বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পারিবারিক জীবনের কিছু অজানা কথা ৷
(প্রথম
পর্ব )
(সুত্র ; কবিপুত্র রথীন্দ্রোথ ঠাকুর (১৮৮৮-১৯৬১) এর স্মৃতি কথা মূলক রচনা ' On
the edge of Time . এইগ্রন্থটির বাংলাদেশে বাংলা অনুবাদ করেছেন চট্রগ্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক কবির চান্দ এবং অনুবাদ গ্রন্থটির নাম দিয়েছেন ' আমার বাবা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর )
এই অনুবাদ গ্রন্থ থেকে কবির পারিবারিক জীবনের বিভিন্ন ঘটনার কিছু বর্ণনা এই লেখাতে আলোচনা করা
হয়েছে ৷
জোড়া সাঁকোর ঠাকুর পরিবার এর বংশ পরিচয়
:-
এই পরিবারটি আদতে বন্দ্যোপধ্যায় পদবির ব্রাহ্মণদের অন্তর্ভূক্ত ৷ তারা দক্ষ নামক
এক ব্রাহ্মণের বংশধর
৷ অষ্টম শতাব্দীর বৌদ্ধ প্রধান বাংলায় বিশুদ্বতাবাদী হিন্দুত্বের পুনর্জাগরন ঘটাতে কনৌজ থেকে আটজন
ব্রাহ্মণকে বাংলায় আনা হয়েছিল ৷ রবীন্দ্রোনাথ ঠাকুরের পূর্ব
পুরুষের প্রতিনিধি দক্ষ নামক একজন ছিলেন ঐ ৮ জনের মধ্যের একজন
ব্রাহ্মণ ৷ কবির পূর্ব
পুরুষেরা নানা স্থান ঘুরেন ।৷ অবশেষে ১৬৯০ সালে পঞ্চানন নামক
তাদের একজন বংশধর কোলকাতার নিকটে গোবিন্দ পুরে বসতি স্থাপন করেন ৷ এর পর ঠাকুর পরিবার ইষ্ট
ইন্ডিয়া কোম্পেনির আমলে
অনেক বড় বড় ব্যবসা বানিজ্য করে অষ্টাদশ শতাব্দীর
শেষ ভাগে পাথুরিয়া ঘাটা
ও জোড়া সাঁকোতে বাড়ি নির্মান করেন ৷
ঠাকুর পরিবারকে একসময় পিরালি ( পির-আলি ) ব্রাহ্মণ নাম দেয়া হয় ৷ একটি বিশেষ কারণে
অন্যান্য ব্রাহ্মণরা তাদের এই টাইটেল দিয়েছিল ৷ কারণটি হচ্ছে – এক সময় খুলনায় ঠাকুর পরিবারের কিছু সদস্যকে বসবাস করতে হয়েছিল এক মুসলিম
শাসন কর্তার অধীনে চাকুরির সুবাদে ৷
এখানে তখন এক সঙ্গে দুই ভাই এই মুসলিম শাসন কর্তার অধীনে চাকুরি করতেন ৷ কোনো এক রমজান মাসের বোজার দিনে কামদেব নামক একভাই দেখেন যে , শাসনকর্তার এক সভাসদ রোজা অবস্থায় সুগন্দী লেবুর গন্ধ শুকছেন ৷ কামদেব তাকে ঠাট্রা করে বলেছিলেন ঘ্রানাং অর্ধং ভোজন ৷ অর্থাৎ তার রোযা অনেকটা ভঙ্গ হয়ে গেছে তার লেবুর গন্ধ শুকার জন্যে ৷কামদেবের এই ঠাট্রার কথাটি ঐ সভাসদ শাসনকর্তার কাছে নালিশ করেন ৷ শাসনকর্তা এর প্রতিশোধ নিতে এক বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন ৷ শাসকরা সর্বকালেই বোধহয় একই স্বভাবের হয় ৷ ধর্মমতকে এখানে যার যার ফেবারে কাজে লাগানো হয় ৷ এখানেও তাই হয়েছে ৷হঠাৎ করে শাসনকর্তা এক গানের অনুষ্টানের আয়োজন করেন এবং এলাকার সকল হিন্দুকেও নিমন্রণ করেন ৷ অন্যদিকে গানের আসর ঘরের পাশের রুমে গোমাংশ রান্নার ব্যবস্থা করেন যাতে গোমাংশ রান্নার গন্ধ গানের আসরের রুমে প্রকটরূপে প্রবেশ করে ৷ এতে আমন্রিত হিন্দু সদস্যরা গানের আসর ত্যাগ করে চলে যান ৷ চাকুরিরত কামদেব ও তার ভাইকে আটকে রেখে তাদের জাত মারা হয় ৷ সে থেকে ঠাকুর পরিবারের কিছু সদস্যকে বা ঐ পরিবারকেই পিরিলি ব্রাহ্মণ নামে অবিহিত করা হত এবং সমাজে তাদেরকে আলাদা চোখে দেখা হত ৷ তাই বোধহয় এই পরিবার পরবর্তীতে ব্রাহ্ম সমাজ ভূক্ত সহজে হতে পেরেছিল ৷
রাজা রামমোন রায় প্রথমে যে ধর্মমত প্রবর্তন করেছিলেন তখন তার নাম ছিল ' বেদান্ত প্রতিপাদ্য ধর্ম ' ৷
১৮৪৭ সালের ২৮ মে তত্ত্ববোধিনী সভার বার্ষিক অধিবেশনে এই নাম পরিবর্তন করা হয় এবং নতুন নাম রাখা হয় ' ব্রাহ্মধর্ম ' ৷এর পর থেকে রাজা রামমোহনের প্রবর্তিত ধর্মমতের নাম ' ব্রাহ্মধর্ম ' নামে পরিচিতি লাভ করে ৷
তখন থেকে প্রিন্স দারোকানাথ ঠাকুর এবং কবির পিতা প্রতি বছর ১১ মাঘ ঘটা করে ব্রাহ্মসমাজের বার্ষিকি অনুষ্ঠানের উদযাপন করতেন ৷মাঘমাসে এই উৎসব অনুষ্ঠুত হওয়ায় ব্রাহ্মসমাজের এ পার্বণকে মাঘোৎসব ও বলা হতো এবং এর বক্তৃতা ও বৈদিক মন্ত্রপাঠ সহ অনেক আনুষ্ঠানিকতা ও পালন করা হতো জাঁকজমক পূর্ণ এই অনুষ্ঠানে ৷
এখানে তখন এক সঙ্গে দুই ভাই এই মুসলিম শাসন কর্তার অধীনে চাকুরি করতেন ৷ কোনো এক রমজান মাসের বোজার দিনে কামদেব নামক একভাই দেখেন যে , শাসনকর্তার এক সভাসদ রোজা অবস্থায় সুগন্দী লেবুর গন্ধ শুকছেন ৷ কামদেব তাকে ঠাট্রা করে বলেছিলেন ঘ্রানাং অর্ধং ভোজন ৷ অর্থাৎ তার রোযা অনেকটা ভঙ্গ হয়ে গেছে তার লেবুর গন্ধ শুকার জন্যে ৷কামদেবের এই ঠাট্রার কথাটি ঐ সভাসদ শাসনকর্তার কাছে নালিশ করেন ৷ শাসনকর্তা এর প্রতিশোধ নিতে এক বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন ৷ শাসকরা সর্বকালেই বোধহয় একই স্বভাবের হয় ৷ ধর্মমতকে এখানে যার যার ফেবারে কাজে লাগানো হয় ৷ এখানেও তাই হয়েছে ৷হঠাৎ করে শাসনকর্তা এক গানের অনুষ্টানের আয়োজন করেন এবং এলাকার সকল হিন্দুকেও নিমন্রণ করেন ৷ অন্যদিকে গানের আসর ঘরের পাশের রুমে গোমাংশ রান্নার ব্যবস্থা করেন যাতে গোমাংশ রান্নার গন্ধ গানের আসরের রুমে প্রকটরূপে প্রবেশ করে ৷ এতে আমন্রিত হিন্দু সদস্যরা গানের আসর ত্যাগ করে চলে যান ৷ চাকুরিরত কামদেব ও তার ভাইকে আটকে রেখে তাদের জাত মারা হয় ৷ সে থেকে ঠাকুর পরিবারের কিছু সদস্যকে বা ঐ পরিবারকেই পিরিলি ব্রাহ্মণ নামে অবিহিত করা হত এবং সমাজে তাদেরকে আলাদা চোখে দেখা হত ৷ তাই বোধহয় এই পরিবার পরবর্তীতে ব্রাহ্ম সমাজ ভূক্ত সহজে হতে পেরেছিল ৷
রাজা রামমোন রায় প্রথমে যে ধর্মমত প্রবর্তন করেছিলেন তখন তার নাম ছিল ' বেদান্ত প্রতিপাদ্য ধর্ম ' ৷
১৮৪৭ সালের ২৮ মে তত্ত্ববোধিনী সভার বার্ষিক অধিবেশনে এই নাম পরিবর্তন করা হয় এবং নতুন নাম রাখা হয় ' ব্রাহ্মধর্ম ' ৷এর পর থেকে রাজা রামমোহনের প্রবর্তিত ধর্মমতের নাম ' ব্রাহ্মধর্ম ' নামে পরিচিতি লাভ করে ৷
তখন থেকে প্রিন্স দারোকানাথ ঠাকুর এবং কবির পিতা প্রতি বছর ১১ মাঘ ঘটা করে ব্রাহ্মসমাজের বার্ষিকি অনুষ্ঠানের উদযাপন করতেন ৷মাঘমাসে এই উৎসব অনুষ্ঠুত হওয়ায় ব্রাহ্মসমাজের এ পার্বণকে মাঘোৎসব ও বলা হতো এবং এর বক্তৃতা ও বৈদিক মন্ত্রপাঠ সহ অনেক আনুষ্ঠানিকতা ও পালন করা হতো জাঁকজমক পূর্ণ এই অনুষ্ঠানে ৷
',,,
সংক্ষেপে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পারিবারিক পরিচয় :
জয়রাম ( মৃত্যু-১৭৫৭
) নামক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক উর্দ্ধতন বংশধর
ব্যক্তির ৫ সন্তানের মধ্যে একজনের নাম ছিল নীলমণি ( মৃত্যু-১৭৯১) । তার ৩ সন্তানের একজনের নাম ছিল রামমণি (১৭৫৯-১৮৩৩) ৷ রামমণির ৩ সন্তানের মধ্যের একজন ছিলেন প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর (১৭৯৪-১৮৪৬) ৷ যিনি ছিলেন কবি রবী ঠাকুরের দাদা মসাই ৷ কবির দাদা প্রিন্স
দ্বারকানাথ ঠাকুরের ৩ সন্তানের একজন ছিলেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(১৮১৭-১৯০৫ ) ৷
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হচ্ছেন
দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবিত ও মৃত ১৫ সন্তানের ১২ নম্বার সন্তান ৷ আর বর্তমান স্মিতি কথা মূলক ‘ On
the edge of Time . এইগ্রন্থটির লেখক হচ্ছেন কবি
রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৫ সন্তানের ২য় সন্তান রথীনদ্রনাথ ঠাকুর (১৮৮৮-১৯৬১) ৷ অবশ্য কবির ৪র্থ কন্যা মীরা দেবীর (১৮৯২-১৯৬৯) ২ সন্তানের মধ্যের প্রথম ছেলে
নীতীন্দ্রনাথ (১৯১১-১৯৩২)
এবং ২য় মেয়ে নন্দিতা দেবীর (১৯১৬-১৯৬৭ ) পরের আর কোনো পরবর্তী বংশধরের সঠিক তথ্য
পাওয়া যায় না ৷
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বংশধরদের কথা ;
কবির পাঁচ সন্তানের মধ্যে কন্যা বেলা , রাণী আর পূত্র শমীন্দ্র বহু আগেই মারা যান ৷ রথীন্দ্রনাথ তখনও বেঁচে ছিলেন ৷ তবে এটা নিশ্চিত হয়ে গেছিল যে তাঁর ঔরসে আর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই ৷ রথীন্দ্রনাথ নন্দিনী নামের এক কন্যা দত্তক নিয়েছিলেন ৷ এই মূল বই লেখার সময় কবির কন্যা মীরা দেবী আর মীর দেবীর স্বামী নগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় এবং তাদের পুত্র নীতীন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় ও মেয়ে নন্দিতা গঙ্গোপাধ্যায়ই তখন পর্যন্ত কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবিত বংশধর ছিলেন ৷ জার্মানিতে পড়াশুনাকালীন সময়ে নীতীন্দ্রনাথ মারা যান ৷ তার মারা যাওয়ার তারিখ ছিল ১৯৩২ সালের ৭ ই আগস্ট ৷ নন্দিতা ওরফে বুড়ির বিয়ে হয় কৃষ্ণা কৃপালনীর সঙ্গে ৷ কিন্তু এ দম্পতি নিঃসন্তান ছিলেন ৷ অন্যদিকে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পালিত কন্যা নন্দিনীও নিঃসন্তান ছিলেন ৷ ফলে ১৯৬১ সালে ছেলে রথীন্দ্রনাথ এর মৃত্যুর পর ১৯৬৭ সালে নন্দিতারও মৃত্যু হয় ৷ আর ১৯৬৯ সালের দিকে কবির একমাত্র জীবিত কন্যা মীরা দেবীর মৃত্যুর পর পৃথিবীতে বিশ্বকবির ঔরসজাত আর কোনো বংশধর জীবিত থাকল না ৷ অর্থাৎ কবি কন্যা মীরা দেবীর মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে কবির ঠাকুর পরিবারের শেষ বংশধরের ও মৃত্যু ঘটল ৷
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বংশধরদের কথা ;
কবির পাঁচ সন্তানের মধ্যে কন্যা বেলা , রাণী আর পূত্র শমীন্দ্র বহু আগেই মারা যান ৷ রথীন্দ্রনাথ তখনও বেঁচে ছিলেন ৷ তবে এটা নিশ্চিত হয়ে গেছিল যে তাঁর ঔরসে আর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই ৷ রথীন্দ্রনাথ নন্দিনী নামের এক কন্যা দত্তক নিয়েছিলেন ৷ এই মূল বই লেখার সময় কবির কন্যা মীরা দেবী আর মীর দেবীর স্বামী নগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় এবং তাদের পুত্র নীতীন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় ও মেয়ে নন্দিতা গঙ্গোপাধ্যায়ই তখন পর্যন্ত কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবিত বংশধর ছিলেন ৷ জার্মানিতে পড়াশুনাকালীন সময়ে নীতীন্দ্রনাথ মারা যান ৷ তার মারা যাওয়ার তারিখ ছিল ১৯৩২ সালের ৭ ই আগস্ট ৷ নন্দিতা ওরফে বুড়ির বিয়ে হয় কৃষ্ণা কৃপালনীর সঙ্গে ৷ কিন্তু এ দম্পতি নিঃসন্তান ছিলেন ৷ অন্যদিকে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পালিত কন্যা নন্দিনীও নিঃসন্তান ছিলেন ৷ ফলে ১৯৬১ সালে ছেলে রথীন্দ্রনাথ এর মৃত্যুর পর ১৯৬৭ সালে নন্দিতারও মৃত্যু হয় ৷ আর ১৯৬৯ সালের দিকে কবির একমাত্র জীবিত কন্যা মীরা দেবীর মৃত্যুর পর পৃথিবীতে বিশ্বকবির ঔরসজাত আর কোনো বংশধর জীবিত থাকল না ৷ অর্থাৎ কবি কন্যা মীরা দেবীর মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে কবির ঠাকুর পরিবারের শেষ বংশধরের ও মৃত্যু ঘটল ৷
রথীন্দনাথ ঠাকুরের
মূল
স্মৃতি কথামূলক বইটিতে ব্যাপকভাবে কবির জীবনের বিভিন্ন ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ
করা হয়েছে এবং অনুবাদক কবির চান্দ বাংলায় আরো সুন্দর ভাবে তার প্রকাশ করেছেন ৷ তবে
এই সংক্ষিপ্ত লেখাতে শুধু কবির জীবনের ঠুকিঠাকি কিছু ঘটনার উল্লেখ করে লেখাটির সমাপ্তি টানা হয়েছে ৷
এই বই থেকে জানা যায় যে , যে যুগে
বড়ঘরের ছেলেদের আই সি এস বা ব্যারিষ্টার হতে লেখাপড়ার জন্যে বিলাতে পাঠানো হত
, সে সময়ে কবি তাঁর পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অনেক কাটখড়া পুড়িয়ে
আমেরিকার বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় এলিনয়ে কৃষিবিদ্যা পড়তে পাঠিয়েছেন এবং সেখান থেকে কবি
পুত্র কৃষিবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রী অর্জণ করেন ৷ পরে কৃষি বিষয়ে আরো জ্ঞান অর্জনের জন্যে
তাকে লন্ডন ও জার্মান
ও প্রেরণ করা হয় ৷ শেষে কবির আমেরিকা ভ্রমনের সময় রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ও সঙ্গে নিয়ে
যান ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার পি এইচ ডি ডিগ্রী সমাপ্ত করতে ৷ অবশ্য বিশেষ কোনো
কারণে কবি পূত্রকে আমেরিকাতে ডিগ্রী শেষ হওয়ার পূর্বে কবির সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন এবং
দেশে ফিরে রথিন্দ্রনাথ ঠাকুরকে জমিদারী দেখাশুনার দায়িত্ব অর্পণ করেন ৷
ছেলেকে কবি কৃষিবিধ করে গড়ে তুলে বাংলার কৃষির এবং কৃষকের উন্নতি যে করতে ছেয়েছিলেন এতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই ৷ তাই কবি ও জমিদার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলার কৃষকে কি চোখে দেখতেন তা সহজেই অনুমান করা যায় ৷ তিনি অন্যন্য জমিদারের মত তিনি শুধু গতানুগতিক জমিদার ছিলেন না ৷ প্রজারাও তাকে ভালবাসতো এবং তাদের একজন আপন লোক ভাবতো ৷ এছাড়া সাপ্তাহে একদিন কবি পরিবারের কাজের লোকজনদের সবাইকে ছুটি দেয়ার একটি রেয়াজ কবি পরিবারে বিদ্যমান ছিল ৷ তাই কাজের মানুষের ছুটির দিনে কবি পরিবারের সদস্যরা বাসার প্রয়োজনীয় সব কাজই ভাগাভাগি করে সবাই মিলেমিসে করতে হত ৷যা তখনকার দিনে কোনো জমিদার পরিবারে করা হত না ৷
ছেলেকে কবি কৃষিবিধ করে গড়ে তুলে বাংলার কৃষির এবং কৃষকের উন্নতি যে করতে ছেয়েছিলেন এতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই ৷ তাই কবি ও জমিদার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলার কৃষকে কি চোখে দেখতেন তা সহজেই অনুমান করা যায় ৷ তিনি অন্যন্য জমিদারের মত তিনি শুধু গতানুগতিক জমিদার ছিলেন না ৷ প্রজারাও তাকে ভালবাসতো এবং তাদের একজন আপন লোক ভাবতো ৷ এছাড়া সাপ্তাহে একদিন কবি পরিবারের কাজের লোকজনদের সবাইকে ছুটি দেয়ার একটি রেয়াজ কবি পরিবারে বিদ্যমান ছিল ৷ তাই কাজের মানুষের ছুটির দিনে কবি পরিবারের সদস্যরা বাসার প্রয়োজনীয় সব কাজই ভাগাভাগি করে সবাই মিলেমিসে করতে হত ৷যা তখনকার দিনে কোনো জমিদার পরিবারে করা হত না ৷
তখনও বাংলায় বিধবা বিয়ের তেমন প্রচলন আরম্ভ হয় নাই । রাজা রামমোহন রায় ও বিদ্যাসাগর
জগদীশ চন্দ্রের প্রচারেই তখন বিধবা বিবাহ সীমাবদ্ধ ছিল ৷ ঠিক তখনই ১৯১০ সালে কবি রবীন্দ্রনাথ
তাঁর পূত্র রথীনদ্রনাথকে তাদের পারিবারিক এক বিধবা আত্মিয়া প্রতিমা দিবীর সঙ্গে বিয়ের
ব্যবস্থা করেন ৷ এর আগে আর একরার আরেক বিধবার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ছেলেকে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন
৷কিন্তু দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের বিরুদিতার কারণে সে বিয়ে সম্ভব হয় নাই ৷ তবে এই
বিয়েতে মা মৃণালিনি দেবী বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন ৷ অর্থাৎ কবি শুধু কথা বা প্রচারে
সীমাবদ্ধ ছিলেন না ৷ প্রয়োজনে তার বাস্তব রূপও দিয়েছেন ৷এ ক্ষেত্রে তাই দেখা যায় ৷
রথীন্দ্রনাথের বোনদের সংসার তেমন সুখের
হয়নি ৷ তাই বোধহয় কবি একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চান নি ছেলের বিবাহিত জীবনে ৷তাই পূত্রের বিয়ের ৪ মাসের মধ্যেই পূত্রকে
তার স্ত্রী প্রতিমা দেবীর সঙ্গে কি কি ব্যবহার করা উচিত কবি এক পত্রে তার বিস্তারিত
বিবরণ দেন ৷কবি পূত্রের চিঠিতে উল্লেখ করেন যে , রথীন্দ্রনাথ
যেন তার পূত্রবধু প্রতিমাকে কেবল গৃহিণী এবং ভোগের সঙ্গিনী হিসেবে না দেখে তাঁর (প্রতিমার)
চিত্তকে জাগিয়ে তোলার ও উপদেশ দেন ৷কবি তাঁর চিঠিতে লিখেন যে , প্রতিমাকে মানুষ হিসেবে সামগ্রিকভাবে
দেখতে হবে ৷ প্রতিমার মধ্যে যে বিশেষ শক্তি আছে তার কোনোটা যদি অনাদরের কারণে নষ্ট
হয় তাহলে ওর সমস্ত স্বভাবগত প্রকৃতিতে আঘাত লাগবে ৷ এই কথা ছেলেকে কবি স্মরণ করিয়ে
দিয়ে লিখেন যে , কেবল মাত্র নিজের রুচি , ইচ্ছা ও প্রয়োজনের দিক থেকে প্রতিমাকে দেখলে হবে
না ৷ওর নিজের দিক থেকে ওকে সম্পূর্ণ করে তুলতে হব৷ আর এই দায়িত্ব কবি তাঁর ছেলেকেই
দিয়েছেন ঐ পত্রে ৷
অন্যদিকে ১৯৪১ সালে কবি প্রতিমাকে এক চিঠিতে লিখেন – ‘ তোমাদের পরস্পরের জীবন
যাতে সম্পূর্ণ এক হয়ে ওঠে সে দিকে বিশেষ চেষ্টা রেখো ৷মানুষের হৃদয়েই যথার্থ মিলন ঘটে
, সে মিলন কোনোদিন শেষ হয় না ৷ প্রতিদিন তার নিত্য নুতন সাধনা ঈশ্বর তোমাদের চিত্তে
সেই পবিত্র সাধনাকে গভীর করে জাগ্রত করে রেখে দিন ৷এই আমি কামনা করি’ ৷
অনেকে ভেবে থাকেন যে ইরেজি গীতাঞ্জলি হয়ত বাংলা গীতাঞ্জলিরই হুবুহু অনুবাদ ৷ আসলে তা নয় ৷ কবি তাঁর দশটা বই থেকে কবিতা বাছাই করে অনুবাদ করেছিলেন ৷ বাংলা গীতাঞ্জলিতে মোট গান আর কবিতার সংখ্যা ১৫৭ টি আর ইংরেজি গীতাঞ্জলিতে ১১৩ টি ৷ এর মধ্যে বাংলা গীতাঞ্জলি থেকে নেয়া হয়েছে ৫৩টি , গীতিমাল্য থেকে ১৬টি , নৈবেদ্য থেকে ১৫টি
খেয়া থেকে ১১টি , শিশু থেকে ৩টি ,কল্পনা থেকে ১টি , চৈতালী থেকে একটি , উৎসর্গ থেকে ১টি , স্মরণ থেকে একটি , এবং অচলায়তন থেকে ১টি ৷ কবি নিজেই শিলাইদহে বাংলা কবিতাগুলোর ইংরেজি অনুবাদ করেন ৷
১৯১২ সালের ১ নভেম্বর ইন্ডিয়া সোসাইটি গীতাঞ্জলির ৭৫০ কপির সংস্করণ করে ৷ ১৯১৩ সালের মার্চ মাসে ম্যাকমিলান অ্যান্ড কোম্পানি এর একটি নতুন সংস্করণ বের করে ৷ তখন লন্ডনে কবি এতটাই পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করেন যে পরবর্তী আট মাসে এটি ১০ বার পুনর্মুদ্রিত করতে হয়েছে ৷
নিম্নে ১৯১২ সালে প্রকাশিত ইংরেজি গীতাঞ্জলির ৭০০ কপির প্রচ্ছদ হুবুহু তুলে দেয়া হল আগ্রহী পাঠকের জন্য ৷
GITANJALI
( SONG OFFERINGS)
BY
RABINDRA NATH TAGORE
A collection of prose Translation made by the Author from the Original Bengali .
with an introduction by W . B . YEATS
LONDON
printed at the chiswick press for THE INDIA SOCIETY .
1912
অনেকে ভেবে থাকেন যে ইরেজি গীতাঞ্জলি হয়ত বাংলা গীতাঞ্জলিরই হুবুহু অনুবাদ ৷ আসলে তা নয় ৷ কবি তাঁর দশটা বই থেকে কবিতা বাছাই করে অনুবাদ করেছিলেন ৷ বাংলা গীতাঞ্জলিতে মোট গান আর কবিতার সংখ্যা ১৫৭ টি আর ইংরেজি গীতাঞ্জলিতে ১১৩ টি ৷ এর মধ্যে বাংলা গীতাঞ্জলি থেকে নেয়া হয়েছে ৫৩টি , গীতিমাল্য থেকে ১৬টি , নৈবেদ্য থেকে ১৫টি
খেয়া থেকে ১১টি , শিশু থেকে ৩টি ,কল্পনা থেকে ১টি , চৈতালী থেকে একটি , উৎসর্গ থেকে ১টি , স্মরণ থেকে একটি , এবং অচলায়তন থেকে ১টি ৷ কবি নিজেই শিলাইদহে বাংলা কবিতাগুলোর ইংরেজি অনুবাদ করেন ৷
১৯১২ সালের ১ নভেম্বর ইন্ডিয়া সোসাইটি গীতাঞ্জলির ৭৫০ কপির সংস্করণ করে ৷ ১৯১৩ সালের মার্চ মাসে ম্যাকমিলান অ্যান্ড কোম্পানি এর একটি নতুন সংস্করণ বের করে ৷ তখন লন্ডনে কবি এতটাই পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করেন যে পরবর্তী আট মাসে এটি ১০ বার পুনর্মুদ্রিত করতে হয়েছে ৷
নিম্নে ১৯১২ সালে প্রকাশিত ইংরেজি গীতাঞ্জলির ৭০০ কপির প্রচ্ছদ হুবুহু তুলে দেয়া হল আগ্রহী পাঠকের জন্য ৷
GITANJALI
( SONG OFFERINGS)
BY
RABINDRA NATH TAGORE
A collection of prose Translation made by the Author from the Original Bengali .
with an introduction by W . B . YEATS
LONDON
printed at the chiswick press for THE INDIA SOCIETY .
1912
( প্রথম পর্বের লেখা সমাপ্ত )
সৌজন্য ;- ( অনুবাদ
, কবির চান্দ , যার অনুবাদ থেকে এই লেখাটি তৈরি করা হয়েছে ৷)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন