আদম বা ইভ নয় ! মানব
প্রজাতির আদি মাতা নাকি
এক এপি (Ape )নারীর দুই কন্যা সন্তানের
একজন !
মাত্র ৬ মিলিয়ন বছর আগে নাকি কোনো এক নারী এপির (Ape) দু’টো কন্যাসন্তান জন্মেছিল ; যাদের একজন পরিণত হয়েছিল সকল শিম্পাঞ্জীর পূর্ব সূরিতে , আর অন্যজন হলো আমাদের সব মানুষের আদি মাতামহ !
latest news added.....for newly discovered HOMO NALEDI A supposed new species of human with an exceptionally small brain and an unusual combination of both primitive and more modern human-like features has been discovered in a remote South African cave chamber, according to research published in the journal eLIFE.
Named Homo naledi, the undated new
species is represented by more than 1,500 fossils that belonged to at least 15
individuals.
Estimates
reveal that their brains were comparable in size to those of some of the
world’s first known humans, australopithecines,
as well as those of today’s gorillas, Chris Stringer of the Natural History
Museum in London, who did not directly work on the project, told Discovery News.
"The
foot seems structurally and functionally very human, thus implying a human-like
gait," Stringer said.
He said the
teeth and other features also that this human was a dexterous omnivore that
must have hunted and eaten at least some meat.
Berger and
his team conclude that Homo
naledi's curved fingers, shoulder, trunk and hips are, like its brain, more
primitive. The wrist, hands, legs and feet, however, are similar to those of
Neanderthals and our own species.
unusual combination of both primitive
and more modern human-like features has been discovered in a remote South
African cave chamber, according to research publ A supposed new species of human with an
exceptionally small brain and an ished in the journal eLIFE.
Estimates
reveal that their brains were comparable in size to those of some of the
world’s first known humans, australopithecines,
as well as those of today’s gorillas, Chris Stringer of the Natural History
Museum in London, who did not directly work on the project, told Discovery News.
( SOURCE ;-Internate
পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রমতে আজ থেকে প্রায় ১৩.৫ বিলিয়ন বছর আগে , প্রকৃতির মহাজগতের এক ক্রিয়াকাণ্ডে বিগ ব্যাং নামক এক মহাজাগতিক ঘটনা ঘটে ৷ যার ফলে জন্ম নেয় - বস্তু , শক্তি , সময় এবং স্থানের ৷
বিগ ব্যাং সংঘটিত হওয়ার প্রায় তিন লক্ষ বছর পরে , প্রাকৃতিক ভাবে বস্তু ও শক্তির পারস্পরিক মিথষ্ক্রিয়ার ফলে পরমাণু নামক একটি জটিল কাঠামো তৈরি হতে থাকে বস্ত্তু জগতে ; এই পরমাণুর কিছু পরিমান পরবর্তীতে প্রকৃতিগতভাবে একত্রিত হয়ে অণুতে পরিণত হয় । আর এই পরমাণু ও রূপান্তরিত অণু এরমধ্যে একটি মিথস্ক্রিয়া
ঘটেছে ৷ এই পারস্পরিকের মধ্যের
সংঘটিত মিথষ্ক্রিয়াকে বিজ্ঞানীরা পরবর্তীকালে
রসায়নিক
ক্রিয়া হিসেবে অভিহিত
করেছেন ৷ এই রাসায়ন বিদ্যার
ক্রিয়া প্রয়োগ করে এবং এর
বৈজ্ঞানিক উপায়ে আরো কিছু বিচার
বিশ্লেষণ
থেকে বৈজ্ঞানিকেরা অবগত হয়েছেন যে ,
প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন বছর পূর্বে , পৃথিবী নামক গ্রহে , কিছু নির্দিষ্ট অণুর বিক্রিয়া ঘটে ৷ যার ফলে কিছু বৃহৎ ও জটিল কাঠামো গঠিত হয় এই মহাজাগতিক
বিশ্বে ৷ এই জটিল কাঠামো থেকেই জন্ম নিয়েছে জীবের প্রাণের । এই প্রাণ ও জীবের জন্ম নিয়ে বিশ্লেষণকারী বিদ্যার
নাম দেয়া হয়েছে জীববিদ্যা । জীববিজ্ঞানিদের গবেষণায়
জানা গেছে যে , প্রায়
৭০,০০০ বছর আগে , হোমো সেপিয়েন্স নামক একটি প্রজাতি মহাজগতে এক বিস্তৃত সামাজিক কাঠামো গড়ে তুলতে শুরু করেছিল ; যে সামাজিক
কাঠামো পরবর্তীকালে পরিচিতি
পেয়েছে সংস্কৃতি হিসেবে । আদি মানব সমাজের
সেই সামাজিক সংস্কৃতির ইতিহাসের আদিপর্বের ক্রমবিকাশের
ধারা থেকেই সৃষ্টি
হয়েছে বর্তমান সভ্য মানুষের এই প্রচলিত
সংস্কৃতির ধারার
।
গবেষক বিজ্ঞানিকরা তাদের গবেষণায়
জানতে
পেরেছেন যে , তিনটি গুরুত্বপূর্ণ আদি বিপ্লব যা ইতিহাসের আদি গতিপথকে বর্তমানের আকারে রূপান্তরিত করেছে
৷ এই তিনটি বিপ্লব হচ্ছে -
(১) বৌদ্ধিক বিপ্লব ; প্রায় ৭০ হাজার বছর আগে আদি মানুষের বৌদ্ধিক বিপ্লবের ফলে আধুনিক মানব-ইতিহাসের সূচনা হয়েছে বলে বিজ্ঞানিরা
বিশ্বাস করেন ৷
(২) কৃষিজ বিপ্লব ; কৃষিজ বিপ্লবের
শুরু হয়েছিল ১২,০০০ বছর পূর্বে বলে বৈজ্ঞানীকেরা ধারণা করেন
৷ যা আদি সমাজকে বর্তমান
সভ্য সমাজে রূপান্তরিত
করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করেছে ৷
(৩) বৈজ্ঞানিক বিপ্লব ; আর সব শেষে এই সমাজকে আধুনিক
ও সভ্য সমাজে পরিণত করেছে বর্তমান
বৈজ্ঞানিক বিপ্লব ৷ যা ঘটেছে
মাত্র ৫০০ বছর আগে ৷
ঐ বিপ্লবিক ধারাই ক্রমান্নয়ে
একসময়ে হয়তো টেনে আনতে পারে বর্তমান ইতিহাসের সমাপ্তি কিংবা জন্ম দিতে পারে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক ধারার , ভিন্ন এক জগতের ৷
আলোচ্য এই তিনটি বিপ্লব কিংবা আন্দোলন কীভাবে মনুষ্য প্রজাতি এবং তার সঙ্গী অন্য জীবজগতকে প্রভাবিত করেছে- তা নিয়েই এখনও চলেছে বৈজ্ঞানিক
গবেষণা এবং বিশ্লেষণ ৷ এরই ধারাবাহিকতায়
জানা গেছে যে ,
ইতিহাসের সূচনালগ্নের বহু আগে থেকেই মানুষ পৃথিবীতে ছিল। সর্বপ্রথম মনুষ্য আকারের প্রাণীর আবির্ভাব ঘটে প্রায় ২.৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে। কিন্তু আদি মানবেরা অগণিত প্রজন্ম ধরে হাজারো প্রজাতির অন্যান্য জীবের সাথে নিজেদের আবাস ভাগাভাগি করে নিয়ে বসবাস করেছে ৷ আর তা বাকি জীবদের চাইতে তাদের খুব একটা স্বতন্ত্র বা আলাদা কোনো বৈশিষ্ট ছিল না ৷
টাইম মেশিন বা সময়ের চাকায় ভর করে
কেউ যদি আজ থেকে ২ মিলিয়ন বছর আগের পূর্ব আফ্রিকায় বেড়াতে যায় , তাহলে কিছু পরিচিত মনুষ্য চরিত্রের মুখোমুখি হয়ে যেতে হবে তাকে , যাদের মধ্যে থাকতে পারে :
শিশুকে বুকে চেপে রাখা উদ্বিগ্ন মা ; কাঁদায় খেলে বেড়ানো উচ্ছৃঙ্খল ছেলেপেলে ; সমাজের কর্তৃত্বে বিরক্ত মেজাজি যুবক ; ক্লান্ত বুড়ো যারা একটু শান্তিতে থাকতে চায় ; কোনো সুন্দরীর আকর্ষাণার্থী বুক চাপড়ে বেড়ানো পেশিবহুল পুরুষ ; এবং জীবনের সব দেখে ফেলা বৃদ্ধ কর্ত্রী।
এইসব আদি-মানবেরা ভালোবাসতো , খেলত , তৈরি করতো বন্ধুত্ব ; আবার ক্ষমতা ও মর্যাদার জন্য নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতো। আবার শিম্পাঞ্জী , বেবুন এবং হাতিরাও তো তা-ই করতো। এসবের মাঝে অসাধারণ কোনো উল্লেখ
করার মত তফাৎ ছিল না। সে যুগের পৃথিবীর কারো কাছে বিন্দুমাত্র ধারণাই ছিল না যে এই প্রাগৈতিহাসিক মানবদের উত্তরসূরিরা ভবিষ্যতে কোনো একদিন চাঁদে হেঁটে বেড়াবে , বিভাজিত করবে পরমাণু , উপলব্ধি করবে জিনের সংকেত এবং লিখবে ইতিহাসের বই। এমনকি আদি মানবেরাও হয়ত নিজেদের নিয়ে এমন উচ্চাকাঙ্ক্ষাই রাখত না।
বর্তমানে
এই সব প্রাগৈতিহাসিক মানবদের সম্পর্কে যে বিষয়টি জানা গেছে এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হচ্ছে -
এরা ছিল তাৎপর্যহীন ও গৌণ প্রাণী-গোষ্ঠী ৷ যারা তাদের প্রতিবেশী কোনো গরিলা বা জোনাকিপোকা কিংবা জেলিফিশের চেয়ে খুব একটা বেশি কোনো বিষয়ে কোনো প্রভাব রাখতে পারে নি।
এখন জীববিজ্ঞানিরা এইসব জীবজগতকে বিভিন্ন প্রজাতিতে শ্রেণিবদ্ধ করেছেন । বৈজ্ঞানিক
তথ্যমতে , যেসব প্রাণী নিজেদের মধ্যে যৌনমিলনের মাধ্যমে উর্বর উত্তরসূরির জন্ম দিতে পেরেছে , তাদেরকে একই ‘প্রজাতি’র (species) অন্তর্ভূত প্রাণী হিশেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ৷
যেমন , বৈজ্ঞানিকেরা গবেষণায়
দেখেছন , ঘোড়া ও গাধার রয়েছে সাধারণ পূর্বসূরি এবং তাদের মধ্যে প্রচুর শারীরিক মিলও খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু তারা পরস্পরের সাথে যৌনমিলনে আগ্রহী নয়। তবে বাধ্য করা হলে তারা মিলিত হবে- কিন্তু জন্ম নেবে অনুর্বর সন্তান। যে কারণে গাধার ডিএনএতে ঘটা পরিব্যক্তি কখনো ঘোড়ার ডিএনএ’র সাথে মিশ্রিত হতে পারে না।
তাই এই দুই ধরনের প্রাণীকে সম্পূর্ণ ভিন্ন দু’টি প্রজাতির সদস্য গণ্য করা হয় ৷ কারণ বিবর্তনের পথ ধরে বহুকাল আগেই এরা পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
অন্যদিকে , একটি বুলডগ ও একটি স্প্যানিয়েল দেখতে যতোই ভিন্ন হোক না কেন তারা কিন্তু একই প্রজাতির প্রাণী ; তারা অনুরূপ ডিএনএ সেটের অংশীদার। সুযোগ পেলে
তারা অত্যন্ত আনন্দের সাথে পরস্পরের সঙ্গে পরস্পর মিলিত হবে এবং তাদের বাচ্চাকাচ্চা ও হবে ৷ বাচ্চাকাচ্চারাও
বড় হয়ে অন্য কুকুরের সাথে মিলিত হয়ে আরো সন্তান-সন্ততি উৎপাদন করতে পারবে বলে ও গবেষকরা নিশ্চিত
হয়েছেন ।
বৈজ্ঞানিকদের মতে - যেসব প্রজাতি অতীতের একটি সাধারণ পূর্বসূরি থেকে উৎপত্তি লাভ করে কালক্রমে বিবর্তিত হয়েছে , তাদেরকে ‘ গণ ’ (Genus) নামক দলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে । বাঘ , সিংহ, চিতা এবং জাগুয়ার প্রত্যেকে ভিন্ন প্রজাতির প্রাণী হলেও প্রত্যেকে ‘ প্যানথেরা ’ ( Panthera ) গণের অন্তর্ভুক্ত ।
জীববিজ্ঞানীরা প্রতিটি জীবকেই একটি দ্বিপদী ল্যাটিন নাম দিয়েছেন ; যার প্রথমটি নির্দেশ করে গণ , পরেরটি নির্দেশ করে প্রজাতি । উদাহরণস্বরূপ , সিংহের বৈজ্ঞানিক নাম হলো ‘ প্যানথেরা লিও ’ ( Panthera leo ) , যেখানে ‘
‘ Panthera’ ও ‘ leo ’ যথাক্রমে গণ ও প্রজাতিকে নির্দেশ করছে । স্বাভাবিকভাবেই , এই লেখাটি এখন যারা পড়ছেন তাদের সবাই-ই অর্থাৎ আমরা মানুষেরা ‘ হোমো সেপিয়েন্স ’ (Homo sapiens) প্রজাতির প্রাণী । এখানে ‘Homo’ (মানব) হলো গণের নাম এবং ‘ sapiens ’ (জ্ঞানী) হলো প্রজাতি।
আবার বেশ কিছু গণের প্রাণী একত্রিত হয়ে গঠন করে ‘ গোত্র ’ বা Family ; যেমন- বিড়াল গোত্র ( সিংহ, চিতা, সাধারণ বিড়াল ),
কুকুর গোত্র ( নেকড়ে, শৃগাল, খেঁকশিয়াল ),
হাতি গোত্র ( হাতি, ম্যামথ, মাস্তডন ) ইত্যাদি।
প্রতিটি গোত্রের সদস্যই অতীতের কোনো এক কালে একটি সাধারণ পূর্বসূরি থেকে উৎপত্তি লাভ করে বিবর্তিত হয়েছে । উদাহরণস্বরূপ, আমাদের বাড়িতে বসবাস করা সাধারণ বিড়াল থেকে শুরু করে আফ্রিকার ভয়ংকর সিংহ, প্রত্যেকেরই একটি সাধারণ পূর্বসূরি রয়েছে যারা আজ থেকে ২৫ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে চরে বেড়াত।
হোমো সেপিয়েন্সও ( আজকের মানুষ ) একটি নির্দিষ্ট গোত্রের অন্তর্ভুক্ত । তবে এই সাধারণ তথ্যটি ছিল মানুষের ইতিহাসের সবচেয়ে গুপ্ত রহস্যগুলোর একটি । আমরা , মানুষেরা , সর্বযুগেই নিজেদেরকে প্রাণিজগৎ থেকে একেবারে আলাদা একটি জাতি হিশেবে বিবেচনা করেছি ; যেন আমরা পিতৃ-মাতৃহীন অনাথ , আমাদের নেই কোনো জ্ঞাতি ভাইবোন কিংবা দূর সম্পর্কের আত্মীয়।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে , ব্যাপারটি সত্য নয় বলে জীববিজ্ঞানিরা
তাদের গবেষণায় জেনেছেন । বর্তমানের আধুনিক ও সভ্য মানুষেরা
এই সত্যটি না
মানতে চাইলেও , জীব বিজ্ঞানিকদের মতে মানুষেরা সকলেই একটি বিশাল এবং বিশেষভাবে গোলমেলে গোত্রের অন্তর্ভুক্ত প্রাণীর অন্তর্ভূক্ত ছিল ; যে গোত্রের নাম করণ করা হয়েছে
‘ মহান বানর ’ বা The Great apes নামে ।
আমাদের কাছের আত্মীয়ের মাঝে এখনও বেঁচে আছে শিম্পাঞ্জী , গরিলা এবং ওরাংওটাং। বেঁচে থাকা আত্মীয়দের মধ্যে শিম্পাঞ্জী আমাদের সবচাইতে নিকটবর্তী আত্মীয় । মাত্র ৬ মিলিয়ন বছর আগের কথা , সে সময়ে কোনো এক নারী এপের (Ape) দু’টো কন্যাসন্তান জন্মেছিল ; যাদের একজন পরিণত হয়েছিল সকল শিম্পাঞ্জীর পূর্বসূরিতে ৷ আর অন্যজন হয়েছে আমাদের বর্তমান সব মানুষের আদি মাতামহ বা উর্বসী আদি
জননী ৷
জীববৈজ্ঞানিকদের মতে প্রায় ২.৫ মিলিয়ন বছর আগে, পূর্ব আফ্রিকায় বসবাসকারী ‘অস্ট্রালোপিথেকাস’ নামক লেজবিহীন বানরের 'গণ' থেকে বিবর্তিত হতে হয়েছিল এবং পরবর্তীতে এই বিতারিত ‘অস্ট্রালোপিথেকাস’ রাই বিবর্তিত হয়ে আদি মানবরূপে সর্বপ্রথম পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়।
জীববৈজ্ঞানিকদের মতে প্রায় ২.৫ মিলিয়ন বছর আগে, পূর্ব আফ্রিকায় বসবাসকারী ‘অস্ট্রালোপিথেকাস’ নামক লেজবিহীন বানরের 'গণ' থেকে বিবর্তিত হতে হয়েছিল এবং পরবর্তীতে এই বিতারিত ‘অস্ট্রালোপিথেকাস’ রাই বিবর্তিত হয়ে আদি মানবরূপে সর্বপ্রথম পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়।
আর প্রায় ২ মিলিয়ন বছর পূর্বে , এই প্রাগৈতিহাসিক মানবদের একটি দল তাদের জন্মভূমি ছেড়ে নানান দিকে
যাত্রা শুরু করে এবং ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে উত্তর আফ্রিকা, ইউরোপ আর এশিয়ার বিস্তীর্ণ
অঞ্চলে।
আদি মানবদের যে দল ইউরোপ ও
মধ্যপ্রাচ্যের নানা অঞ্চলে স্থায়ী হয়েছিল তারা কালক্রমে বিবর্তিত হয়ে ‘Homo neanderthalensis’ ( ‘নিয়ান্ডার উপত্যকার মানব’) প্রজাতিতে পরিণত হয়। বর্তমানে এদেরকে সাধারণভাবে শুধুমাত্র ‘নিয়ান্ডারথাল’ (Neanderthal) নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে।
অন্যদিকে, এশিয়ার পূর্বাঞ্চলে জনবসতি গড়ে
তুলেছিল মানুষের আরেক প্রজাতি- ‘Homo erectus’, নামে যাদের বর্তমানে চিহ্নিত করা হয় ৷ এই প্রজাতির নামের অর্থ করা হয়েছে ‘খাড়া মানব’ নামে । হোমো ইরেক্টাস হলো পৃথিবীতে
সবচেয়ে দীর্ঘসময় বেঁচে থাকা মানব প্রজাতির মানবের নাম ; ওরা প্রায় ২০ লক্ষ বছর পৃথিবীতে বিচরণ করেছে।
ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে এক
মানব প্রজাতি বাস করত যারা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ুতে অভিযোজিত হতে পেরেছিল। ওদের নাম দেয়া হয়েছে ‘‘Homo soloensis’ (‘সোলো উপত্যকার মানব’)।
ইন্দোনেশিয়ার
আরেকটি ছোট দ্বীপ ফ্লোরেসে (Flores) আদি মানবদের একটি দলকে এমন একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল যার
ফলে তারা হয়ে পড়ে খর্বাকৃতির।
কারণ আদি মানবদের প্রথম দল যখন ফ্লোরেস দ্বিপে পৌঁছায় তখন সমুদ্রপৃষ্ঠের
স্তর অনেক নিচে ছিল। পরবর্তীতে যখন সমুদ্রতলের উচ্চতা বেড়ে যায় , তখন কিছু মানুষ সেই সম্বলহীন
দ্বীপে আটকা পড়ে।এদের মধ্যে অনেক বিশাল-দেহী মানুষ ছিল যাদের
বেঁচে থাকার জন্য বেশি খাদ্যের প্রয়োজন হত ৷ প্রযাপ্ত খাদ্যের অভাবে তারা সবার আগে মারা পড়ে। তবে তুলনামূলক ছোট মানুষেরা বেঁচে যায়।
পরবর্তী প্রজন্মগুলোতেও একই
প্রক্রিয়া চলতে থাকে। এভাবে অনেকগুলো প্রজন্ম অতিবাহিত হবার পর ফ্লোরেস দ্বীপের মানুষ ‘‘খর্ব মানবে’’ পরিণত হয়। এই অনন্য প্রজাতির মানবদের নাম বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন ‘Homo floresiensis’ নামে ৷ এদের উচ্চতা ছিল সর্বোচ্চ এক মিটার
এবং ওজন কোনোভাবেই ২৫ কেজির বেশি ছিল না । খর্বাকৃতির মানব হওয়া স্বত্বেও এরা পাথরের নানা সরঞ্জাম তৈরি করতে
পারত , এমনকি মাঝে মাঝে দ্বীপের হাতিও
শিকার করতে পারত। যদিও সত্যি বলতে কি, ওই
দ্বীপের হাতির প্রজাতিও ছিল খর্বাকৃতির।
২০১০
সালে, বিজ্ঞানীরা আমাদের হারিয়ে যাওয়া
আরেক সহোদরকে বিস্মৃতি থেকে উদ্ধার করেন যখন তাঁরা সাইবেরিয়ার ডেনিসোভা দ্বীপের
একটি গুহায় একটি প্রস্তরীভূত আঙ্গুলের হাড় খুঁজে পান। জিন-তাত্ত্বিক বিশ্লেষণে
প্রমাণিত হয় যে, এই
হাড় এযাবতকালের পরিচিত কোনো মানব প্রজাতির নয়। অজানা এই মানব প্রজাতির নাম দেয়া
হয় ‘হোমো ডেনিসোভা’ (“Homo denisova”) নামে ।
যখন
ইউরোপ ও এশিয়া জুড়ে বসবাসরত মানুষ বিবর্তিত হচ্ছিল, তখন কিন্তু পূর্ব আফ্রিকায় বিবর্তনের চাকা থেমে থাকে নি। মনুষ্যজাতির সূতিকাগার নতুন নতুন
অনেক প্রজাতির জন্ম দিয়ে গেছে; যেমন-
“Homo rudolfensis” (“লেক রুডলফের মানব”), “Homo ergaster” বা “কর্মঠ মানব” নামক আরেক মানব প্রজাতির ৷
আর অবশেষে আমাদের নিজস্ব
প্রজাতির মানব যারা বর্তমান বিশ্বে বিরাজমান আছে তাদেরকে আমরা খুব নির্লজ্জভাবে
নাম দিয়েছি “Homo sapiens”, বা “জ্ঞানী মানব”।
প্রায় দুই মিলিয়ন বছর পূর্ব থেকে মোটামুটি ১০ হাজার বছর আগে পর্যন্ত
আমাদের এই পৃথিবীতে একই সময়ে একাধিক মানব প্রজাতির নিবাস ছিল। বর্তমানে শিয়াল, ভালুক কিংবা শুকরের একাধিক
প্রজাতি আমরা দেখতে পাই; তাহলে
মানুষের কেন নয়?
এক
লক্ষ বছর আগের পৃথিবীতে মানুষের অন্তত ছয়টি ভিন্ন প্রজাতি একই সময়ে পৃথিবীতে বিচরণ
কারণ ছিল । ইহাই মোটামোটি বর্তমান মানব গোষ্ঠীর অতীত ইতিহাস ৷ যাদের জন্ম হয়েছিল এপি প্রজাতির নারীর গর্ভে ৷যাকে মানব জাতির আদি জননী রূপে জীববিজ্ঞানিরা বিশ্বাস করেন ৷
সূত্র; সাজেদুল ওয়াহিদ নিটোল এর অনুবাদ করা এবং
ইয়োভাল নোয়া হারারি রচিত ‘সেপিয়েন্স : এ ব্রিফ হিস্টোরি অফ হিউম্যানকাইন্ড ‘ গ্রন্থের ১ম অধ্যায়ের কিছু অংশের সংক্ষিপ্ত রূপ এই লেখাটি )
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন