৮ টি সাধারণ খাবারের গুণাগুন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং লিভার বা যকৃত রোগের কিছু তথ্য আর ডায়াবিটিস রোগ নিয়ে কিছু কথা :



       

      শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে  পারে  যে ৮ টি খাবার  :


      

 


        কমলা

         কমলালেবু তে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি৷
         প্রতি ১০০ গ্রামের মধ্যে ৫০ মিলিগ্রামই ভিটামিন সি থাকে৷
, কমলা   ফল শুধু খেতেই মজা নয়, কমলাতে  রয়েছে খুবই কম ক্যালোরি৷ এক গ্লাস কমলার রস প্রতিদিন সকালে পান করলেই দিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-র অভাব পূরণ হয়ে যাবে৷ তবে শুধু কমলার রস নয়, কমলার  ভেতরের   সাদা অংশে রয়েছে  যথেষ্ট আঁশ, তাই পুরো কমলা খেলে আরো বেশি উপকার পাওয়া  যাবে  ৷


          

   

      কপি

             যে কোনো কপিই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী৷
             সবচেয়ে ভালো পাতাকপি বা সবুজ কপি৷
শরীরের রোগপ্রতিরোধ বাড়াতে শুধু ভিটামিন এ, সি এবং ই রয়েছে কপিতে, তা ছাড়া  রয়েছে পলিফেনল৷ তবে রান্না করার সময় কপি পুরো সেদ্ধ না করে আধা সেদ্ধ করতে  হবে  ৷ এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এতে পুরো খাদ্যগুণ বজায় থাকে৷ ‘‘এ সব খাবার সারা বছর সচেতনভাবে খেলে ঋতু পরিবর্তনের সময়ও কারো কোনো সমস্যা হয় না৷’’ বলেন, বন শহরের খাদ্য বিশেষজ্ঞ আনিয়া গাল৷


    দই ;- 

   

          দুধ এবং দুধের তৈরি দইয়ে থাকে

          ল্যাকটিক অ্যাসিড

      যার  ব্যাকটেরিয়া পেট বা অন্ত্র পরিষ্কার রাখে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে ইমিউন সিস্টেম’-কে আরো শক্তিশালী করে৷ তবে কৃত্রিম উপায়ে তৈরি বা মিষ্টি দই না খেয়ে প্রকৃতিক উপায়ে তৈরি টক বা সাদা দই, মানে ঘরে পাতা দই খাওয়াই উত্তম!

    রসুন ;-  


    রসুন

      রসুনে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট’,  আরো  রয়েছে রসুনে


সেলেনিউমসহ বেশ কয়েকটি উপাদান 

 

    তাই  নিয়মিত রসুন খেলে  পাকস্থলীর নানা সমস্যা,

      অর্থাৎ ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক থেকে  পাকস্থলীকে  রক্ষা করে    প্রতিদিন দুই বা তিন কোয়া কাঁচা রসুন থেতলে বা অল্প গরম করে খেলে ভালো  ফল  পাওয়া          যায়  ৷তবে রসুন বেশি সময় ধরে রান্না করলে তার খাদ্যগুণ কমে যায়    তা  ছাড়া  রসুনে রয়েছে আঁশ, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম  ৷


  চা ;-

     চা   
           চা স্বাস্থ্যকর এবং চা ভেতর থেকে শরীরকে গরমও রাখে৷
           বিশেষ করে সবুজ চা, কালো এবং সাদা চা৷
        এতে থাকা পলিফেনলশরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়৷ এছাড়া সবুজ চায়ে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টরোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে৷  সামান্য ঠান্ডা চা-তে মধু মিশিয়ে পান করা  যায়  ৷ চাতে   আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়ালউপাদান৷
   চাতে  আরো  রয়েছে  ক্যালসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও প্রোটিন৷

   মুরগির  স্যুপ ;-  


        

     মুরগির  স্যুপে   অ্যামেরিকান গবেষকরাও খুঁজে পেয়েছেন  অনেক  গুণ   ৷ ঠান্ডায় মুরগির স্যুপ পান করলে   স্বাসনালীর কষ্ট তো দূর হও  , আর গরম স্যুপের ভাপ গলার খুসখুসে ভাবটাও কমিয়ে দে

           

   ডার্ক চকলেট

যারা চকলেট পছন্দ করেন, তাদের জন্য আনন্দের বিষয়৷ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডক্টর ন্যান্সি স্নাইড্যার্মা বলেছেন, ‘‘ডার্ক চকলেটে আছে ফ্ল্যাবিনয়েড, যা কার্ডিওভাসকুলার রোগ থেকে রক্ষা করে, তবে অতিরিক্ত ডার্ক চকলেট খাওয়া ভালো নয়৷

     কফি

চিকিৎসকদের মতে, দিনে দুই কাপ কফি আপনার হৃৎপিণ্ডকে সব রোগ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে৷



   লিভার বা যকৃৎ  রোগ  প্রতিরোধের  কিছু  তথ্য :

     ভাইটাল অর্গান


            যকৃৎ বা লিভার মানুষ ও অন্যান্য মেরুদণ্ডী প্রাণীর শরীরে একটি অপরিহার্য অঙ্গ৷ শরীরে লিভার নানা ধরনের কাজ করে: বিষাক্ত পদার্থের দূরীকরণ থেকে শুরু করে প্রোটিন সিন্থেসিস৷ এছাড়া খাবার হজম করার জন্য প্রয়োজনীয় নানা ধরনের জৈব রাসায়নিক পদার্থ সৃষ্টি করে লিভার৷

           বিশ্বের    কোটি মানুষ কোনো না কোনোরকম যকৃতের রোগে ভোগেন৷ তার মধ্যে প্রথমেই আসে হেপাটাইটিস বা লিভারের ইনফ্ল্যামেশন: যা সাধারণত এ, বি, সি, ডি এবং ই গোত্রীয় হয়৷ যদিও এগুলো ভাইরাস-বাহিত, তবুও কিছু কিছু ক্ষেত্রে যৌন সঙ্গম থেকেও সংক্রমণ ঘটতে পারে৷ হেপাটাইটিস বি ভাইরাস এবং হেপাটাইটিস সি ভাইরাস আবার লিভারের ক্যানসার হওয়ার প্রধান কারণ৷

    অ্যালকোহল


           মাত্রাধিক  পরিমাণ  মদ্যপান থেকে লিভারের ক্ষতি হয় ফ্যাটি লিভার এবং লিভার সিরোসিস যার মধ্যে পড়ে৷ সিরোসিস হলো যকৃতের রোগের একটা চূড়ান্ত রূপ৷ এ রোগে পেটের মধ্যে ফ্লুইড জমে যায়  ৷  এছাড়া স্কার টিস্যু ও নডিউলস দেখা দেয়৷চিকিৎসায়  অনেক  ক্ষেত্রে  সিরোসিস সারানো সম্ভব হয়  না,   এবং শেষমেষ লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট বা যকৃৎ প্রতিস্থাপন করতে  হয়  ৷

           লক্ষণ

          লিভারের যে ক্ষতি হয়েছে বা অসুস্থ যকৃতের যে  সব  লক্ষণ   তা  হলো মলের রং পাতলা এবং মূত্রের রং ঘন হওয়া   জন্ডিস, পেট, পায়ের গোড়ালি এবং পা ফোলা, অতিমাত্রায় ক্লান্তি, সহজেই রক্ত পড়া এবং ক্ষত দেখা দেওয়া আর লিভারের ব্যথাই  হচ্ছে  এই  রোগের  মূল  লক্ষণ  ৷

      মেদ ও তার পরিণাম


            সারা বিশ্বে আজ প্রযুক্তি, সমৃদ্ধি এবং আধুনিক জীবনধারার কারণে মেদবহুল মানুষের সংখ্যা বেড়ে চলেছে৷ অথচ শরীরে মাত্রাধিক মেদ থাকলে তা ডায়বেটিস থেকে শুরু করে হৃদরোগ এবং ফ্যাটি লিভারের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে
চলেছে৷ অথচ শরীরে মাত্রাধিক মেদ থাকলে তা ডায়বেটিস থেকে শুরু করে হৃদরোগ এবং ফ্যাটি লিভারের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে  ৷  তাই  সবারই  এখন  এসব  ব্যাপারে  সতর্ক  থাকতে  হবে  ৷


        ডায়াবেটিস  রোগের  কিছু  কথা ;

          ডায়াবিটিস  রোগীদের  ফাষ্টফুড খাওয়া  অবশ্যই পরিহার  করতে  হবে ৷ কারণ  
প্যাটিস, বার্গার বা পিৎসার মতো ফাস্টফুডে লুকিয়ে থাকে অনেক চিনি যা সেভাবে বোঝা যায়না৷ আর এসব ফাস্টফুড খাওয়ার কারণে অনেকেরই শিশু বয়সেই থাকে অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা৷ তাই তৈরি খাবার বা ফাস্টফুড থেকে একেবারেই দূরে থাকতে  হবে  ছোট, বড় সবাইকে

  

           সাদা চালের পরিবর্তে লাল চাল খেতে  হবে  ৷  আর সাদা আটা বা ময়দার পরিবর্তে ব্রাউন আটা বা দানা ও বীজযুক্ত রুটি খাওয়া  উচিত  ৷ আর সাদা আলুর বদলে মিষ্টি আলু বেছে নেওয়া শ্রেয়    কারণ ডায়াবিটিস  রোগীর  আঁশযুক্ত খাবার, বিভিন্ন দানা বা বিচি খেলে  উপকার  হয়    আর ডায়াবেটিস রোগীরা তিনবেলার খাবার পাঁচবেলা ভাগ করে খেলে  ভাল  উপকার  হবে  ৷  এবং সকালের নাস্তা যেন কখনও বাদ দেয়া  উচিত  হবে  না  ৷

 

      কলাকে আজকাল  খুবই স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে  পরিচিতি  পেয়েছে  কারণ কলা    সারা বছর পাওয়া যায়   এবং  কলার  দামও  কম  ৷ তবে কলা এবং বিভিন্ন রকমের বাঙিফল ফলগুলোতে থাকে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি বা ফ্রুকটোজ যা শরীরে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে  দেয়    তাই  এর  পরিবর্তে ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারেন আপেল, নাশপাতি, ব্লুবেরি ইত্যাদি ফল 

 

          

     কোকোকোলা  জাতীয়  মিষ্টি    পানীয়  ও  ফলের  রসকে  বর্জন  করতে  হবে ৷ কারণ         এসবে থাকে প্রচুর পরিমাণে চিনি এবং ক্যালরি যা খুব তাড়াতাড়ি শরীরে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়৷ তাই ডায়াবেটিস  রোগীরা  এই  সব  পানীয়  অবশ্যই  বর্জন  করতে  হবে  ৷

 

   জার্মান ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান নিউট্রিশন-এর প্রধান ডা. হান্স গেয়র্গ ইয়োস্ট বলেন, ‘‘চিনি অন্যান্য শর্করা জাতীয় খাবারের চেয়ে মোটা করে বা ওজন বাড়ায় অনেক বেশি  ৷ কারণ ডায়াবেটিস রোগীদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই জরুরি   ৷ তাই ডায়াবেটিস রোগীরা লোভনীয় সব মিষ্টি খাবার থেকে দূরে থাকতে  হবে  ৷   

   

    

         যে খাবারের জিআই অর্থাৎ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যত বেশি, ডায়াবেটিস রোগীর জন্য তা ততটাই খারাপ৷ সাধারণত শাক সবজিতে আঁশের পরিমাণ বেশি বলে রক্তে মিশতে একটু বেশি সময় লাগে৷ তবে মিষ্টি কুমড়াতে জিআই অনেক বেশি ফলে এসব সবজি অন্য সবজির সাথে মিশিয়ে খাওয়া ভালো৷


    

           

   
        

  ( সংগ্রহ )
  

মন্তব্যসমূহ