শুভ জন্মদিন কবি কাজী নজরুল ইসলাম :



                         বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে আমরা রয়েছি বসে 
                  বিবি তালাকের মাছলা খুঁজি হাদিস, কোরান চষে

           শুভ  জন্মদিন  কবি  ৷  তোমার  ভাগ্য  ভালই  ছিল  আজকে  বলতে   হচ্ছে  ৷  তোমাকে  নাস্তিক  ও  হিন্দু  কবি  বলে  ফতওয়াবাজরা  থেমে  গিয়েছিল  ! কবি  হুমায়ুন  আজাদ  বা গবেষক ও  বিজ্ঞানী  অভিজিৎ  রায়ের  মত  তোমাকে  চাপাতির  আঘাতে  প্রাণ  হারাতে  হয়  নি  ৷  তোমাকে  দেখে  যেতে  হয়নি  বাংলাদেশের  মুক্তচিন্তার  অধিকারীদের  রক্ষা  করতে  বিশ্বের  বিশিষ্ঠ  ১৫০  ব্যক্তির  সরকারের  কাছে দেয়া  লিখিত  খোলা  চিঠি  ৷

 
  আজ  প্রাণভরে  স্মরণ  করছি  তোমার  নিম্নে    লিখিত  পুংক্তিগুলো 

             
      গাহি সাম্যের গান
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্ম জাতি
সব দেশে সব কালে ঘরে ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি (মানুষ)

বিশ্বের যা-কিছু মহান সৃষ্টি, চির-কল্যাণকর 
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর
...
      

     
  
           

সাম্যের গান গাই 
আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী
কোন ভেদাভেদ নাই
        
গাহি তাহাদের গান
ধরণীর হাতে দিল যারা
আনি ফসলের ফরমান
শ্রমকিনাক্সক কঠিন যাদের
নির্দয় মুঠি তলে
ত্রস্তা
ধরণী নজরানা দেয়
ডালি ভরা ফুলে-ফলে

      তোর দিন অনাগত, শিশু তুই আয়,
জীবন-মরণ দোলে তোর রাঙা পায় 
নতুন খাবার তাঁর আরেকটি হাসির ছড়া
ছড়াটি হলো
 কম্বলের অম্বল
কেরোসিনের চাটনি
চামচের আমচুর
খাইছ নি নাৎনি ?
আমড়া-দামড়ার
কান দিয়ে ঘষে খাও
চামড়ার বাটিতে
 চটকিয়ে কষে খাও।.

     বাংলার অশিক্ষিত মুসলমানরা গোঁড়া এবং শিক্ষিত মুসলমানরা ঈর্ষাপরায়ণ 
এ আমি একটুও বানিয়ে বলছিনে 
মুসলমান সমাজ কেবলই ভুল করেছে আমার কবিতার সঙ্গে আমার ব্যক্তিত্বকে জড়িয়ে
আমি মুসলমান-
 কিন্তু আমার কবিতা সকল দেশের, সকল কালের এবং সকল জাতির

           নজরুল সত্য-সুন্দর ও মানবতার জয়গান গেয়েছেন।  তাই  তিনি
প্রবল আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে   বলতে  পেরেছেন  ;
          
     

 ‘সুন্দরের ধ্যান, তার স্তবগানই আমার উপাসনা, আমার ধর্ম। 

যে কুলে, যে সমাজে, যে ধর্মে, যে

দেশেই জন্মগ্রহণ করি, সে আমার দৈব। 

আমি তাকে ছাড়িয়ে উঠতে পেরেছি বলেই কবি।’

 তিনি সাম্যবাদী কবিতায় আরও লিখেছেন : 


‘গাহি সাম্যের গান
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই নহে কিছু মহীয়ান।
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্ম জাতি,
সব দেশে, সব কালে, ঘরে ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।
... ... ... ...
যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব ব্যবধান,
যেখানে মিশেছে হিন্দু বৌদ্ধ মুসলিম খ্রীস্টান।’

         ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’-তে নজরুল লিখেছেন,

 ‘আমি কবি।
 আমি অপ্রকাশ সত্যকে প্রকাশ করার জন্য, 
অমূর্ত সৃষ্টিকে মূর্তিদানের জন্য ভগবান কর্তৃক প্রেরিত। 
কবির কণ্ঠে ভগবান সাড়া দেন। 
আমার বাণী সত্যের প্রকাশিকা।
 ভগবানের বাণী।’

কে তোমায় বলে বারাঙ্গনা মা, কে দেয় থুতু ও-গায়ে?
হয়তো তোমায় স্তন্য দিয়েছে সীতাসম সতী মায়েহিন্দু-কবি, মুসলমান-কবি ইত্যাদি বলে বিচার করতে গিয়েই এত ভুলের সৃষ্টি
     
         মোর প্রিয়া হয়ে এস রাণী
দেব খোঁপায় তারার ফুল,

তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়
সে কি মোর অপরাধ



      

মন্তব্যসমূহ