বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পারিবারিক জীবনের কিছু অজানা কথা !



বিশ্বকবি  রবীন্দ্রনাথ  ঠাকুরের  পারিবারিক  জীবনের কিছু  অজানা  কথা

                                     (প্রথম পর্ব )

       (সুত্র ; কবিপুত্র  রথীন্দ্রোথ ঠাকুর (১৮৮৮-১৯৬১এর স্মৃতি  কথা মূলক  রচনা ' On the edge of Time . এইগ্রন্থটির  বাংলাদেশে  বাংলা অনুবাদ  করেছেন চট্রগ্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের  সাবেক অধ্যাপক কবির  চান্দ এবং অনুবাদ গ্রন্থটির নাম দিয়েছেন ' আমার বাবা রবীন্দ্রনাথ  ঠাকুর )
     এই অনুবাদ গ্রন্থ থেকে কবির পারিবারিক জীবনের বিভিন্ন ঘটনার কিছু  বর্ণনা এই লেখাতে আলোচনা করা হয়েছে ৷ 

                 জোড়া  সাঁকোর  ঠাকুর পরিবার এর  বংশ  পরিচয় :-

    এই পরিবারটি আদতে বন্দ্যোপধ্যায় পদবির ব্রাহ্মণদের  অন্তর্ভূক্ত ৷ তারা দক্ষ নামক এক ব্রাহ্মণের  বংশধর ৷ অষ্টম শতাব্দীর বৌদ্ধ  প্রধান বাংলায় বিশুদ্বতাবাদী হিন্দুত্বের পুনর্জাগরন ঘটাতে কনৌজ থেকে আটজন ব্রাহ্মণকে বাংলায় আনা হয়েছিল ৷ রবীন্দ্রোনাথ ঠাকুরের  পূর্ব  পুরুষের  প্রতিনিধি  দক্ষ  নামক একজন  ছিলেন  ঐ ৮ জনের মধ্যের  একজন  ব্রাহ্মণ  ৷ কবির পূর্ব পুরুষেরা নানা স্থান ঘুরেন ।৷ অবশেষে ১৬৯০ সালে পঞ্চানন নামক তাদের একজন বংশধর কোলকাতার নিকটে গোবিন্দ পুরে বসতি স্থাপন  করেন ৷ এর পর ঠাকুর পরিবার ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পেনির আমলে অনেক বড় বড় ব্যবসা বানিজ্য করে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে পাথুরিয়া ঘাটা  ও জোড়া সাঁকোতে বাড়ি নির্মান  করেন ৷

     ঠাকুর পরিবারকে একসময় পিরালি ( পির-আলি ) ব্রাহ্মণ নাম দেয়া হয় ৷ একটি বিশেষ কারণে অন্যান্য ব্রাহ্মণরা তাদের এই টাইটেল দিয়েছিল ৷ কারণটি হচ্ছেএক সময় খুলনায় ঠাকুর পরিবারের কিছু সদস্যকে বসবাস করতে হয়েছিল এক মুসলিম শাসন কর্তার অধীনে চাকুরির     সুবাদে ৷ 

     এখানে তখন এক সঙ্গে দুই ভাই এই মুসলিম শাসন কর্তার অধীনে চাকুরি করতেন ৷ কোনো এক রমজান মাসের বোজার দিনে কামদেব নামক একভাই দেখেন যে ,  শাসনকর্তার এক সভাসদ  রোজা অবস্থায়  সুগন্দী লেবুর গন্ধ শুকছেন ৷ কামদেব  তাকে ঠাট্রা করে বলেছিলেন ঘ্রানাং অর্ধং ভোজন ৷ অর্থাৎ তার রোযা অনেকটা ভঙ্গ হয়ে গেছে তালেবুর গন্ধ শুকার জন্যে ৷কামদেবের এই ঠাট্রার  কথাটি ঐ সভাসদ শাসনকর্তার কাছে নালিশ করেন ৷ শাসনকর্তা এর প্রতিশোধ নিতে এক বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন ৷ শাসকরা সর্বকালেই বোধহয় একই স্বভাবের হয় ৷ ধর্মমতকে এখানে যার যার ফেবারে কাজে লাগানো হয় ৷ এখানেও তাই হয়েছে ৷হঠাৎ করে শাসনকর্তা এক গানের অনুষ্টানের আয়োজন করেন এবং এলাকার সকল হিন্দুকেও নিমন্রণ   করেন ৷ অন্যদিকে গানের আসর ঘরের পাশের রুমে গোমাংশ রান্নার ব্যবস্থা করেন যাতে গোমাংশ রান্নার গন্ধ গানের আসরের রুমে প্রকটরূপে প্রবেশ  করে ৷ এতে আমন্রিত হিন্দু সদস্যরা গানের আসর ত্যাগ করে চলে যান ৷ চাকুরিরত কামদেব ও তার ভাইকে আটকে রেখে তাদের জাত মারা হয় ৷ সে থেকে ঠাকুর পরিবারের কিছু সদস্যকে বা ঐ পরিবারকেই পিরিলি ব্রাহ্মণ নামে অবিহিত করা হত এবং সমাজে তাদেরকে আলাদা চোখে দেখা হত ৷ তাই বোধহয় এই পরিবার পরবর্তীতে  ব্রাহ্ম সমাজ ভূক্ত সহজে হতে পেরেছিল ৷

     রাজা  রামমোন রায়  প্রথমে  যে  ধর্মমত  প্রবর্তন  করেছিলেন তখন  তার  নাম  ছিল ' বেদান্ত  প্রতিপাদ্য  ধর্ম ' ৷

      ১৮৪৭  সালের  ২৮ মে  তত্ত্ববোধিনী  সভার  বার্ষিক  অধিবেশনে  এই  নাম  পরিবর্তন  করা  হয় এবং নতুন  নাম  রাখা  হয়  ' ব্রাহ্মধর্ম ' ৷এর পর থেকে  রাজা  রামমোহনের  প্রবর্তিত  ধর্মমতের  নাম  ' ব্রাহ্মধর্ম ' নামে  পরিচিতি  লাভ  করে ৷

      তখন থেকে প্রিন্স দারোকানাথ ঠাকুর এবং কবির  পিতা প্রতি বছর ১১ মাঘ  ঘটা  করে  ব্রাহ্মসমাজের  বার্ষিকি অনুষ্ঠানের   উদযাপন  করতেন ৷মাঘমাসে এই উৎসব  অনুষ্ঠুত  হওয়ায়  ব্রাহ্মসমাজের  এ পার্বণকে  মাঘোৎসব ও  বলা  হতো এবং এর বক্তৃতা ও  বৈদিক   মন্ত্রপাঠ সহ  অনেক আনুষ্ঠানিকতা ও পালন করা হতো জাঁকজমক পূর্ণ এই অনুষ্ঠানে ৷
',,,
    সংক্ষেপে  বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ  ঠাকুরের পারিবারিক  পরিচয় :

     জয়রাম ( মৃত্যু-১৭৫৭ )  নামক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক উর্দ্ধতন বংশধর ব্যক্তির   ৫ সন্তানের মধ্যে একজনের  নাম ছিল নীলমণি        ( মৃত্যু-১৭৯১)    তার  ৩ সন্তানের একজনের নাম ছিল রামমণি (১৭৫৯-১৮৩৩)   রামমণির   ৩ সন্তানের  মধ্যের  একজন  ছিলেন প্রিন্স  দ্বারকানাথ ঠাকুর (১৭৯৪-১৮৪৬) ৷  যিনি ছিলেন কবি রবী ঠাকুরের  দাদা মসাই ৷ কবির দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের  ৩  সন্তানের একজন ছিলেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮১৭-১৯০৫ )

       বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হচ্ছেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবিত ও মৃত ১৫ সন্তানের ১২ নম্বার সন্তান ৷ আর বর্তমান  স্মিতি কথা মূলকOn the edge of Time . এইগ্রন্থটির লেখক হচ্ছেন কবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৫ সন্তানের ২য় সন্তান রথীনদ্রনাথ ঠাকুর  (১৮৮৮-১৯৬১) ৷ অবশ্য কবির ৪র্থ কন্যা মীরা  দেবীর (১৮৯২-১৯৬৯)   ২ সন্তানের মধ্যের প্রথম ছেলে নীতীন্দ্রনাথ (১৯১১-১৯৩২) এবং ২য় মেয়ে নন্দিতা দেবীর (১৯১৬-১৯৬৭ ) পরের আর কোনো পরবর্তী বংশধরের সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না ৷

কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের  বংশধরদের  কথা ;  


কবির পাঁচ সন্তানের মধ্যে কন্যা বেলা , রাণী  আর পূত্র শমীন্দ্র বহু আগেই মারা যান ৷ রথীন্দ্রনাথ তখনও বেঁচে ছিলেন ৷ তবে এটা নিশ্চিত হয়ে গেছিল যে তাঁর ঔরসে আর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই ৷ রথীন্দ্রনাথ নন্দিনী নামের  এক  কন্যা দত্তক নিয়েছিলেন ৷ এই মূল বই  লেখার সময় কবির কন্যা মীরা দেবী  আর মীর দেবীর স্বামী  নগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় এবং তাদের পুত্র নীতীন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় ও মেয়ে নন্দিতা  গঙ্গোপাধ্যায়ই তখন পর্যন্ত কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবিত বংশধর ছিলেন ৷ জার্মানিতে পড়াশুনাকালীন সময়ে নীতীন্দ্রনাথ  মারা     যান ৷ তার মারা যাওয়ার তারিখ ছিল ১৯৩২ সালের ৭ ই আগস্ট ৷  নন্দিতা  ওরফে  বুড়ির বিয়ে হয় কৃষ্ণা কৃপালনীর সঙ্গে ৷ কিন্তু এ দম্পতি নিঃসন্তান ছিলেন ৷ অন্যদিকে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পালিত কন্যা  নন্দিনীও নিঃসন্তান ছিলেন ৷ ফলে ১৯৬১ সালে ছেলে রথীন্দ্রনাথ এর মৃত্যুর পর ১৯৬৭ সালে নন্দিতারও মৃত্যু হয় ৷ আর ১৯৬৯ সালের দিকে কবির একমাত্র জীবিত কন্যা মীরা দেবীর মৃত্যুর পর পৃথিবীতে বিশ্বকবির ঔরসজাত আর কোনো বংশধর জীবিত থাকল না ৷ অর্থাৎ কবি কন্যা মীরা দেবীর মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে কবির ঠাকুর পরিবারের শেষ বংশধরের ও মৃত্যু ঘটল ৷ 
      

    রথীন্দনাথ  ঠাকুরের  মূল স্মৃতি কথামূলক বইটিতে ব্যাপকভাবে কবির জীবনের বিভিন্ন ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে এবং অনুবাদক কবির চান্দ বাংলায় আরো সুন্দর ভাবে তার প্রকাশ করেছেন ৷ তবে এই সংক্ষিপ্ত লেখাতে শুধু কবির জীবনের ঠুকিঠাকি কিছু ঘটনার উল্লেখ করে লেখাটির সমাপ্তি  টানা হয়েছে ৷

     এই বই থেকে জানা যায় যে , যে যুগে বড়ঘরের ছেলেদের আই সি এস বা ব্যারিষ্টার হতে লেখাপড়ার  জন্যে বিলাতে পাঠানো হত , সে সময়ে কবি তাঁর পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অনেক কাটখড়া পুড়িয়ে আমেরিকার বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় এলিনয়ে কৃষিবিদ্যা পড়তে পাঠিয়েছেন এবং সেখান থেকে কবি পুত্র কৃষিবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রী অর্জণ করেন ৷ পরে কৃষি বিষয়ে আরো জ্ঞান অর্জনের জন্যে তাকে  লন্ডন ও জার্মান ও প্রেরণ করা হয় ৷ শেষে কবির আমেরিকা ভ্রমনের সময় রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ও সঙ্গে নিয়ে যান ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার পি এইচ ডি ডিগ্রী সমাপ্ত করতে ৷ অবশ্য বিশেষ কোনো কারণে কবি পূত্রকে  আমেরিকাতে ডিগ্রী শেষ হওয়ার পূর্বে কবির সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন এবং দেশে ফিরে রথিন্দ্রনাথ ঠাকুরকে জমিদারী দেখাশুনার দায়িত্ব অর্পণ করেন ৷

       ছেলেকে কবি কৃষিবিধ করে গড়ে তুলে বাংলার কৃষির এবং কৃষকের উন্নতি যে করতে ছেয়েছিলেন এতে কোনো সন্দেহের  অবকাশ নেই ৷ তাই কবি ও জমিদার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলার কৃষকে কি চোখে দেখতেন তা সহজেই অনুমান করা যায় ৷ তিনি অন্যন্য জমিদারের মত তিনি শুধু গতানুগতিক জমিদার ছিলেন না ৷ প্রজারাও তাকে ভালবাসতো এবং তাদের একজন আপন লোক ভাবতো ৷  এছাড়া  সাপ্তাহে  একদিন  কবি  পরিবারের  কাজের  লোকজনদের  সবাইকে  ছুটি  দেয়ার  একটি  রেয়াজ কবি  পরিবারে  বিদ্যমান  ছিল ৷  তাই  কাজের  মানুষের  ছুটির  দিনে  কবি  পরিবারের  সদস্যরা  বাসার  প্রয়োজনীয়  সব  কাজই  ভাগাভাগি করে সবাই  মিলেমিসে  করতে  হত ৷যা  তখনকার  দিনে  কোনো  জমিদার  পরিবারে  করা  হত  না ৷ 

     তখনও বাংলায় বিধবা বিয়ের তেমন প্রচলন আরম্ভ হয় নাই । রাজা রামমোহন রায় ও বিদ্যাসাগর জগদীশ চন্দ্রের প্রচারেই তখন বিধবা বিবাহ সীমাবদ্ধ ছিল ৷ ঠিক তখনই ১৯১০ সালে কবি রবীন্দ্রনাথ তাঁর পূত্র রথীনদ্রনাথকে তাদের পারিবারিক এক বিধবা আত্মিয়া প্রতিমা দিবীর সঙ্গে বিয়ের ব্যবস্থা করেন ৷ এর আগে আর একরার আরেক বিধবার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ছেলেকে বিয়ে দিতে        চেয়েছিলেন ৷কিন্তু দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের বিরুদিতার কারণে  সে বিয়ে সম্ভব হয় নাই ৷ তবে এই বিয়েতে মা মৃণালিনি দেবী বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন ৷ অর্থাৎ কবি শুধু কথা বা প্রচারে সীমাবদ্ধ ছিলেন না ৷ প্রয়োজনে তার বাস্তব রূপও দিয়েছেন ৷এ ক্ষেত্রে তাই দেখা যায় ৷

       রথীন্দ্রনাথের  বোনদের সংসার তেমন সুখের হয়নি ৷ তাই বোধহয় কবি একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চান নি ছেলের বিবাহিত  জীবনে ৷তাই পূত্রের বিয়ের ৪ মাসের মধ্যেই পূত্রকে তার স্ত্রী প্রতিমা দেবীর সঙ্গে কি কি ব্যবহার করা উচিত কবি এক পত্রে তার বিস্তারিত বিবরণ    দেন ৷কবি পূত্রের চিঠিতে উল্লেখ করেন যে  ,  রথীন্দ্রনাথ যেন তার পূত্রবধু প্রতিমাকে কেবল গৃহিণী এবং ভোগের সঙ্গিনী হিসেবে না দেখে তাঁর (প্রতিমার) চিত্তকে জাগিয়ে তোলার ও উপদেশ দেন ৷কবি তাঁর চিঠিতে লিখেন যে , প্রতিমাকে মানুষ হিসেবে সামগ্রিকভাবে দেখতে হবে ৷ প্রতিমার মধ্যে যে বিশেষ শক্তি আছে তার কোনোটা যদি অনাদরের কারণে নষ্ট হয় তাহলে ওর সমস্ত স্বভাবগত প্রকৃতিতে আঘাত লাগবে ৷ এই কথা ছেলেকে কবি স্মরণ করিয়ে দিয়ে লিখেন  যে , কেবল মাত্র নিজের রুচি , ইচ্ছা ও প্রয়োজনের দিক থেকে প্রতিমাকে দেখলে হবে না ৷ওর নিজের দিক থেকে ওকে সম্পূর্ণ করে তুলতে হব৷ আর এই দায়িত্ব কবি তাঁর ছেলেকেই দিয়েছেন ঐ পত্রে ৷

     অন্যদিকে ১৯৪১ সালে কবি প্রতিমাকে এক চিঠিতে লিখেন – ‘ তোমাদের পরস্পরের জীবন যাতে সম্পূর্ণ এক হয়ে ওঠে সে দিকে বিশেষ চেষ্টা রেখো ৷মানুষের হৃদয়েই যথার্থ মিলন ঘটে , সে মিলন কোনোদিন শেষ হয় না ৷ প্রতিদিন তার নিত্য নুতন সাধনা ঈশ্বর তোমাদের চিত্তে সেই পবিত্র সাধনাকে গভীর করে জাগ্রত করে রেখে দিন ৷এই আমি কামনা করি’ ৷
      অনেকে  ভেবে  থাকেন যে ইরেজি গীতাঞ্জলি হয়ত বাংলা  গীতাঞ্জলিরই  হুবুহু অনুবাদ ৷ আসলে  তা  নয় ৷ কবি  তাঁর  দশটা  বই  থেকে কবিতা  বাছাই  করে  অনুবাদ  করেছিলেন ৷ বাংলা  গীতাঞ্জলিতে  মোট গান আর  কবিতার  সংখ্যা ১৫৭ টি  আর   ইংরেজি গীতাঞ্জলিতে ১১৩ টি ৷ এর মধ্যে বাংলা  গীতাঞ্জলি  থেকে  নেয়া  হয়েছে  ৫৩টি , গীতিমাল্য  থেকে  ১৬টি , নৈবেদ্য  থেকে ১৫টি
     খেয়া  থেকে  ১১টি , শিশু  থেকে  ৩টি  ,কল্পনা  থেকে ১টি , চৈতালী  থেকে  একটি , উৎসর্গ  থেকে  ১টি  , স্মরণ  থেকে  একটি , এবং  অচলায়তন  থেকে  ১টি ৷ কবি নিজেই শিলাইদহে বাংলা কবিতাগুলোর  ইংরেজি  অনুবাদ  করেন ৷

     ১৯১২  সালের  ১ নভেম্বর  ইন্ডিয়া  সোসাইটি  গীতাঞ্জলির  ৭৫০  কপির  সংস্করণ  করে ৷ ১৯১৩  সালের মার্চ  মাসে ম্যাকমিলান  অ্যান্ড  কোম্পানি এর  একটি  নতুন  সংস্করণ  বের  করে ৷ তখন লন্ডনে  কবি  এতটাই  পাঠকপ্রিয়তা  অর্জন  করেন যে পরবর্তী  আট  মাসে  এটি  ১০  বার  পুনর্মুদ্রিত করতে হয়েছে ৷


        নিম্নে  ১৯১২  সালে প্রকাশিত ইংরেজি   গীতাঞ্জলির  ৭০০ কপির  প্রচ্ছদ  হুবুহু  তুলে  দেয়া  হল আগ্রহী  পাঠকের  জন্য ৷


                                   GITANJALI

                              ( SONG  OFFERINGS)
                                          BY
                        RABINDRA  NATH  TAGORE

  A collection  of  prose  Translation made  by  the  Author  from  the  Original  Bengali . 
                    with an  introduction  by  W . B . YEATS 


                                         LONDON
printed  at  the  chiswick  press  for  THE  INDIA  SOCIETY .
                                    1912


 ( প্রথম পর্বের লেখা সমাপ্ত ) 

 সৌজন্য  ;-  ( অনুবাদ , কবির চান্দ , যার অনুবাদ থেকে এই লেখাটি তৈরি করা হয়েছে ৷)



       

মন্তব্যসমূহ