হযরত ইবরাহীম(আ)
ইসমাইল(আ)
বিবি হাজেরা
প্রবিত্র ক'বাগৃহ পুনঃ নির্মান
এবং কুরবানি
ও ইসহাক(আ) প্রসঙ্গে
একটি হাদীসের কথা :
হযরত ইবরাহীম(আ) কর্তৃক পবিত্র ক ‘বাগৃহ পুনঃ নির্মাণ ,
ইসমাঈল(আ) সহ বিবি হাজেরার নির্বাসন,
দরজার চৌকাঠ বদলে ফেলা,
চৌকাট বহাল রাখা ইত্যাদি প্রসঙ্গে ইবনে আব্বাস বর্ণিত একটি হাদিস;
ইসমাঈল(আ) সহ বিবি হাজেরার নির্বাসন,
দরজার চৌকাঠ বদলে ফেলা,
চৌকাট বহাল রাখা ইত্যাদি প্রসঙ্গে ইবনে আব্বাস বর্ণিত একটি হাদিস;
জেদ্দা , দারুসসালাম থেকে প্রকাশিত এবং প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মুজীবুর রহমান কর্তৃক অনুবাদ করাঃ কুর’আনুল কারীম এর বাংলা তাফসীর গ্রন্থের ১৪নং সুরা ইবরাহীম এর
৩৭ নং আয়াতের নিচে টিকা হিসাবে উল্লখিত ইবনে আব্বাস(রা)কর্তৃক বর্ণিত টিকার কিছু অংশ
( এ লেখার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক অংশ ), নিম্নে উল্লেখ করা হলো ।
ইবনে আব্বাস(রা) বলেছেন , বিবি হাজেরা,ও বিবি সারাহ্ , উভয়ের মনোমালিন্য চরমে পৌছালে আল্লাহর আদেশে ইবরাহীম(আ) হাজেরা ও তাঁর শিশুপুত্র ইসমাঈলকে নির্বাসন দানের উদ্দেশ্যে খানা-এ-কাবার নিকট উপস্থিত হয়ে , মসজিদের উচুঁ অংশে যমযমের উপরিস্থ একটি বৃক্ষতলে তাদেরকে রাখলেন,
এবং কিছু খেজুর আর একটি মশকে স্বল্প পরামান পানি তাদেরকে দিয়ে তিনি নিজ গৃহ অভিমুখে ফিরে চললেন । তখন হাজেরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, এই নির্বাসনের আদেশ কি আল্লাহ্ তাকে দিয়েছেন ? তিনি হাঁ জবাব দিলে, হাজেরা বললেন, তাহলে আল্লাহ্ আমাদের ধ্বংস ও বরবাদ করবেন না । হাজেরা তখন ইসমাঈলকে নিজের বুকের দুধ খাওয়াতেন আর নিজে রেখে যাওয়া মশকের পানি পান করতেন । পরিশেষে মশকে যা পানি ছিল তা ফুরিয়ে গেল । তখন তিনি নিজেও তৃষ্ণার্ত হলেন আর শিশু পুত্রটিও পিপাসায় কাতর হয়ে পড়ল । তখন তিনি তাঁর অবস্থানের সংলগ্ন পর্বত ‘ সাফা’ এর উপর উঠে দাঁড়ায়ে এদিক সেদিক তাকিয়ে কাউকে না দেখতে পেয়ে সাফা পর্বত থেকে নেমে পড়লেন । এরপর তিনি নিচু ময়দান অতিক্রম করে মারওয়া পাহাড়ের উপর উঠে দাঁড়ালেন । কাউকে না দেখতে পেয়ে তিনি পাহাড়দ্বয়ের মধ্যে সাতবার দৌড়াদৌড়ি করলেন ।
এবং কিছু খেজুর আর একটি মশকে স্বল্প পরামান পানি তাদেরকে দিয়ে তিনি নিজ গৃহ অভিমুখে ফিরে চললেন । তখন হাজেরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, এই নির্বাসনের আদেশ কি আল্লাহ্ তাকে দিয়েছেন ? তিনি হাঁ জবাব দিলে, হাজেরা বললেন, তাহলে আল্লাহ্ আমাদের ধ্বংস ও বরবাদ করবেন না । হাজেরা তখন ইসমাঈলকে নিজের বুকের দুধ খাওয়াতেন আর নিজে রেখে যাওয়া মশকের পানি পান করতেন । পরিশেষে মশকে যা পানি ছিল তা ফুরিয়ে গেল । তখন তিনি নিজেও তৃষ্ণার্ত হলেন আর শিশু পুত্রটিও পিপাসায় কাতর হয়ে পড়ল । তখন তিনি তাঁর অবস্থানের সংলগ্ন পর্বত ‘ সাফা’ এর উপর উঠে দাঁড়ায়ে এদিক সেদিক তাকিয়ে কাউকে না দেখতে পেয়ে সাফা পর্বত থেকে নেমে পড়লেন । এরপর তিনি নিচু ময়দান অতিক্রম করে মারওয়া পাহাড়ের উপর উঠে দাঁড়ালেন । কাউকে না দেখতে পেয়ে তিনি পাহাড়দ্বয়ের মধ্যে সাতবার দৌড়াদৌড়ি করলেন ।
ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন , নবী(সঃ) বলেছেন , এজন্যেই হজ্জের সময় মানুষ এই পাহাড়দ্বয়ের মধ্যে সাতবার সায়ী বা দৌড়াদৌড়ি করে এবং এটা হজ্জের একটি অঙ্গ।
………..এর এক পর্যায়ে যমযমের কাছে একজন ফেরেশতাকে দেখতে পেলেন হাজেরা , তখন তিনি দেখলেন ঐ ফেরেশতা সেখানে তাঁর পায়ের গোড়ালি বা আপন ডানা দ্বারা আঘাত হানছেন এবং আঘাতের স্থান থেকে পানি উপছে উঠতে লাগল । হাজেরা তখন এর চার পাশে বাঁধ দিয়ে তাকে হাউযের আকার দানকরে পানি সংগ্রহ করলেন , যা পরবর্তীতে যমযমকুপে রূপান্তরিত হয়েছে ৷
বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর হাজেরা পানি পান করলেন এবং তার শিশুপুত্রকে দুধ পান করালেন । তখন ফেরেশতা তাঁকে বললেন, ধ্বংসের কোন আশংকা আপনি করবেন না , এখানেই আল্লাহর ঘর রয়েছে, এই শিশু তাঁর পিতার সাথেমিলে এটি পুনঃ নির্মান করবে এবং আল্লাহ্ তাঁর পরিজনকে কখনই ধ্বংস করেন না ৷
হাজেরা এভাবেই দিন যাপন করছিলেন। …….. আর ইসমাঈলও আস্তে আস্তে বড় হলেন, এবং সেখানে বসতি স্থাপন করা কয়েকটি খান্দানের ভাষা আরবী ও শিখে তাদের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠলেন । যখন তিনি যৌবনপ্রাপ্ত হলেন, তখন তারা তাদেরই এক মেয়েকে তার সঙ্গে বিয়ে দেয় । ইসমাঈলের বিয়ের পর তাঁর মাতা হাজেরা ইন্তিকাল করেন ।
ইসমাঈলের বিয়ের পর ইবরাহীম(আ) তার পরিত্যক্ত পরিজনকে দেখার জন্য এখানে আসলেন । কিন্তু এসে ইসমাঈলকে পেলেন না, তার স্ত্রী থেকে জানতে পারলেন ,ইসমঈল রিযিকের সন্ধানে বেরিয়ে গেছেন । তিনি তার স্ত্রীর কাছ থেকে তাদের আর্থিক দুর্দশার কথা ও জানলেন, এবং তার কাছ থেকে অভিযোগ ও পেলেন তাদের আর্থিক কষ্টের ব্যাপারে । তিনি চলে যাওয়ার আগে তাকে বললেন ,তোমার স্বামী বাড়ি আসলে আমার সালাম জানিয়ে বলবে , সে যেন তার ঘরের চৌকাঠ বদলিয়ে নেয় ,এবলে তিনি চলে গেলেন ।
ইসমাঈল বাড়ি আসলে তার স্ত্রী তাকে বলল, এমন এমন আকৃতির একজন বৃদ্ধ এসেছিলেন । তিনি বলে গেছেন, আপনি যেন আপনার ঘরের দরজার চৌকাঠ বদলিয়ে ফেলেন । ইহা শুনে ইসমাঈল(আ) বললেন, তিনি আমার পিতা এবং আমাকে নির্দেশ দিয়ে গেছেন, যেন তোমাকে আমি পৃথক করে দেই । সুতরাং তুমি তোমার পিত্রালয়ে আপন লোকদের কাছে চলে যাও । এ বলে ইসমাঈল(আ) তাকে তালাক দিয়ে দিলেন এবং জুরহুম গোত্রের অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করলেন ।
অতঃপর আল্লাহ্ যদ্দিন চাইলেন, ইবরাহীম(আ) তদ্দিন এদের থেকে দুরে রইলেন, পরে আবার দেখতে আসলেন । কিন্তু আবারও ইসমাঈল(আ) কে ঘরে পেলেন না । তিনি পুত্রবধুর ঘরে ঢুকে ইসমাঈল(আ) সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে, তার স্ত্রী জানালেন, তিনি আমাদের খাদ্যের সন্ধানে বেরিয়ে গেছেন । এক প্রশ্নের জবাবে , পুত্রবধু জানালেন তারা ভাল অবস্থা ও সচ্ছলতার মধ্যে আছেন ৷ এই বলে তিনি আল্লাহ্ র প্রশংসাও করলেন এই সঙ্গে । ইবরাহীম(আ) আলাপ শেষে পুত্রবধুকে বললেন, তোমার স্বামী আসলে, তাকে আমার সালাম বলবে এবং তাকে আমার পক্ষ থেকে হুকুম করবে ,সে যেন তার দরজার চৌকাট বহাল রাখে । অতঃপর ইসমাঈল(আ) বাড়ি আসলেন, স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলেন, কেউ এসেছিলেন কি ? স্ত্রী বললেন, হাঁ , একজন সুন্দর আকৃতির বৃদ্ধ এসেছিলেন । স্ত্রী তাঁর প্রশংসা করলেন । স্ত্রী আরো বললেন , তিনি আপনাকে সালাম বলেছেন আর নির্দেশ দিয়ে গেছেন, যেন আপনি আপনার দরজার চৌকাঠ বহাল রাখেন। এই কথা শুনে ইসমাঈল(আ) বললেন, ইনিই আমার পিতা, আর তুমি হলে চৌকাঠ। তোমাকে স্ত্রী হিসাবে বহাল রাখার নির্দেশ তিনি আমাকে দিয়েছেন ৷
পুনরায় ইবরাহীম(আ) তাদের কাছে আসলেন ।এবং ইসমাঈল(আ) কে যমযমের নিকটস্থ একটি বৃক্ষতলে বসে নিজের তীর মেরামত করতেছেন, দেখতে পেলেন । সাক্ষাত ও কৌশলাদি বিনিময়ের পর ইবরাহীম(আ) বললেন, হে ইসমাঈল ! আল্লাহ্ আমাকে একটি কাজের হুকুম করেছেন । তুমি আমাকে সাহায্য করবে কি ? ইসমাঈল(আ) বললেন, হাঁ , আমি আপনাকে সাহায্য নিশ্চয়ই করব । তখন তিনি বললেন , আল্লাহ্ আমাকে এখানে এর চারপাশ ঘেরাও করে একটা ঘর বানাবার নির্দেশ দিয়েছেন , বলে তিনি উচুঁ টিলাটির দিকে ইশারা করে স্থানটি দেখালেন । তখনি তারা কাবা ঘরের দেয়াল উঠাতে লেগে গেলেন । দেয়াল উচুঁ হয়ে গেলে মশহুর পাথরটি আনলেন এবং এর ওপর দাঁড়িয়ে ইমারত নির্মাণ করতে লাগলেন ………এর পর তাঁরা কাবা ঘরের চারদিকে ঘুরেছিলেন এবং উভয়ে এ দু’আ করছিলেনঃ “ হে আমাদের প্রভু ! আমাদের এ শ্রমটুকু কবুল করে নিন । নিশ্চয় আপনি সব শুনেন ও জানেন ৷ ( সুরাঃ বাকারা, ১২৭ আয়াত ) (বুখারী, হাদীস নং ৩৩৬৪ )
এখানে উল্লেখযোগ্য যে ইসমাঈল(আ) কে দুধ খাওয়া শিশু অবস্থায় মা হাজেরার সঙ্গে নির্বাসিত করা হয়, এবং তিনি যৌবনপ্রাপ্ত হয়ে বিয়ে করা ও তার মা হাজেরার ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত পিতা ইবরাহীম(আ) আর ঐ স্থানে আসেন নাই বলে ঐ বর্ণনা থেকে অনুমিত হয় । পরে ইবরাহীম(আ) মোট ৩ বার এখানে আসলেও মাত্র ১ বারই ইসমাইল(আ)এর সঙ্গে সাক্ষাত হয়,এবং তখনই কা’বা গৃহ পুনঃ নির্মান করেন ।
তাই ইসমাঈল(আ) কে কুরবানি দেওয়ার কোন ঘটনা এই বর্ণনা কারী বর্ণনা করেন নাই এই বর্ণনায় ৷
পবিত্র কুর’আনের ৩৭ নং মক্কী সুরা সাফ্ফাত এর ১০১ নং আয়াতে এক স্থিরবুদ্ধি পুত্রের সুসংবাদ দেওয়া হয় ,এবং ঐ সুরার ১১২নং আয়াতে সুসংবাদ দেওয়া পুত্রের নাম ইসহাক(আ) বলে উল্লেখ করা হয়েছে । আর ঐ সুরার ১০২ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে , “ অতঃপর সে (সন্তান) যখন তার পিতার সাথে কজ করার মত বয়সে উপনীত হলো তখন ইবরাহীম(আ) বললঃ হে আমার বৎস ! আমি স্বপ্নে দেখি যে , তোমাকে আমি যবেহ করছি ...
...
…….” কিন্তু শিশু অবস্থার পরে ইসমাঈল(আ) এর সঙ্গে যখন পুনঃরায় ইবরাহীম(আ) এর সঙ্গে দেখা হয় তখন তিনি বিবাহিত ছিলেন, এখনে উল্লেখিত বর্ণনাকারী ইবনে আব্বাস(রা) বর্ণনা অনুসারে ৷ তাই কখন এবং কিভাবে ঈসলাইল (আ )কে কুরবানী দেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে কোনো বর্ণনা দেয়া হয় নাই এই হাদীসে ৷
তাই বাইবেলে তথ্য না মানলে ও এক্ষেত্রে একটা অস্পষ্টতা থেকেই গেল, অন্ততঃ আমার কাছে ৷ কারণ বাইবেলে ঈসহাক (আ ) কে কুরবানী দেয়ার কথা বলা হয়েছে ৷ কোরানের ৩৭ নং সুরা সাফ্ফাত এর ১১২ নং আয়াতে সুসংবাদ দেয়া পুত্রের নাম ঈসহাক (আ )বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ৷ তাই ব্যাপারটি আমার কাছে অমিমাংসিত থেকে গেল , এই হাদীস অনুসারে এবং সুরা সাফ্ফাতের ১১২নং অনুসারে ৷
তাই ইসমাঈল(আ) কে কুরবানি দেওয়ার কোন ঘটনা এই বর্ণনা কারী বর্ণনা করেন নাই এই বর্ণনায় ৷
পবিত্র কুর’আনের ৩৭ নং মক্কী সুরা সাফ্ফাত এর ১০১ নং আয়াতে এক স্থিরবুদ্ধি পুত্রের সুসংবাদ দেওয়া হয় ,এবং ঐ সুরার ১১২নং আয়াতে সুসংবাদ দেওয়া পুত্রের নাম ইসহাক(আ) বলে উল্লেখ করা হয়েছে । আর ঐ সুরার ১০২ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে , “ অতঃপর সে (সন্তান) যখন তার পিতার সাথে কজ করার মত বয়সে উপনীত হলো তখন ইবরাহীম(আ) বললঃ হে আমার বৎস ! আমি স্বপ্নে দেখি যে , তোমাকে আমি যবেহ করছি ...
...
…….” কিন্তু শিশু অবস্থার পরে ইসমাঈল(আ) এর সঙ্গে যখন পুনঃরায় ইবরাহীম(আ) এর সঙ্গে দেখা হয় তখন তিনি বিবাহিত ছিলেন, এখনে উল্লেখিত বর্ণনাকারী ইবনে আব্বাস(রা) বর্ণনা অনুসারে ৷ তাই কখন এবং কিভাবে ঈসলাইল (আ )কে কুরবানী দেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে কোনো বর্ণনা দেয়া হয় নাই এই হাদীসে ৷
তাই বাইবেলে তথ্য না মানলে ও এক্ষেত্রে একটা অস্পষ্টতা থেকেই গেল, অন্ততঃ আমার কাছে ৷ কারণ বাইবেলে ঈসহাক (আ ) কে কুরবানী দেয়ার কথা বলা হয়েছে ৷ কোরানের ৩৭ নং সুরা সাফ্ফাত এর ১১২ নং আয়াতে সুসংবাদ দেয়া পুত্রের নাম ঈসহাক (আ )বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ৷ তাই ব্যাপারটি আমার কাছে অমিমাংসিত থেকে গেল , এই হাদীস অনুসারে এবং সুরা সাফ্ফাতের ১১২নং অনুসারে ৷
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন