রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আমার সোনার বাংলা গানটির রচনার পটভূমি প্রসঙ্গে কিছু কাহিনী ; (সূত্র;সচলায়তনে কুলদা রায় ও এমএমআর জালাল এর একটি লেখার অপরিবর্তিত সংক্ষিপ্ত রূপ )


      
                       আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি

    

           আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত।      রচনা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

                  গগনে গগনে আপনার মনে কী খেলা তব।
                তুমি কত বেশে নিমেষে নিমেষে নিতুই নব।।
---------------------------------------
            এই  গানটির  রচনাকারীর  নাম গগন দাস।   তার  বাড়ি ছিল কুষ্টিয়ার শিলাইদহে। আড়পাড়া গ্রামের এক কায়স্থ পরিবারে জন্ম উনিশ শতকের মাঝামাঝি  তিনি  জন্ম  গ্রহন  করেন

                গবেষক প্রফেসর ড. আবুল আহ্সান চৌধুরী রবীন্দ্র উত্তরসূরী গ্রন্থে জানাচ্ছেন-- দুই যুগ আগেও গগনের ভিটার অস্তিত্ব ও ফলের বাগানের সাদৃশ্য ছিল। লোকমুখে জানতে পারা যায় যে, গগন হরকরার একটি বড় ফলের বাগান ছিল। উল্লেখ্য যে, গগনের বাস্তুভিটায় আসামদ্দি নামক একজন কৃষক বাড়ি করে থাকতেন এবং সেই বাড়িটি আজও দাসের ভিটানামে পরিচিত সে সময় দাসেরা মণ্ডল নামেও পরিচিত ছিল।

             শিলাইদহের শচীন্দ্রনাথ অধিকারী লিখেছেন-- গগন সামান্য শিক্ষা-দীক্ষায় পারদর্শী ছিলেন এবং তার ফলশ্রুতিতেই তৎকালীন শিলাইদহের ডাক ঘরের ডাক হরকরার চাকুরি পেয়েছিলেন। গাঁয়ে গাঁয়ে চিঠি বিলি করতেন। আর করতেন গান। তিনি শিলাইদহে সখীসংবাদেরগানে এমন করুণ আখর লাগিয়ে গাইতেন যে, শ্রোতারা মুগ্ধ হয়ে সে গান শুনতেন। গগন সম্পর্কে পণ্ডিত ক্ষিতি মোহন সেন শাস্ত্রি বলেছেন: লালন-এর শীর্ষ ধারার একজন ছিলেন রবীন্দ্রনাথের শিলাইদহের ডাক হরকরাযাঁর নাম গগন। রবীন্দ্রনাথ গগনকে সবার মাঝে বিভিন্ন ভাবে পরিচিত ও বিখ্যাত করে যথাসাধ্য মূল্যায়ন করেছেন।
             রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৮৯ থেকে ১৯০১ সাল বাংলাদেশের শিলাইদহ ও শাহজাদপুরে জমিদারী দেখাশুনা করতে নিয়মিত যেতেন। তখন শিলাইদহে তাঁর সঙ্গে গগনের পরিচয় হয়েছিল। গগণ তাকে গান গেয়ে শোনাতেন।

                শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে গগন হরকরা, গোঁসাই গোপাল, সর্বক্ষেপী বোষ্টমী, গোঁসাই রামলাল এবং লালনের অজস্র শিষ্য, প্র-শিষ্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল। তিনি বাউল-ফকিরদের গান শুনে আপ্লুত নিজে শিলাইদহ ও ছেঁউড়িয়া অঞ্চল হতে অনেক বাউল গান সংগ্রহ ও প্রচার করেছেন। তারপরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সেগুলো প্রচার করার ব্যবস্থা করেন। উদ্দেশ্য একটাই-যাতে- সুধী সমাজের মধ্যে বাংলাদেশের বাউল গান সম্পর্কে একটা ধারণা জন্মে।

              অধ্যাপক মনসুরউদ্দিনের হারামণির গ্রন্থের ভূমিকায় রবীন্দ্রনাথ লিখছেন, শিলাইদহে যখন ছিলাম, বাউল দলের সঙ্গে আমার সর্বদাই দেখাসাক্ষাৎ ও আলাপ-আলোচনা হত। আমার অনেক গানেই আমি বাউলের সুর গ্রহণ করেছি এবং অনেক গানে অন্য রাগরাগিণীর সঙ্গে আমার জ্ঞাত বা অজ্ঞাত-সারে বাউল সুরের মিলন ঘটেছে। এর থেকে বোঝা যাবে বাউলের সুর ও বাণী কোন্‌-এক সময়ে আমার মনের মধ্যে সহজ হয়ে মিশে গেছে। আমার মনে আছে, তখন আমার নবীন বয়স, শিলাইদহ অঞ্চলেরই এক বাউল কলকাতায় একতারা বাজিয়ে গেয়েছিল

         কোথায় পাব তারে
          আমার মনের মানুষ যে রে!
          হারায়ে সেই মানুষে তার উদ্দেশে
          দেশ-বিদেশে বেড়াই ঘুরে

         গগন হরকাকরার গানটির পূর্ণরূপ'
--------------------------------------------
          আমি কোথায় পাব তারে আমার মনের মানুষ যে রে
          হারায়ে সেই মানুষে তার উদ্দেশে দেশ বিদেশে বেড়াই ঘুরে।
          লাগি সেই হৃদয়শশী সদা প্রাণ হয় উদাসী
          পেলে মন হত খুশি দেখতাম নয়ন ভরে।
          আমি প্রেমানলে মরছি জ্বলে নিভাই অনল কেমন করে
          মরি হায় হায় রে
          ও তার বিচ্ছেদে প্রাণ কেমন করে
           ওরে দেখ না তোরা হৃদয় চিরে।
            দিব তার তুলনা কি যার প্রেমে জগৎ সুখী
            হেরিলে জুড়ায় আঁখি সামান্যে কি দেখিতে পারে
            তারে যে দেখেছে সেই মজেছে ছাই দিয়ে সংসারে।
             মরি হায় হায় রে
             ও সে না জানি কি কুহক জানে
             অলক্ষ্যে মন চুরি করে।
             কুল মান সব গেল রে তবু না পেলাম তারে
             প্রেমের লেশ নাই অন্তরে
             তাইতে মোরে দেয় না দেখা সে রে।
              ও তার বসত কোথায় না জেনে তায় গগন ভেবে মরে
              মরি হায় হায় রে
               ও সে মানুষের উদ্দিশ যদি জানুস কৃপা করে
               আমার সুহৃদ হয়ে ব্যথায় ব্যথিত।

                       রবীন্দ্রনাথ গগন হরকরার এই কোথায় পাব তারে আমার মনে মানুষ যে রেগানটি বিষয়ে আরও লিখেছেন,
                       কথা নিতান্ত সহজ, কিন্তু সুরের যোগে এর অর্থ অপূর্ব জ্যোতিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। এই কথাটিই উপনিষদের ভাষায় শোনা গিয়েছে : তং বেদ্যং পুরুষং বেদ মা বো মৃত্যুঃ পরিব্যথাঃ। যাঁকে জানবার সেই পুরুষকেই জানো, নইলে যে মরণবেদনা। অপণ্ডিতের মুখে এই কথাটিই শুনলুম তার গেঁয়ো সুরে সহজ ভাষায়যাঁকে সকলের চেয়ে জানবার তাঁকেই সকলের চেয়ে না-জানবার বেদনাঅন্ধকারে মাকে দেখতে পাচ্ছে না যে শিশু তারই কান্নার সুরতার কণ্ঠে বেজে উঠেছে। অন্তরতর যদয়মাত্মাউপনিষদের এই বাণী এদের মুখে যখন মনের মানুষবলে শুনলুম, আমার মনে বড়ো বিস্ময় লেগেছিল। এর অনেক কাল পরে ক্ষিতিমোহন সেন মহাশয়ের অমূল্য সঞ্চয়ের থেকে এমন বাউলের গান শুনেছি, ভাষার সরলতায়, ভাবের গভীরতায়, সুরের দরদে যার তুলনা মেলে নাতাতে যেমন জ্ঞানের তত্ত্ব তেমনি কাব্যরচনা, তেমনি ভক্তির রস মিশেছে। লোকসাহিত্যে এমন অপূর্বতা আর কোথাও পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস করি নে।

               রবীন্দ্র উত্তরসূরিতে প্রফেসর ড. আবুল আহ্সান চৌধুরী লিখেছেন, রবীন্দ্রনাথের ভাগ্নী সরলা দেবী (১৮৭২-১৯৪৫). ‘‘ভারতী’’ পত্রিকায় (ভাদ্র-১৩০২) গগনের কয়েকটি গান সংগ্রহ ও প্রকাশ করেছিলেন। সরলা দেবী উক্ত প্রবন্ধের শেষ অংশে আবেদন করেছিলেন যে, ‘‘প্রেমিক গগনের ভক্ত জীবনীর বিবরণ সংগ্রহ করিয়া কেহ ভারতীপত্রিকায় প্রকাশার্থে পাঠাইয়া দিলে আমাদের কাছে বিশেষ কৃতজ্ঞতা ভাজন হইবেন।রবীন্দ্রনাথ তাঁর বিভিন্ন বক্তৃতা-প্রবন্ধে গগনের গানের কথা ও গগনের নাম উল্লেখ করেছেন একাধিকবার। রবীন্দ্র সংগৃহীত গগন হরকরার আমি কোথায় পাব তারে, আমার মনের মানুষ যে রেএই গানটি দিয়েই রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত প্রবাসীপত্রিকায় রবীন্দ্রনাথের পরামর্শে হারামণিবিভাগের (বৈশাখ- ১৩২২) সূচনা হয়েছিল। শিলাইদহে এসে রবীন্দ্রনাথ যেমন সাঁইজি লালন কর্তৃক প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং লালনের পরেই প্রভাবিত হয়েছিলেন গগন হরকরা কর্তৃক। তাঁর মনে ধর্ম সম্পর্কে যে নতুন ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল, তারই সমর্থন তিনি খুঁজে পাচ্ছিলেন বাউলদের গানে। এমনকি আজীবন লালিত ঔপনিষদিক দর্শনের সঙ্গেও তিনি এ সময় থেকে বাউলদের একটা সমন্বয় ঘটাতে চেষ্টা করেছিলেন। যে সত্যের বাণী তিনি উপনিষদের শ্লোকে শুনতে পেয়েছিলেন, তার প্রতিধ্বনি শুনতে পেলেন বাউল গানে। গগনের আমি কোথায় পাব তারেএই গানের সুরে রবীন্দ্রনাথ রচনা করেছিলেন ‘‘আমার সোনার বাংলা/ আমি তোমায় ভালোবাসি’’। সরলা দেবী ইতিপূর্বে শতগান (বৈশাখ ১৩০৭) এ মূল গানটির স্বরলিপি প্রকাশ করেছিলেন।

           রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন--
----------------------
                  একবার যদি আমাদের বাউলের সুরগুলি আলোচনা করিয়া দেখি তবে দেখিতে পাইব যে, তাহাতে আমাদের সংগীতের মূল আদর্শটাও বজায় আছে, অথচ সেই সুরগুলা স্বাধীন। ক্ষণে ক্ষণে এ রাগিণী, ও রাগিণীর আভাস পাই, কিন্তু ধরিতে পারা যায় না। অনেক কীর্তন ও বাউলের সুর বৈঠকী গানের একেবারে গা ঘেঁষিয়া গিয়াও তাহাকে স্পর্শ করে না। ওস্তাদের আইন অনুসারে এটা অপরাধ। কিন্তু বাউলের সুর যে একঘরে, রাগরাগিণী যতই চোখ রাঙাক সে কিসের কেয়ার করে! এই সুরগুলিকে কোনো রাগকৌলীন্যের জাতের কোঠায় ফেলা যায় না বটে, তবু এদের জাতির পরিচয় সম্বন্ধে ভুল হয় নাস্পষ্ট বোঝা যায় এ আমাদের দেশেরই সুর, বিলিতি সুর নয়।

                   ১৯১৫ সালে রবীন্দ্রনাথ ফালগুনী নাটক রচনা করে সেখানে অন্ধ বাউল চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯১৬ সালে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রবীন্দ্রনাথের একটি ছবি আঁকেন। ছবিটিতে দেখা যায় বাউল রবীন্দ্রনাথ একতারা হাতে বিভোর হয়ে নাচছেন।
দুই.
                       আমার সোনার বাংলা
           আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি গানটি ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের সময় গীত হয়। প্রশান্ত পাল রবিজীবনী গ্রন্থে লিখেছেন, ইতিমধ্যে রবীন্দ্রনাথ-রচিত নূতন স্বদেশী গান আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’ (দ্রষ্টব্য গীত ১।২৪৩; স্ব ৪৬) নিয়ে কলকাতা উত্তাল হয়ে পড়েছে। গানটির পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায়নি। রচনার তারিখও জানা নেই। সত্যেন রায় লিখেছেন: বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে ৭ আগস্ট (১৯০৫ খৃ:) কলিকাতার টাউন হলে যে সভা হয়েছিল, সেই উপলক্ষ্যেরবীন্দ্রনাথ নূতন সঙ্গীত আমার সোনার বাংলাবাউল সুরে গীত হয়েছিল। ১৯০৫ খৃ: ৭ই সেপ্টেম্বর (১৩১২ সনের ২২শে ভাদ্র). তারিখের সঞ্জীবনী পত্রিকায় এই গানটি রবীন্দ্রনাথের স্বাক্ষরে প্রথম প্রকাশিত হয়। সঞ্জীবনীর উক্ত সংখ্যাটি দেখার আমরা সুযোগ পাইনি, গানটি রবীন্দ্রনাথ সম্পাদিত আশ্বিন-সংখ্যা বঙ্গদর্শন-এ (পৃষ্ঠা ২৪৭-৪৮) মুদ্রিত হয়।

               রবীন্দ্রনাথের আমার সোনার বাংলা গানটির পূর্ণরূপ
-----------------------------------------------
         আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
         চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি।
         ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে,
         মরি হায়, হায় রে
         ও মা, অঘ্রাণে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি।
         কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো
         কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে।
         মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো,
          মরি হায়, হায় রে
          মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি।
          তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিল রে,
          তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি।
          তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে,
          মরি হায়, হায় রে
          তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি।
          ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে,
          সারাদিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে,
           তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে,
            মরি হায়, হায় রে
             ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, তোমার রাখাল তোমার চাষি।
              ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে
              দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে।
               ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে,
                         মরি হায়, হায় রে
            আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ বলে গলার ফাঁসি।(ডাউনলোড লিংক

               ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে পূর্ব বঙ্গের মানুষ তাদের আত্মপরিচয় খুঁজে পান। সে সময়ে নতুন করে বাঙালির ভাবসম্পদ পূর্ববঙ্গের মানুষের জীবনানুসঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। সে সময় থেকেই রবীন্দ্রনাথ বাঙালির চলার পথের সঙ্গী। আইয়ুব খানের কঠিন মার্শাল লয়ের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানে সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ হয়। ফলে তখন সারাদেশে সাংস্কৃতিক কর্মসূচির মাধ্যমেই বাঙালির আন্দোলন-সংগ্রা্মের পরম্পরাটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি গানটি তখন থেকেই মানুষের মুখে মুখে ফিরতে শুরু করে। চলচ্চিত্রকার শহীদ জহির রায়হান ১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তার বিখ্যাত 'জীবন থেকে নেওয়া' কাহিনীচিত্রে এই গানের চলচ্চিত্রায়ন করেন।
                       ১৯৭১ সালের ১ মার্চ গঠিত হয় স্বাধীন বাংলার কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদ। পরে ৩ মার্চ তারিখে পল্টন ময়দানে ঘোষিত ইশতেহারে এই গানকে জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিব নগরে স্বাধীন বাংলাদেশের সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে এই গান প্রথম জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে গাওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গানটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে নিয়মিত পরিবেশিত হতো। স্বাধীনতার পর সাংবিধানিকভাবে .(অনুচ্ছেদ ৪.১). আমার সোনার বাংলা’ .গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত রূপে ঘোষিত হয়। গানের প্রথম ১০ লাইন কন্ঠসঙ্গীত এবং প্রথম ৪ লাইন যন্ত্রসঙ্গীত হিসেবে পরিবেশনের বিধান রাখা হয়েছে। জাতীয় সঙ্গীতের সিগনেচার টিউন তৈরী করেন প্রয়াত সুরকার সমর দাস।


মন্তব্যসমূহ