যুক্তিবাদী বিজ্ঞানী ও গবেষক এবং লেখক অভিজিৎ রায় জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেলেন যে , তার গবেষণামূলক রচনা বিশ্বাসের ভাইরাস কত সত্য ৷
Native name অভিজিৎ রায়
Born 12 September 1972
Bangladesh
Died 26 February 2015 (aged 42)
Dhaka, Bangladesh
Occupation Critic, columnist, engineer
Language Bengali, English
Nationality American, Bangladeshi
Education PhD in Biomedical Engineering
Alma mater BUET, National University of Singapore
Genre Anti-establishment
Spouse Rafida Ahmed Bonya
Children 1[1]
Relatives Ajoy Roy (father)
Shefali Roy (mother)[2]
Website
mukto-mona.com
কিছু কিছু মানুষ আছেন যাঁরা অন্যকে বাঁচানোর জন্য পৃথিবীতে বেঁচে থাকেন, নিজেকে বাঁচানোর জন্য নয়। অভিজিৎ রায় ছিলেন সেরকম দুর্লভ একজন মানুষ।
অভিজিত রায় সম্পর্কে ধর্ম
ব্যবসায়ীদের প্রচার ছিলো , তার
লেখায় নাকি
প্রচুর ধর্মের অবমাননা ছিল। কিত্তু তিনি তো ধর্মান্ধতার বিরোধী ছিলেন, ধর্মের নয় ।
ধর্মের বিশ্বাস এবং বিজ্ঞানের সত্যের মধ্যে যে বিরোধ বিদ্যমান আছে তিনি সেখানে শুধু বিজ্ঞানের সত্যকে সমর্থন করেছেন এবং
ধর্মের দুর্বল দিক গুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন
৷ তার এই মুক্ত আলোচনা সমাজ-প্রগতির এবং আগামি প্রজন্মের বিশ্বে ঠিকে
থাকার জন্য অবশ্যই অপরিহার্য।
তিনি PhD in Biomedical Engineering এ ডিগ্রী অর্জন করেছেন ৷ তাই তার লেখার বিষয় ছিলো বিজ্ঞান ও মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ে ৷
ডঃ অভিজিৎ রায় একজন ম্যাকানিক্যাল ইন্জিনীয়ার ছিলেন ৷ কিন্তু ২০০২ সালে তিনি পিএইচডি ডিগ্রীর একটি স্কলারশিপ অর্জন করেন এবং সিঙ্গাপুরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন ৷২০০০ সালে তিনি সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ডক্টরেটের জন্য অধ্যয়ন করছিলেন। তিনি তার পিএইচডির বিষয় বেঁচে নেন মানুষের মস্তিষ্ক যা একটি নিউরোবিজ্ঞানের বিষয় ৷ তিনি মানুষের মস্তিষ্কের উপর পিএইচটি ডিগ্রীর জন্যে মানুষের মস্তিষ্কের একটি মডেল প্রস্তুত করেন ৷ মস্তিষ্কের মডেলিং করতে গিয়ে অভিজিৎ রায় মানুষের মস্তিষ্কের প্রায় ৪৩টি কাঠামো বা প্রত্যঙ্গ তৈরি করেন ৷ ঐ ৪৩টি অংশের একটি অংশের নাম হচ্ছে টেম্পরাল লোব ৷ অনেক গবেষণা করে অভিজিৎ রায় সহ অন্যান্য নিউরোবিজ্ঞানীরা ঐ টেম্পরাল লোবের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে এর একটি নতুন একটি নামকরণ করেছেন ৷ ঐ নতুন নামটি হচ্ছে মস্তিষ্কের ‘ God Spot’ ৷
এই
গড স্পটের উপর
ব্যাপক গবেষণা করে নিউরোবিজ্ঞানীরা নিশ্চিত
হয়েছেন যে মানুষের সকল
বিশ্বাস এবং ধর্মানুভূতিকে
ঐ গড স্পটটি
নিয়ন্ত্রিত করে ৷
বিজ্ঞানী অভিজিৎ রায়ও
এই গড স্পট
নিয়ে অনেক গবেষণা
করেন এবং এই
বিষয়ে অনেক লেখা
পড়া করে তার
বিখ্যাত নিবন্ধ বিশ্বাসের ভাইরাস রচনা
করেন ৷ তিনি গবেষণা
করে দেখান যে ,
জলাতঙ্কের জীবানু মানুষের
দেহের ভিতরে প্রবেশ
করলে যেমন মানুষের
কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র বিকল
হয়ে যায় , ঠিক তেমনি ধর্মীয়
বিশ্বাসগুলোও একজন সাধারণ
মানুষের চিন্তাচেতনাকে আচ্ছন্ন
করে ফেলে ৷ তখন আক্রান্ত
ঐ মানুষের মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রন
চলে যায় তাকে যে
ব্যবহার করবে তার নিয়ন্ত্রনে
৷
মস্তিষ্কে ভাইরাস আক্রান্ত মানুষ ধর্মবিশ্বাসের নামে বা “ ঈশ্বরের কাজ ” করছে মনে করে মানুষ হত্যা করতে তার বিবেক বা নৈতিকতা তাকে বাধা দেয় না ৷ এই কারণেই নাইন ইলেবেনে আমেরিকায় ১৯ জন মানুষ ধর্মবিশ্বাসের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জঙ্গী আক্রমন চালিয়ে ৩ হাজারের বেশী নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করতে পেরেছে ৷ ভারতের তাজমহল হোটেলে হামলা করে নিরপরাধী কয়েক শত মানুষকে হত্যা করেছে ৷ বাংলাদেশে রমনা বটমূলে ও সিনেমা হল সহ বিভিন্ন জনসমাবেশে আক্রমন করে নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে পেরেছে ৷ ভারতে হিন্দু মৌলবাদীরা রামজন্মভূমি উদ্ধারের নামে ধ্বংস করেছে কয়েক শতাব্দীর প্রাচীন বাবড়ী মসজিদ এবং সাম্প্রদায়িকতার সৃষ্টি করে হত্যা করেছে কয়েক হাজার নিরীহ নিরপরাধ মুসলমানকে ৷ এই রকম শত শত দৃষ্টান্ত আছে ৷ আর এইসব কাজ করেছে “ ধর্ম বিশ্বাসের ভাইরাসে আক্রান্ত কিছু মানুষ” ৷
তাই তিনি মনে করতেন ভাইরাস মুক্ত জীবনের আস্বাদন কোনো সুনির্দিষ্ট গন্তব্য নয় , বরং একটি চলমান যাত্রাপথের নাম ৷ আমরা সবাই এই ভাইরাস নিয়ে কোনো না কোনোভাবে আক্রান্ত , এবং আমরা নিজেরা নিজেদের অজান্তেই বয়ে নিয়ে চলেছি অসুস্থ বিশ্বাস , মতামত কিংবা বিশেষ ধারণা ৷ আমাদেরকে শিশু বয়সে ধর্মীয় বিশ্বাসের পানপাত্র হাতে তুলে দিয়ে আমাদের অনেকের মস্তিষ্ক বিশ্বাসের ভাইরাসে আক্রান্ত করে ফেলা হয়েছে ৷ এই আক্রান্ত মস্তিষ্ককে এখন প্রতিষেধক দিয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ করে ফেলাই হবে আমাদের মূল সামাজিক ও রাজনৈতিক লক্ষ্য ৷ আমরা যদি ঈশ্বর- ভাইরাসের কুফলগুলো সম্বন্ধে সর্বদা নিজেরা সচেতন থেকে এবং সমাজকেও সচেতন করে সামনে এগোতে পারি , তবেই আমরা ভাইরাস মুক্ত সমাজ প্রত্যাশা করতে পারবো " ৷
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন