দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের লেখা কবিতা ( Dedication ) TO EDITH ) এর রচনার প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ :

               

             বার্ট্রান্ড  রাসেল তার আত্মজীবনী  মূলক  রচনা আত্মকথার  ভূমিকায়  লিখিছেন - তার জীবনে  প্রবল তিনটি  তাড়নাই  ছিল তার জীবনের  চালিকা শক্তি ;
  প্রথমটি ছিল ভালবাসার  জন্যে  তার  আকুলতা ;
  দ্বিতীয়টি ছিল জ্ঞান লাভের জন্যে তার  অনুসন্ধিৎসা ;

  আর শেষেরটি  ছিল মানবজাতির দুঃখ  বেদনায় তার অসহনীয়  করুণাবোধ ৷……

                                                           দার্শনিক  বার্ট্রান্ড  রাসেলের  বিখ্যাত কবিতার  লাইন 
         I have found both ecstasy & peace,জানা  হল কোথা আছে  শান্তির সদন
          এর  প্রেক্ষাপটের  আসল  কথা  !

               

(Dedication)
To Edith


Through the long years
I sought peace,
I found ecstasy, I found anguish,
I found madness,
I found loneliness,
I found the solitary pain
that gnaws the heart,
But peace I did not find.
Now, old & near my end,
I have known you,
And, knowing you,
I have found both ecstasy & peace,
I know rest,
After so many lonely years.
I know what life & love may be.
Now, if I sleep,
I shall sleep fulfilled.

                                       
              বিংশ শতকের  বিশ্বের  বিখ্যাত  ব্যক্তিদের  মধ্যে  সবচেয়ে  উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি  ছিলেন  মানবতাবাদী  এবং  বিজ্ঞান  ও  গণিত  শাস্ত্র  বিশারদ  এবং  দার্শনিক  ব্যক্তিত্য  বার্ট্রান্ড  রাসেল  ৷ ১৯৫০  সালে  তিনি  সাহিত্যে  নোবেল  পুরস্কার  লাভ  করেন  এবং  পরে  বৃটেনের  সর্বোচ্চ  বেসামরিক  উপাধি   ‘ অর্ডার  অব  মেরিট ’ ও  তাকে  প্রদান  করা  হয় ৷  তবে  প্রথম  বিশ্বযুদ্ধের  পর  যুদ্ধবিরোধী বিশ্বজনমত  গঠনে নিজের  মতামত  প্রকাশ করে নিবন্ধ  লিখার অপরাধে ১৯১৮ সালে দণ্ডিত হয়ে কারাভোগ করতে হয়েছে  তার  ৷ কিত্তু বার্ট্রান্ড রাসেলের জ্ঞানের গভীরতা ছিল অতুলনীয় ও অপরিমেয় ৷ তার  রচিত বিশ্ব বিখ্যাত  গ্রন্থ সমূহের  অন্যতম ছিল Why I am not a Christian গ্রন্থটি  ৷ রাসেল একজন  মানবতাবাদী ব্যক্তিও  ছিলেন ৷ তাই বিশ্বব্যাপী  সহিংসতা , অন্যায় ,অবিচার , বৈষম্য , শাসকের হাতে শাসিতের অত্যাচার ,উৎপীড়ন ,শোষণ ,বঞ্চনা ; ব্যাক্তিমানুষের অজ্ঞতা , কুসংস্কার , ধর্মান্ধতা ও যুক্তিহীনতার বিরুদ্ধে তিনি কলম  ধরেছেন এবং উচ্চকণ্ঠে এসবের প্রতিবাদ  করেছেন এবং নিজেও ব্যক্তিগতভাবে সক্রিয় ভূমিকা  পালন  করেছেন ৷

      কিত্তু ব্যক্তিগত দাম্পত্য জীবনে তিনি  প্রথম দিকে শান্তি  পান নাই ৷ ৮০ বছর বয়সে তিনি যখন ৪র্থ বিয়ে  করেন তখন থেকে পরবর্তি ১৮ বছর তিনি সংসার জীবনে  যথেষ্ট  সুখ ও  শান্তিতে  ছিলেন ৷এরই  প্রেক্ষাপটে তার ঐ স্ত্রী এডিথের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করে একটি কালজয়ী কবিতা  লিখে গেছেন ৷ এই কবিতার একটি লাইন উপরে উল্লেখ করা হয়েছে এবং পরে  সম্পুর্ণ মূল কবিতাটির  উল্লেখ  করা  হয়েছে ৷ এর পর যে কথাটি জানা গেল না তা হচ্ছে তার ৪র্থ স্ত্রী  এডিথ কী রাসেলের মত সংসারে সূখ ও শান্তিতে ছিলেন ? নাকি একতরফা ভাবে শুধু রাসেলকেই  এডিথ  শান্তি ও  ভালবাসা গিয়ে গেছেন নিজের জীবন বিপন্ন  করে ?

  বার্ট্রেন্ড রাসেলের  ব্যক্তি  পরিচয়  হচ্ছে -তিনি ১৮৭২ সালের ১৮ মে ব্রিটেনের ওয়েলস -এর ট্রেলেক নামক স্থানে জন্ম গ্রহণ  করেন এবং চার বছর বয়সের মধ্যেই পিতা ও মাতা হারিয়ে পিতামহের কাছে মানুষ হন ৷ ঐতিহ্যমন্ডিত পরিবারের বংশধর রাসেলের পিতামহ লর্ড জন রাসেল উনিশ শতকের মধ্যভাগে দুইবার ইংল্যাণ্ডের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন ৷

     রাসেল ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের  ট্রিনিটি কলেজ থেকে গণিত ও দর্শনশাস্ত্রে প্রথম শ্রেণী অর্জন করেন এবং ৩১ বছর বয়স থেকে বিশ্বমানের গ্রন্থসমূহ রচনা আরম্ভ করেন ৷

       ১৮৯৪ সালে ২২ বছর বয়সে এ্যালিস পিয়ারসল  স্মীথ কে  বিয়ে  করেন এবং ১৭ বছর তার সঙ্গে সংসার করার পর তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে ৷ পরে ১৯২১ সালে ডোরা উইনফ্রেড  ব্ল্যাককে বিয়ে  করেন ৷ সে বিয়ে বেশীদিন ঠিকেনি ৷ তাই ১৯৩৫ সালে মিস প্যাট্রিসিয়া স্পেন্স নামক মহিলার সঙ্গে বিয়ে হয় ৷ কিত্তু তৃতীয় বারের মত এই দাম্পত্য জীবনও রাসেলের টিকে নি ৷ শেষ পর্যন্ত  ৮০ বছর বয়সে ১৯৫২ সালে এডিথ ফিন্সকে  বিয়ে করেন এবং তাকে নিয়ে তার জীবনের শেষদিন পর্যন্ত  শান্তিপূর্ণ  ও সুখের দাম্পত্য জীবন যাপন করেন এবং ১৮ বছর সুখের সংসার যাপনের পর ৯৮ বছর বয়সে ১৯৭০ সালের ২ ফেব্রুয়ারী  বার্ট্রেন্ড রাসেল মৃত্যুকে বরণ করেন ৷ তার মৃত্যুর পূর্বে তার প্রীয়তমা স্ত্রী  এডিথ কে উদ্দ্যেশ্য করে উপরে উল্লেখিত কবিতাটি লিখেছেন ৷ এর কয়টি-[- একটি লাইন হচ্ছে -
              জীবনের  প্রান্তে এসে বার্ধকোর কালে
               তোমায় পেয়েছি প্রিয়া ,চিনেছি তোমায় ,
              সুখ আর শান্তির আবেশ রয়েছে যেতায় ;
               জানা হল কোথা আছে শান্তির সদন
              পেরিয়ে  অনেক কাল  নিঃসঙ্গ জীবন ৷

মন্তব্যসমূহ