হাতের রেখায় জীবন-দর্শন ৷



      
                                    গল্প  নয়  সত্যি ৷
                                    হাতের  রেখায়  জীবন-দর্শন ৷

            আজ  থেকে  প্রায়  ৫০/৬০  বছর  আগে  এই  অঞ্চলের  লোকদের  মধ্যে  নিজদের  ভবিষ্যৎ  জীবন  সন্বন্ধে  জ্ঞান  লাভ  করার  ব্যাপারে  একটা  প্রবল  আগ্রহ  পরিলক্ষিত  হত ৷ তখন  জ্যোতিষী  ও  হস্তরেখাবিদদের  সমাজে  অনেক  কদর  ছিল ৷ তাই  অনেক  জ্যোতিষী ও হস্তরেখাবিদ  এই মাধ্যমকে  পেশা  হিসেবে  গ্রহণ     করতেন ৷ 

        তখন  মানব-জীবনের  ভবিষ্যৎ  সন্বন্ধে  জ্ঞানলাভ  করার  অনেক  পদ্ধতিও  প্রচলিত হয়ে  যায় ৷ তাই  জ্যোতিষশাস্ত্রের  হাতের  রেখায় ভবিষ্যৎ নির্দ্ধারণ  ছাড়াও  সামুদ্রিক  বিদ্যা , Palmistry , Phrenology , nummerology এবং  জন্মতারিখ  থেকে  রাশি  বের করে  মানুষের  ভবিষ্যৎ  গণনা  করা   হত ৷ এটা অবশ্য কুষ্ঠী বা ঠিকুজী  নির্ণয় পদ্ধতি থেকে  আলাদা  ছিল ৷   

        তখনকার  সময়ে  জ্যোতিষী  বিষয় নিয়ে  কিরো  নামক  একজন  লেখকের  বই  ঘরে  ঘরে শোভা পেত ৷ অবশ্য বর্তমানে  মানুষের  জীবনে  অনেক  সুযোগ  সুবিধার  বিস্তার  ঘটেছে , তাই  এখন আর পূর্বের  মত  জ্যতিষশাস্ত্রের  জনপ্রীয়তা  নেই, এর প্রয়োজনীয়তা  ও বর্তমানে শেষ হয়ে  গেছে  ৷ তবে  এখনও  রাশি  গণনা পদ্ধতি  প্রচলিত  আছে ৷ আবার  কেউ  কেউ নিজেদের রাশির মন্দ প্রভাব থেকে  মুক্তি লাভের  উদ্দেশ্যে চটকধার   নামের  পাথর হাতের আঙ্গুলে  ধারণ  করে থাকেন ৷


        তবে  যারা  তখনকার  দিনে  এইসব  পদ্ধতির  ভবিষ্যৎ  গণনায়  বিশ্বাস  করতেন  না , তারা বাস্তবতার  আলোকে  নিজের  ভবিষ্যৎ নিজেই  গড়ে  তুলতে ডেল কার্ণেগী নামক  একজন  লেখকের  ‘বড় যদি হতে চান’ সিরিজের  বইগুলা  আগ্রহ নিয়ে  পড়তেন ৷ 

       তবে  হস্তরেখায়  জীবন-দর্শন  বা  হাতের  মধ্যে কি রেখা  থাকলে ভবিষ্যৎ  কেমন হবে তা জেনে নেয়ার পর  এই ব্যাপারটি নিয়ে কেউ তেমন আর আগ্রহ  দেখাতেন না ৷ 

       তরে এর একটি ব্যতিক্রম  জানা  গেল সদ্য ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত মাননীয় অর্থমন্ত্রীর  একটা আত্মজীবনীমূলক লেখা থেকে ৷ ছাত্রকালিন সময়ে তার বিদেশ ভ্রমনের  প্রবল  ইচ্ছা  ছিল ৷ কিত্তু তার হাতে নাকি বিদেশ ভ্রমনের রেখাটি  ছিল না ৷ তাই একপর্যায়ে ছুরি –চাকুর ব্যবহার  করে তিনি নিজেই  তার  হাতে বিদেশ ভ্রমনের একটি রেখা তৈরি করে ফেলছিলেন , যদিও এর স্থায়িত্ব  বেশীদিন  ছিল না ৷ তার লেখা থেকে  বাকিটুকু  জানা যাক ৷

     ‘   কোন কোন বয়সে হাত দেখানো এবং হাতের রেখা পড়া নেশার মতো হয়ে যায়। ষোলো বছর থেকে আমার এই নেশা পেয়ে বসে। একজন জ্যোতিষীকে ডেকে আমি আমার হস্তরেখা বিশ্লেষণের ব্যবস্থা করলাম। জ্যোতিষীর কাছ থেকে পামিস্ট্রির ওপর অনেক বইও সংগ্রহ করলাম। জ্যোতিষী আমার একটি ঠিকুজী প্রস্তুত করে দিলেন এবং বললেন যে, আমার হস্তরেখায় নৌভ্রমণ নেই অর্থাৎ আমার বিদেশ যাত্রা নেই। আমি তখন আমার হস্তরেখা পরিবর্তন করার জন্য ছুরি দিয়ে কেটে একটি নৌযাত্রার রেখা বানালাম। কিন্তু সেটা খুব বেশিদিন স্থায়ী হলো না। আমার মনে হলো, নিউইয়র্কে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যাওয়ার সুযোগ এই হস্তরেখার কারণে আমার হয়নি।‘                     

মন্তব্যসমূহ