and ISMAEL came to Mecca then why does the verse say “to whom no Warner came before you? Were they not the warmers?
On the other hand, If it was revealed in Medina then another question come to my mind, considering that IBRAHIM and ISMAEL came to Mecca from CANAAN, how could they have missed or avoided Medina on their way to Mecca or on their way back to CANAAN?
Why would they ignore to warn the inhabitants of a city that falls right in their way?
These are some of the questions that make me skeptical about the authenticity of the story related with the construction of KAABA [the cubical building] AT MECCA.
I remember posting a thread on this topic “why other messengers never came to Mecca” but couldn’t find it. Now after looking at the thread “Kaaba at Jerusalem and not at Mecca” I did some research to know the names of the places associated with IBRAHIM, then I downloaded an ancient map ofAssyrian empire 1800 BC to 650 BC and a modern day map of the same region, now I am even more skeptical about the story relating KAABA.
I wanted to post this query in the above mentioned thread, but beside other questions that I have asked, I want to know “WHO ACTUALLY BUILT THE KAABA THAT IS IN MECCA” [THE BLACK CUBICAL BUILDING] which is supposed to be the holiest place on the planet earth for 99.9% [my guess] of the Muslims around the world in spite of their differences.
So please enlighten me with your thoughts/views.
Jesse Toler
(২) পবিত্র কোরানে হযরত ইব্রাহীম (আ,) হজরত ইসমাঈল( আ) এবং হজরত ইসহাক(আ) এর সম্পর্কে নাজিল হওয়া কিছু আয়াত , যেগুলোতে প্রবিত্র কা’বা গৃহ এবং কোরবানির ব্যাপারে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া আছে ;-
এ প্রসঙ্গে যাওয়ার পূর্বে, পবিত্র কুরআনের কিছু প্রাসঙ্গিক বিবরণ এখানে উল্লেখ করা হলো ।
পবিত্র কুরআনে- ১১৪টা সুরা , রুকু- ৫৫৮ট, আয়াত-৬৩৬৭টা, শব্দ-৩,২২,৬৭১ টা, মন্জিল-৭টা , এবং পারা-৩০ টা আছে এবং বিসমিল্লাহ্ ১১৩ বার (সংগৃহিত )
মক্কী ও মাদানী সুরা : মহানবী হযরত মুহম্মদ(সঃ)এর ২৩ নবুয়তি জীবনে অবতীর্ণসুরাগুলো মক্কী ও মাদানী সুরা নামে দু’পর্যায়ে বিভক্ত;
মক্কী সুরা;-মক্কায় ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় নবীর অবস্থানকলে এবং মদীনায় হিজরতের পূর্ববর্তী ১৩ বছরে যে সুরাগুলো অবতীর্ণ হয়েছিল, সেগুলোকে মক্কী সুরা বলা হয়, যা সাধারণত মক্কাবাসীদের উদ্দেশ্যে অবতীর্ণ হয় এবং এর সংখ্যা-৮৬ টি ।
মাদানী সুরাঃ হিজরতের পর এবং ইন্তিকাল পর্যন্ত ১০ বছর মদীনায় বা অন্য কোথাও অবস্থান কালে তাঁর উপর যে সুরাগুলো নাজিল হয় ,সেগুলোকে মাদানী সুরা বলে। যারসংখ্যা-২৮টি । ( বর্তমান মতে )
(সূত্র);- আয়াতগুলো জেদ্দার দারুসসালাম থেকে প্রকশিত ,প্র.ডঃ.মু.মজীবুর রহমানের অনুবাদ করা কুর’আনুল কারীম এর বাংলা তাফসীর থেকে নেয়া হয়েছে ।
১৪ নং সুরা- ইবরাহীম, মাক্কী সুরা ;-
আয়াত-৩৫;- আর স্মরণ কর, ইবরাহীম(আ) বলেছিলেন: হে আমার প্রতিপালক ! এই শহরকে (মক্কাকে) নিরাপদ করুন এবং আমাকে ও আমার পুত্রগণকে প্রতিমা পুজা হতে দুরে রাখুন ।
আয়াত-৩৭;- হে আমার প্রতিপালক ! আমি আমার বংশধরদের কতককে নিয়ে বসবাস করলাম অনুর্বর উপত্যকায় আপনার প্রবিত্র গৃহের নিকট । হে আমার প্রতিপালক ! এই জন্যে যে ,তারা যেন নামাজ কায়েম করে ; সুতরাং আপনি কিছু লোকের অন্তর ওদের প্রতি অনুরাগী করে দিন এবং ফলাদি দ্বারা তাদের রিয্ কের ব্যবস্থা করুন ; যাতে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ।
আয়াত-৩৯;-সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্ রই প্রাপ্য, যিনি আমাকে আমার বার্ধক্যেইসমাঈল(আ) ও ইসহাককে(আ) দান করেছেন : আমার প্রতিপালক অবশ্যই দু’আ শুনে থাকেন ।
১৯ নং সুরা:-মারইয়াম, (মাক্কী সুরা)
আয়াত-৪১;-বর্ণনা কর এই কিতাবে উল্লেখিত ইবরাহীমের(আ) কথা; সে ছিল সত্যবাদী ও নবী ৷
আয়াত-৪২;-যখন সে তার পিতাকে বললোঃ হে আমার পিতা ! যে শুনে না দেখে না এবং তোমার কোন কাজে আসে না তুমি তার ইবাদত কর কেন ?
আয়াত-৪৩ ;-হে আমার পিতা ! আমার নিকট তো এসেছে জ্ঞান, যা তোমার নিকট আসে নাই ৷ সুতরাং আমার অনুসরণ করো, আমি তোমাকে সঠিক পথ দেখাবো ৷
আয়াত-৪৪ ;- হে আমার পিতা ! শয়তানের ইবাদত করো না ; শয়তান দয়াময়ের অবাধ্য ৷
আয়াত-৪৫;-হে আমার পিতা ! আমি আশংকা করি, তোমাকে দয়াময়ের শাস্তি স্পর্শ করবে এবং তুমি শয়তানের সাথী হয়ে পড়বে ৷
আয়াত-৪৬ ;-পিতা বললো : হে ইবরাহীম(আ) তুমি কি আমার দেব-দেবী হতে বিমুখ হচ্ছো ? যদি তুমি নিবৃত্ত না হও তবে আমি প্রস্তরাঘাতে তোমার প্রাণ নাশ করবোই ; তুমি চিরদিনের জন্যে আমার নিকট হতে দুর হয়ে যাও ৷
আয়াত-৪৭;- ইবরাহীম(আ) বললো: তোমার নিকট হতে বিদায় ; আমি আমার প্রতিপালকের নিকট তোমার জন্যে ক্ষমা প্রর্থনা করবো, তিনি আমার প্রতি অতিশয় অনুগ্রহশীল ৷
আয়াত-৪৮;- আমি তোমার দিক হতে ও তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত যাদের ইবাদত কর তাদের নিকট হতে পৃথক হচ্ছি ; আমি আমার প্রতিপালককে আহ্বান করি ; আশা করি, আমার প্রতিপালককে আহ্বান করে আমি ব্যর্থকাম হবো না ৷
আয়াত-৪৯ ;-অতঃপর সে যখন তাদের থেকে ও তারা আল্লাহ্ ব্যতীত যাদের ইবাদত করতো সেই সব হতে পৃথক হয়ে গেলো তখন আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়াকুব এবং প্রত্যেককে নবী করলাম ৷
আয়াত-৫০;-এবং তাদেরকে আমি দান করলাম আমার অনুগ্রহ ও তাদেরকে দিলাম সমুচ্চ খ্যাতি ৷
২১ নং সুরা আম্বিয়া, মাক্কী -
আয়াত- ৫১ ;- আমি তো এর পূর্বে ইবরাহীমকে(আ) সৎপথের জ্ঞান দিয়েছিলাম এবং আমি তার সম্বন্ধে ছিলাম সম্যক অবগত ৷
আয়াত-৫২;- যখন সে তার পিতা ও তার সম্প্রদায়কে বললোঃ এই মূর্তিগুলি কি , তাদের পূজায় তোমরা রত রয়েছো ?
আয়াত-৫৩;- তারা বললোঃ আমরা আমাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে এদের পূজা করতে দেখেছি ৷
আয়াত-৫৪;-সে বললো : তোমরা নিজেরা এবং তোমাদের পিতৃ-পুরুষরাও রয়েছ স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে ৷
আয়াত-৫৫;-তারা বললো : তুমি কি আমাদের নিকট সত্য এনেছো,না তুমি কৌতুক করছো ?
আয়াত-৫৬;-সে বললো : না, তোমাদের প্রতিপালক তো আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর প্রতিপালক, যিনি ওগুলি সৃষ্টি করেছেন এবং এই বিষয়ে আমি অন্যতম সাক্ষী ৷
আয়াত-৫৭;- শপথ আল্লাহর, তোমরা চলে গেলে আমি তোমাদের মূর্তিগুলি সম্বন্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা অবলম্বন করবো ৷
আয়াত-৫৮ ;-অতঃপর সে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিলো মূর্তিগুলিকে, তাদের বড় (প্রধান) মূর্তিটি ব্যতীত, যাতে তারা তার দিকে ফিরে আসে
আয়াত-;৫৯ থেকে ৭১………………………….(.এ ক্ষেত্রে জরুরী নয় বলে উল্লেখ করা হসো না) আয়াত-৭২;-এবং আমি ইবরাহীমকে(আ) দান করেছিলাম ইসহাক এবং অতিরিক্ত পৌত্ররূপে ইয়াকুবকে(আ); আর প্রত্যেককেই করেছিলাম সৎকর্মপরায়ণ ৷
২৯নং সুরা-আনকাবূত, মাক্কী;-
আয়াত-২৭;- আমি ইবরাহীমকে(আ) দান করলাম ইসহাক(আ) ও ইয়াকুব(আ) এবং তাঁর বংশধরদের জন্যে স্থির করলাম নবুওয়াত ও কিতাব এবং আমি তাকে পুরস্কৃত করেছিলাম দুনিয়ায় এবং আখিরাতেও ; সে নিশ্চয়ই সৎকর্ম পরায়ণদের অন্যতম হবে ৷
৩৭ নং সুরা : সাফ্ফাত, মাক্কী সুরা
আয়াত:৮৩;- থেকে ১১৩ পর্যন্ত , আলোচনার সুবিধার জন্যে এই লেখার শেষ পর্যায়ে উল্লেখ করা হবে ৷
৩৮নং সুরা সোয়াদ, মাক্কী সুরা;-
আয়াত-৪৫:-স্মরণ কর, আমার বান্দা ইবরাহীম(আ) ,ইসহাক(আ) ও ইয়াকুব(আ) এর কথা, তারা ছিল শক্তিশালী ও সূক্ষ্মদর্শী ৷
আয়াত-৪৬:- আমি তাদেরকে অধিকারী করেছিলাম এক বিশেষ গুণের-ওটা ছিল পরকালের স্মরণ ৷
আয়াত-৪৭:-অবশ্যই তারা ছিল আমার মনোনীত ও উত্তম বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত ৷
আয়াত-৪৮:- স্বরণ কর ইসমাঈল(আ), আল-ইয়াসা’আ (আ) ও যুলকিফলের(আ) কথা ,তারা প্রত্যেকেই ছিল সজ্জন ৷
৪৩নং সুরা: যুখরুফ ,মাক্কী সুরা;-
আয়াত-২৬;-স্বরণ কর, যখন ইবরাহীম(আ) তার পিতা এবং সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমরা যাদের পূজা কর তাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই ৷
আয়াত-২৭;- সম্পর্ক আছে শুধু তাঁরই সাথে, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই আমাকে সৎপথে পরিচালিত করবেন ৷
আয়াত-২৮;-এই ঘোষণাকে সে স্থায়ী বাণীরূপে রেখে গেছে তার পরবর্তীদের জন্যে যাতে তারা(শিরক থেকে) প্রত্যাবর্তন কর ৷
৫১ নং সুরা:-যারিয়াত, মাক্কী সুরা
আয়াত:-২৪;- তোমাদের নিকট ইবরাহীমের(আ) এর সম্মানীত মেহমানদের বৃত্তান্ত এসেছি কী ?
আয়াত:-২৫;- যখন তারা তার নিকট উপস্থিত হয়ে বললো: সালাম ৷ উত্তরে সে বললো: সালাম ৷ এরা তো অপরিচিত লোক
৷
আয়াত:-২৬;-অতঃপর ইবরাহীম(আ) তার স্ত্রীর নিকট গেল এবং একটি ভাজা মাংসল গো-বৎস নিয়ে আসলো ৷
আয়াত:২৮;-এতে তাদের সম্পর্কে তার মনে ভীতির সঞ্চার হলো । তারা বললোঃ ভীত হয়ো না । অতঃপর তারা তাকে এক জ্ঞানী পুত্র-সন্তানের সুসংবাদ দিলো
৷
আয়াতঃ২৯;-তখন তার স্ত্রী চীৎকার করতে করতে সামনে আসলো এবং মুখ চাপড়িয়ে বললো-আমি তো বৃদ্ধা, বন্ধ্যার(সন্তান হবে ? )
আয়াতঃ৩০;-তারা বললোঃ তোমার প্রতিপালক এরূপই বলেছেন। তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ ৷
এই পর্যায়ে মক্কায় অবতীর্ণ মক্কী সুরার উল্লেখ শেষ হলো , শুধু ৩৭নং সরা সফফাত(মাক্কী)ছাড়া ,যাহা আলোচনার সুবিধার জন্যে মাদানী সুরার উল্লেখের পরে উল্লেখ করা হবে ৷ অর্থাৎ উপরে উল্লেখিত বিবরণাদি ছাড়া মক্কায় নিযীলকৃত কোনো আয়াতে এই প্রসঙ্গে তেমন উল্লেখযোগ্য আর কোনো আয়াতের সন্ধান পাওয়া যাই নাই ৷
মাদানী সুরা ;-
২ নং সুরা বাকারাহ্, (মাদানী সুরা)
আয়াত-১২৪;-এবং যখন তোমার প্রতিপালক ইবরাহীমকে কতিপয় বাক্য দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বলেছিলেনঃ আমি তোমাকে মানবমন্ডলীর নেতা করবো; সে বলেছিলঃ আমার বংশধরগণ হতেও; তিনি বলেছিলেনঃ আমার অঙ্গীকার অত্যাচারীদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না ৷
আয়াত-১২৫;-এবং যখন আমি কা’বাগৃহকে মানব জাতির জন্য সুরক্ষিত স্থান ও পুণ্যদাম করেছিলাম, এবং তোমরা মাকামে ইবরাহীমকে নামাযের স্থান হিসাবে গ্রহন কর । এবং আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলের নিকট অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী ও ই’তিকাফকারী এবং রুকু ও সিজদাকারীদের জন্যে পবিত্র রখো ৷
আয়াত-১২৬;-যখন ইবরাহীম(আ) বললেনঃ হে আমার প্রতিপালক ! এ স্থানকে আপনি নিরাপত্তাময় শহরে পরিণত করুন এবং এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ্ ও পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করেছে, তাদেরকে উপজীবিকার জন্যে ফল-শস্য প্রদান করুন, তিনি বলেছিনেন, যারা অবিশ্বাস করে তাদেরকে আমি অল্প দিন শান্তি দান করবো, তৎপরে তাদেরকে অগ্নির শাস্তি ভোগ করতে বাধ্য করবো, ঐ গন্তব্য স্থান নিকৃষ্টতম ৷
আয়াত-১২৭;-যখন ইবরাহীম(আ) ও ইসমাঈল(আ) কা’বার ভিত্তি উত্তোলন করছিলেন, (তখন বলেনঃ) হে আমাদের প্রতিপালক “আমাদের পক্ষ হতে এটা গ্রহন করুন, নিশ্চয় আপনি শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী’ ৷
আয়াত-১২৮;-হে আমাদের প্রভু ! আমাদের উভয়কে আপনার অনুগত করুন, এবং আমাদের বংশধরদের মধ্য হতেও আপনার অনুগত একদল লোক সৃষ্চি করুন, আর আমাদেরকে হজ্জের আহকাম বলে দিন এবং আমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হোন, নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, করুণাময় ৷
আয়াত-১২৯;- হে আমার প্রভু ! সে দলে তাদেরই মধ্য হতে এমন একজন রাসূল প্রেরণ করুন যিনি তাদেরকে আপনার নিদর্শনাবলী পাঠ করে শুনাবেন এবং তাদেরকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান শিক্ষা দান করবেন ও তাদেরকে পবিত্র করবেন । নিশ্চয় আপনী পরাক্রান্ত বিজ্ঞানময় ৷
আয়াত-১৩০;-এবং যে নিজেকে নির্বোধ করে তুলেছে সে ব্যতীত কে ইবরাহীমের ধর্ম হতে বিমুখ হবে ? এবং নিশ্চয়ই আমি তাকে এই পৃথিবীতে মনোনীত করেছিলাম, নিশ্চয় সে পরকালে সৎ কর্মশীলগণের অন্তর্ভুক্ত ৷
আয়াত-১৩১;-যখন তার প্রভু তাকে বলেছিলেনঃ তুমি আনুগত্য স্বীকার কর ; সে বলেছিল : আমি বিশ্ব জগতের প্রতিপালকের নিকট আত্মসমর্পণ করলাম ৷
আয়াত-১৩২;- আর ইবরাহীম ও ইয়াকুব স্বীয় সন্তানগণকে সদুপদেশ প্রদান করেছিল হে আমার বংশধরগণঃ নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদের জন্যে এই ধর্ম মনোনীত করেছেন, অতএব তোমরা মুসলমান না হয়ে মরো না ৷
আয়াত-১৩৩;- যখন ইয়াকুবের মৃত্যু উপস্থিত হয় তখন কি তোমরা উপস্থিত ছিলে ? তখন সে নিজ পুত্রগণকে বলেছিল আমার পরে তোমরা কোন জিনিসের ইবাদত করবে ? তারা বলেছিল আমরা তোমার পিতৃপুরুষ ইবরাহীম, ইসলাঈল ও ইসহাকের উপাস্য সে অদ্বিতীয় উপাস্যের ইবাদত করবো, এবং আমরা তাঁরই অনুগত থাকবো ৷
আয়াত-১৩৫;- এবং তারা বলে যেঃ তোমরা ইহুদী আথবা খ্রিস্টান হও তবেই সুপথ প্রাপ্ত হবে, তুমি বলঃ বরং আমরা ইবরাহীমের(আ) সুদৃঢ় ধর্মে আছি, এবং সে অংশীবাদীদের অন্তর্ভক্ত ছিল না ৷
আয়াত-১৩৬;- তোমরা বলঃ আমরা আল্লাহ্ র প্রতি এবং যা আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে, আর যা হযরত ইবরাহীম(আ) ইসলাঈল(আ), ইসহাক(আ) , ইয়াকুব(আ) ও তদীয় বংশধরগণের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছিল এবং মূসা(আ) ঈসা(আ)কে যা প্রদান করা হয়েছিল এবং অন্যান্য নবীগণ তাদের প্রভু হতে যা প্রদত্ত হয়েছিল, তদ সমুদয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করছি, তাদের মধ্যে কাউকেও আমরা প্রভেদ করি না ,এবং আমরা তাঁরই প্রতি আত্মসমর্পণকারী ৷
আয়াত-১৪০;-তোমরা কি বলছো যে, ইবরাহীম(আ) ইসলাঈল(আ), ইসহাক(আ), ইয়াকুব(আ) ও তদীয় বংশধরগণ ইহুদী ও খ্রিস্টান ছিলেন ? তুমি বলঃ তোমরাই সঠিক জ্ঞানী না আল্লাহ্ ? …………..
৩নং সুরাঃ আল-ইমরান, (মাদানী সুরা)
আয়াতঃ-৩৩;-নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আদমকে ও নূহকে এবং ইবরাহীমের সন্তানগণকে ও ইমরানের সন্তানগণকে বিশ্ব জগতের উপর মনোনীত করেছেন ৷
আয়াতঃ-৬৭;- ইবরাহীম ইহুদী ছিল না এবং খ্রিস্টানও ছিল না ; বরং সে সুদৃঢ় মুসলিম ছিল এবং সে অংশীবাদীগণের অন্তর্গত ছিল না ৷
আয়াতঃ-৮৪;- তুমি বলঃ আমরা আল্লাহর প্রতি এবং যা আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক ,ইয়াকুব ও তাদের বংশধরগণের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে ………….
সুরা : আন-নিসা, (মাদানী সুরা)
আয়াতঃ- ১৬৩;-নিশ্চয়ই আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করেছি, যেরূপ আমি নূহ(আ)ও তৎপরবর্তী নবীগণের প্রতি প্রত্যাদেশ করেছিলাম এবং ইবরাহীম(আ),ইসমাঈল(আ), ইসহাক(আ), ও ইয়াকুব(আ)………….
৩৭ নং সুরা- সাফ্ফাত , (মাক্কী সুরা )
আয়াত ৯৮;- তারা তার(ইবরাহীম আ) এর বিরুদ্ধে চক্রান্তের সংকল্প করেছিল; কিন্তু আমি তাদেরকে অতিশয় হেয় করেছিলাম ৷
আয়ত-৯৯;-এবং সে (ইবরাহীম আ) বললঃ আমি আমার প্রতিপালকের দিকে চললাম, তিনি অবশ্যই আমাকে সৎপথে পরিচালিত করবেন ৷
আয়াত-১০০;- হে আমার প্রতিপালক ! আমাকে সৎকর্মপরায়ণ সন্তান দানকরুন ৷
আয়াত-১০১;-আতঃপর আমি তাকে এক স্থিরবুদ্ধি পুত্রের সুসংবাদ দিলাম৷
আয়াত-১০২;- অতঃপর সে (সন্তান) যখন তার পিতার সাথে কাজ করার মত বয়সে উপনীত হলো তখন ইবরাহীম(আ) বললোঃ হে আমার বৎস ! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে আমি যবেহ করছি, এখন তোমার অভিমত কি বল ? সে বললঃ হে আমার পিতা ! আপনী যা আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন । আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভূক্ত পাবেন ৷
আয়াত-১০৩;- যখন তারা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করলো এবং তিনি(ইবরাহীম আ ) তাকে (পুত্রকে) কাত করে (কুরবাণী করার জন্যে) শোয়ালো,
আয়াত-১০৪;-তখন আমি তাকে আহ্বান করে বললামঃ হে ইবরাহীম(আ) !
আয়াত-১০৫;-তুমি তো স্বপ্নদেশ সত্যই পালন করলে ! এভাবেই আমি সৎ-কর্মশীলদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি ৷
আয়াত-১০৬;-নিশ্চয় এটা ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা ৷
আয়াত-১০৭;-আমি তাকে মুক্ত করলাম এক মহান কুরবানীর বিনিময়ে ।
আয়াত-১০৮;-আমি এটা (তার আদর্শ) পরবর্তীদের স্মরণে রেখিছি ।
আয়াত-১০৯;- ইবরহীম(আ) এর উপর শান্তি বর্ষিত হোক
।
আয়াত-১১০;-এভাবে আমি সৎকর্মশীলদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি ।
আয়াত-১১১;-সে ছিল আমার মুমিন বান্দাদের অন্যতম ।
আয়াত- ১১২;- আমি তাকে সুসংবাদ দিয়েছিলাম ইসহাক (আ)-এর সে ছিল এক নবী,সৎকর্মশীলদের অন্যতম ৷
আয়াত-১১৩;-আমি তাকে বরকত দান করেছিলাম এবং ইসহাককেও(আ) তাদের বংশধরদের মধ্যে কতক সৎকর্মপরায়ণ এবৎ কতক নিজেদের প্রতি স্পষ্ট অত্যাচারী ৷
এখানে দেখা যাচ্ছে যে আয়াত-১০০ তে ইবরাহীম (আ)এক সন্তান চেয়েছিলেন ,এবং আয়াত-১০১-এ আল্লাহ্ তাঁকে এক পুত্রের সুসংবাদ দিয়ে ছিলেন , আয়াত ১০২ -এ দেখা যায় , আল্লাহর আদেশেঐ সন্তাকেই কুরবানীর আদশ দিয়ে, পরে তাকে রক্ষা করেন এক মহান
কুরবানীর বিনিময়ে , আয়াত-১১২ তে আল্লাহ্ ইবরাহীমকে যে সুপুত্রের সংবাদ দিয়েছিলেন তার নাম ইসহাক(আ) বলে উল্লেখিত হয়েছে, অর্থাৎ আয়াত ১০২ তে যাকে কুরবানীর আদেশ হয়েছিল, তার নাম ইসহাক(আ)বলে ধারণা করা যাইতে পারে, ঐ সব আয়াত আনুসারে, যা আমাদের প্রচলিত জানা থেকে আলাদা ৷ এ ব্যাপারে একটা সন্দেহ থেকেই গেল ৷
যদিও আমরা অবিশ্বাস করি তবু প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযোগ্য যে ,বাইবেল ওল্ড টেস্টামেন্টে পুত্র ইসমাঈলের পরিবর্তে পুত্র ইসহাকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে ।( সূত্র-আদি পুস্তক;-২২ : ২ )
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন