জঙ্গীবাদ ও মৌলবাদের কারণ অনুসন্ধান : ইসলামের ইতিহাসের আলোকে : ( Origin of fundamentalism as per islamic history
ইসলামের ইতিহাসের আলোকে :
বর্তমান বিশ্বে ইসলামি মৌলবাদ
ও জঙ্গীবাদের উথ্থানের
কারণ অনুসন্ধান ,
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ;
ইসলাম
ধর্মের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে অর্থাৎ
৬১০ সালের পর থেকে ইসলাম ধর্ম প্রায় ৬ শত বছর চলেছে মোটামোটি একটি প্রগতিশীল ধারায় ৷ তখন ইসলাম ধর্ম অনেকটা মানবতাবাদী
এবং একটি অসাম্প্রদায়িক
ধারার দিকে অগ্রসর
হচ্ছিল ৷ এই সময়ের মধ্যে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী অনেক চিন্তাশীল ও ইসলামী
দার্শনিকের আবির্ভাব ঘটে ৷ তাঁরা ইসলাম ধর্মকে
আরো সমৃদ্ধ করতে সময় উপযোগী
কিছু নীতি গ্রহণ করেন ৷
সিমেট্রিক অন্য দুই ধর্মেও অনেক পরিবর্তন করা হয়েছে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে এবং মিথ বা মিথোস কে যখন বৈজ্ঞানিক ধারায় যুক্তিবাদী লোগোসো রূপান্তরের পরও ধর্মবিশ্বাস মানুষের মনে যেন অক্ষুন্ন থাকে সে জন্যে ৷ ইসলাম ধর্মে ও এই চেষ্টা করা হয়েছে এর আবির্ভাবের পরবর্তী ছয়শত বছর পর্যন্ত ৷
যেমন ১ . ফিকাহ্ শাস্ত্র ( ইসলামি জুরিসপ্রুডেন্স অর্থাৎ গবেষণা করে ইসলামি আইনের প্রয়োগ করার বিধান ৷ )
সিমেট্রিক অন্য দুই ধর্মেও অনেক পরিবর্তন করা হয়েছে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে এবং মিথ বা মিথোস কে যখন বৈজ্ঞানিক ধারায় যুক্তিবাদী লোগোসো রূপান্তরের পরও ধর্মবিশ্বাস মানুষের মনে যেন অক্ষুন্ন থাকে সে জন্যে ৷ ইসলাম ধর্মে ও এই চেষ্টা করা হয়েছে এর আবির্ভাবের পরবর্তী ছয়শত বছর পর্যন্ত ৷
যেমন ১ . ফিকাহ্ শাস্ত্র ( ইসলামি জুরিসপ্রুডেন্স অর্থাৎ গবেষণা করে ইসলামি আইনের প্রয়োগ করার বিধান ৷ )
২ . ইসলামি সুফিবাদ
এবং ইসলামি অতীন্দ্রিয়বাদ
এর ধারার আবিষ্কার ( সুফিবাদ
হচ্ছে সুন্নি ইসলামের
অতীন্দ্রিয়বাদী ঐতিহ্য ৷ )
৩
, ইসলামিক দর্শন বা ফালসাফাহ্
এর আলোকে ধর্মবিশ্বাসকে
প্রতিষ্ঠা করা ৷ ( ফালাসাফাহ্
ছিল একটি নিগৃঢ ইসলামিক দার্শনিক
আন্দোলন ৷ যা অনুসরণ করে ফালাসাফাহ্
গন কোরানের প্রত্যাদিষ্ট
ধর্ম বিশ্বাসের সাথে
দার্শনিক প্লোটো ও এরিস্টলের গ্রিক
যুক্তিবাদী দর্শনের সঙ্গে একটি সংষ্লেষ
ঘটিয়ে ইসলামি দর্শনকে
সবার কাছে গ্রহণযোগ্য
করে তুলা )
৪ , ইজমাহ্
, অর্থাৎ কোনো আইনি সিদ্ধান্তকে মুসলিম
সম্প্রদায়ের বৈধতা দানকারী
কর্তৃপক্ষের ঐক্যমত প্রতিষ্ঠার
পর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার
বিধান ৷
৫ . ইজতিহাদ
বা ‘ স্বাধীন যুক্তি
প্রয়োগ ’
[ অর্থাৎ
শরীয়াহ্ আইন (শরিয়া আইন হচ্ছে
ইসলামের পবিত্র আইন;) কোরান এবং সুন্নাহ ( রীতি ; নবীর
পরবর্তীদের জন্যে নবীর সহচর ও নবীর পরিবারের সদস্যদের
হাতে সংগৃহীত পয়গম্বর
মুহাম্মদের ( সঃ) স্বভাব ও ধর্মীয়
অনুশীলন করার পদ্ধতি এবং ইহাকে মুসলিমরা
ইসলামি আর্দশিক রীতি মনে করে এবং এই ধারাকে
ব্যক্তি জীবনযাপনে পালনকরা
আবশ্যিক কর্তব্য বলে মনে করে ৷
) ও হাদিস থেকে গৃহীত তথ্যাবলি প্রয়োগ
করে বিভিন্ন পরিস্থিতে
সৃষ্ট ঘটনার সমাধানের
পথ খোঁজা
৷]
তবে চৌদ্দ শতকে অধিকাংশ মুসলিম চিন্তাবিদদের সিদ্ধান্তে ইজতিহাদের দুয়ার বন্ধ ঘোষিত হয় এবং বলা হয় এর পর থেকে পণ্ডিতগণ তাদের নিজস্ব যুক্তিভিক্তিক অন্তর্দৃষ্টিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে অতীতের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের নেয়া সিদ্ধান্তের দৃষ্টান্তের ওপর নির্ভর করতে হবে ৷ কোনো নতুন সিদ্ধান্ত নিতে অর্থাৎ তারা নিজেরা আর কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পরবেন না ৷ তবে শিয়াগণ ইজতিহাদের দুয়ার বন্ধ করেনি ৷
তবে চৌদ্দ শতকে অধিকাংশ মুসলিম চিন্তাবিদদের সিদ্ধান্তে ইজতিহাদের দুয়ার বন্ধ ঘোষিত হয় এবং বলা হয় এর পর থেকে পণ্ডিতগণ তাদের নিজস্ব যুক্তিভিক্তিক অন্তর্দৃষ্টিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে অতীতের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের নেয়া সিদ্ধান্তের দৃষ্টান্তের ওপর নির্ভর করতে হবে ৷ কোনো নতুন সিদ্ধান্ত নিতে অর্থাৎ তারা নিজেরা আর কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পরবেন না ৷ তবে শিয়াগণ ইজতিহাদের দুয়ার বন্ধ করেনি ৷
৬ . মাযহাব
( নির্বাচিত
পথ যা ইসলামি
জুরিসপ্রুডেন্সের ৪টি বৈধ মতবাদের যে কোনো একটি অনুসরণ করা এবং সেই মোতাবক ধর্মের বিধানসমূহ মেনে চলার সংষ্কৃতি ৷ )
অর্থাৎ ইসলাম ধর্মে যতক্ষণ উপরে উল্লেখিত ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করে যে কোনো নতুন সিদ্ধান্ত নেয়ার বিধান কার্যকর ছিল , ততক্ষণ পর্যন্ত ইসলাম ধর্ম সবার কাছে একটি সহনশীল ও গ্রহণযোগ্য ধর্ম হিসেবে স্বীকৃত ছিল ৷
অর্থাৎ ইসলাম ধর্মে যতক্ষণ উপরে উল্লেখিত ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করে যে কোনো নতুন সিদ্ধান্ত নেয়ার বিধান কার্যকর ছিল , ততক্ষণ পর্যন্ত ইসলাম ধর্ম সবার কাছে একটি সহনশীল ও গ্রহণযোগ্য ধর্ম হিসেবে স্বীকৃত ছিল ৷
আমাদের এই উপমহাদেশে পীর ও সুফিবাদীদের
মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের
প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ৷ তাই ইসলাম ধর্ম এই অঞ্চলে অনেকদিন
অসাম্প্রদায়িক ও অরাজনৈতিক
ধর্ম বিশ্বাস হিসেবে
প্রতিষ্ঠিত ছিল ৷ যখনই এই ধারা থেকে ইসলামকে বের করে ধর্মকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করা আরম্ভ হলো , তখন থেকে ইসলাম ধর্ম এই অঞ্চলেও সাম্প্রদায়িক
ধর্মে রূপান্তর ঘটতে শুরু করেছে ৷ নিম্নের
আলোচনায় আমরা দেখবো কিভাবে একটি অসাম্প্রদায়িক ও অনেকটা মানবতাবাদী
ধর্মকে বর্তমান মৌলবাদী
ও জঙ্গীবাদী ধর্মে পরিণত
করা হচ্ছে ৷ কিছু ক্ষমতা লোভী মানুষ
ধর্মের অপব্যবহারের মাধ্যমে এই কাজটি করছে ধর্মের স্বার্থে নয় , করছে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ৷
এই সাম্প্রদায়িকতা ইসলাম ধর্মে প্রবেশের মূল কারণ হচ্ছে ইসলাম ধর্মেকে অতিরিক্তভাবে রাজনীতিকরণ
করে ফেলা ৷ আর ধর্মকে রাষ্ট্রক্ষমতা
দখলের হাতিয়ারে পরিণত করা ৷ তবে ইসলাম ধর্মকে
পিছনের দিকে ফিরে নিয়ে যাওয়ার
জন্যে যে সংস্কারমূলক
পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে সতের শতকে
, তাকে ও এই জন্যে দায়ী করা যায় ৷ অর্থাৎ ইসলাম ধর্মের বর্তমান জঙ্গী ও মৌলবাদী এবং সাম্প্রদায়িক রূপের জন্যে এই দুইটি কারণকে মূল ও
প্রধান কারণ বলে সংশ্লিষ্টরা দায়ী মনে করেন ৷
নিম্নে এর কিছু ঐতিহাসিক পটভূমি
ব্যাখ্যা করা হলো ৷ পূর্বে উপরে উল্লেখিত বিধানসমূহের আলোকে ইসলামের ব্যাখ্যা
করা হত এবং তা সমাজে প্রযোগ করা হত ৷ তাই কোনো সংঘাতের সৃষ্টি হত না ৷ ফলে ইসলাম একটি সর্বযুগব্যাপি উপযোগী ধর্মে পরিণত হতে যাচ্ছিল
৷ কারণ তখন কোরানের
কোনো আয়াতকে বা সুন্নাহ্
র কোনো
রীতিকে প্রয়োগ করার আগে ঐ সুরা বা আয়াত নাজিলের প্রেক্ষাপট
বা শানেনজুল বিবেচনা
করে তাহা এই সময়ে প্রয়োগের
উপযোগী কি না তা পরীক্ষা করে দেখার পর , যদি তা প্রয়োগের উপযুক্ত বিবেচিত হত তবেই
তা প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হত ৷ সুন্নাহ্
র ব্যাপারে ও একই পদ্ধতি
মেনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হত ৷
যার জন্যে হাজার বছর পূর্বে সমাজে প্রচলিত রীতি নীতির সঙ্গে হাজার বছর পরের সামাজিক রীতি নীতি ও ব্যবস্থার সঙ্গে ধর্মের কোনো সংঘাতের সৃষ্টি হত না ৷ কোরানের অনেক আয়াত সময়ের প্রক্ষাপটে এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে নাজিল হয়েছে যার প্রয়োগ পরবর্তিকালে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে , একথা মাথায় রেখেই তখন কোরানের আদেশ ও নির্দেশ পালন করা হত ৷ কিছু আয়াতের প্রয়োগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আপনা আপনিই সামাজিক কারণে ৷ যেমন ক্রীতদাসীদের সঙ্গে গৃহকর্তার যৌনসম্পর্ক স্থাপন এবং সুন্নিদের মধ্যে মোতাবিয়ের প্রথা বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি ৷ তাই যুগ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম এবং প্রগতিশীল ও সময় উপযোগী ধর্ম হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠছিলো ৷ আমাদের এই অঞ্চলে ইসলাম এখনও শান্তির ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত আছে ৷ ইসলাম ধর্মকে যুগের সঙ্গে খাপ খাইয়ে পরিবর্তনের এই ধারা এখন পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে নিশ্চয় এই ধর্মটি এতদিনে সম্পূর্ণ মানবিক ও গণতান্ত্রিক ধর্মে রূপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল ৷
যার জন্যে হাজার বছর পূর্বে সমাজে প্রচলিত রীতি নীতির সঙ্গে হাজার বছর পরের সামাজিক রীতি নীতি ও ব্যবস্থার সঙ্গে ধর্মের কোনো সংঘাতের সৃষ্টি হত না ৷ কোরানের অনেক আয়াত সময়ের প্রক্ষাপটে এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে নাজিল হয়েছে যার প্রয়োগ পরবর্তিকালে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে , একথা মাথায় রেখেই তখন কোরানের আদেশ ও নির্দেশ পালন করা হত ৷ কিছু আয়াতের প্রয়োগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আপনা আপনিই সামাজিক কারণে ৷ যেমন ক্রীতদাসীদের সঙ্গে গৃহকর্তার যৌনসম্পর্ক স্থাপন এবং সুন্নিদের মধ্যে মোতাবিয়ের প্রথা বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি ৷ তাই যুগ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম এবং প্রগতিশীল ও সময় উপযোগী ধর্ম হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠছিলো ৷ আমাদের এই অঞ্চলে ইসলাম এখনও শান্তির ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত আছে ৷ ইসলাম ধর্মকে যুগের সঙ্গে খাপ খাইয়ে পরিবর্তনের এই ধারা এখন পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে নিশ্চয় এই ধর্মটি এতদিনে সম্পূর্ণ মানবিক ও গণতান্ত্রিক ধর্মে রূপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল ৷
কিন্তু হঠাৎ করে ১৩ শতকের দিকে প্রথমে
ইসলাম ধর্মের এই প্রগতিশীল
ধারাকে বাধাগ্রস্থ
করা আরম্ভ হয় ৷ ইসলামি
শাসক , খলিফা এবং সুলতানদের ইসলাম বিরোধী কার্যক্রম
বিবেচনায় না নিলে একথা বলা যায় যে , ইসলাম
ধর্মে বিশ্বাসী সাধারণ মানুষদের
অধিকাংশই ইসলামের
প্রগতিশীল পরিবর্তনের ধারার পক্ষেই ছিলেন ৷ তবে সবযুগে সবকালে
সবধর্মেই কিছু অন্ধবিশ্বাসী
সমর্থক থাকে ৷ ইসলাম ধর্মের ক্ষেত্রেও
এর ব্যতিক্রম ছিল না ৷
১৩
শতকের দিকে ইসলামের
এই ক্রমপ্রগতিশীল অগ্রসরমান
ধারার বিরুদ্ধে অবস্থান
নিয়ে প্রথমে ঈবনে তাইমিয়াহ্ ( ১২৬৩-১৩২৮ )
এর বিরুদ্ধে আন্দোলন আরম্ভ করেন ৷ তিনি
ইসলামে প্রতিষ্ঠিত সুফিবাদের
বিপরিতে অবস্থান নিয়ে ফতওয়াহ্ ( ইসলামি আইনের
ক্ষেত্রে ধর্মীয় পণ্ডিতদের
মত বা সিদ্ধান্ত
৷ ) জারী করে বলেন যে , প্রকৃত মুসলিমদের উচিত কোরান
ও সুন্নাহ্ র প্রাথমিক
সময়ের মৌলনীতিমালাতে প্রত্যাবর্তন করা এবং শুধু সেই প্রাথমিক ধারা অনুসারে কোরান ও সুন্নাহ্ র আক্ষরিক অর্থের সরাসরি ব্যাখ্যা মেনে জীবনযাপন করা ৷ তা না করলে ইসলাম অন্যান্য মত তার মৌলিকত্ত্ব হারিয়ে ফেলবে ৷ অর্থাৎ ইসলাম ধর্মকে কোনোভাবেই যুগপযোগী করা উচিত হবে না ৷ তিনি তার এই নতুন ধারার পক্ষে জনমত গঠনের চেষ্টাও আরম্ভ করেন ৷
যারা তার এই ফাতওয়া মানবে না তাদেরকে ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগকারী হিসেবে গণ্য করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে বলে তিনি তার এই ধারায় বিশ্বাসীদের আদেশ প্রদান করেন ৷ কিন্তু তখনকার শাসকগোষ্ঠী এবং তার এই ফতওয়া মানতে নারাজ অন্য ইসলামী পণ্ডিতরা তার এই ধারার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং তাকে ইহা প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন ৷ তিনি এতে সম্মত না হওয়ায় এবং তার এই ধারার আন্দোলন বন্ধ করতে তাকে দামাস্কাসের এক কারাগারে করারুদ্ধ করা হয় এবং তিনি এই কারারুদ্ধ অবস্থায় ইন্তেকাল করলে তার এই পেছনের দিকে ধর্মকে ফিরিয়ে নেয়ার প্রয়াস সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায় ৷ এর পর সতের শতক পর্যন্ত এধারার পক্ষে কাউকে দাঁড়াতে দেখা যায় নি ৷
যারা তার এই ফাতওয়া মানবে না তাদেরকে ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগকারী হিসেবে গণ্য করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে বলে তিনি তার এই ধারায় বিশ্বাসীদের আদেশ প্রদান করেন ৷ কিন্তু তখনকার শাসকগোষ্ঠী এবং তার এই ফতওয়া মানতে নারাজ অন্য ইসলামী পণ্ডিতরা তার এই ধারার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং তাকে ইহা প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন ৷ তিনি এতে সম্মত না হওয়ায় এবং তার এই ধারার আন্দোলন বন্ধ করতে তাকে দামাস্কাসের এক কারাগারে করারুদ্ধ করা হয় এবং তিনি এই কারারুদ্ধ অবস্থায় ইন্তেকাল করলে তার এই পেছনের দিকে ধর্মকে ফিরিয়ে নেয়ার প্রয়াস সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায় ৷ এর পর সতের শতক পর্যন্ত এধারার পক্ষে কাউকে দাঁড়াতে দেখা যায় নি ৷
ইবনে
তাঈমিয়ার ( ১২৬৩-১৩২৮) মৃত্যুর
প্রায় ৪ শত বছর পর তার এক উত্তর সূরির মুহাম্মদ ইবনে আব্দ আল- ওয়াহ্হাব নামক এক সংষ্কারকের আবির্ভাব
হয় ইসলামিক বিশ্বে
৷ তিনি শুধু ধর্মীয় নেতা ছিলেন না , ছিলেন একজন কৌশলী রাজনৈতিক
ব্যক্তিত্ব ৷ তাই তিনি তাইমিয়ার
মত সরাসরি ধর্মীয়
সংস্কারের আন্দোলনের দিকে অগ্রসর না হয়ে প্রথমে
তিনি রাজনীতিতে যোগদান
করেন এবং তার একদল সমর্থনকারী
সৃষ্টি করেন ৷ তার মূল লক্ষ ছিল রাষ্ট্র ক্ষমতা
দখল করে ধর্মীয়
সংস্কার করে তার নিজের পছন্দমত পথে ধর্মকে পরিচালিত করা এবং অন্যদেরকেও তাঁর এই ধারা মেনে নিতে বাধ্য করা , যাতে কেউ এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে
না পারে ৷ তিনিও ইসলাম ধর্মকে , ধর্মের আবির্ভারের প্রাথমিক
যুগের মৌলবাদী ধারায় ফিরিয়ে নিতে দৃঢ সংকল্পবদ্ধ ছিলেন ৷ তিনি তার এই ধর্মীয় সংস্কারের মাধ্যমে দীর্ঘদিন
রাষ্ট্রক্ষমতায় ঠিকে থাকতে পারবেন
বলেও মনে করতেন ৷
মুহাম্মদ ইবনে আবদ আল-ওয়াহ্হাব
( ১৭০৩-৯২ ) ছিলেন একজন ধর্ম সংস্কারক
এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৷ তিনি ও তার অনুসারীরা
তার রাজনীতির এক পর্যায়ে পৌঁছার পর সময় বুঝে এবং পরিস্থিতি কিছুটা তাদের অনুকুলে আসলে তিনি তার দলবল নিয়ে ইসলামী সাম্রাজ্য ইস্তাম্বুল
থেকে বিচ্ছিন্ন হতে সক্ষম হন ৷
ইস্তাম্বুল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তিনি আরব ও পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে এক সল্পমিয়াদী রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে ও সক্ষম হন ৷ রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে তিনি ইবনে তাঈমিয়াহ্ র ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনেন এবং ঐ ঐতিহ্য অনুযায়ী তিনি ধর্মের টিপিক্যাল সংস্কার আরম্ভ করেন ৷ আর এর সঙ্গে তার নিজের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক ধারাকেও যুক্ত করেন ৷
ফলে তিনি দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাদী এবং প্রতিষ্ঠিত ইসলাম ধর্মের তখনকার প্রচলিত ধারার বিপরিতে অবস্থান নেন ৷ তিনি ইসলামকে তার ধর্মীয় রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে গণ্য করতেন ৷ তিনি কোরান ও সুন্নাহ্ কে ইসলামের প্রাথমিক মৌলবাদী অবস্থায় ফিরিয়ে নেন ৷ এবং ইহা কার্যকর করতে গিয়ে গত ১২/১৩ শত বছরে ইসলাম ধর্মের যে সব প্রগতিশীল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল তার সবকটি বাতিল করে দেন ৷ অর্থাৎ তিনি ইসলামের মধ্যযুগীয় ফিকাহ্ , অতীন্দ্রিয়বাদ , ইসলামিক ফালসাফাহ্ ( ইসলামিক দর্শন ) মাযহাব ইত্যাদি যাহা ইসলামের প্রাথমিক অবস্থার পর গড়ে উঠেছিল তাহা সব বাতিল ঘোষণা করে তার নিজের প্রতিষ্ঠিত ধারাকে কার্যকর করেন ৷
তখনকার অটোমান সুলতানগণ যেহেতু প্রকৃত ইসলাম সম্পর্কে তাঁর ফতওয়া বা ভাষ্য মেনে নেননি ৷ তাই আব্দ আল-ওয়াহ্হাব সুলতানদের এবং তাদের সমর্থনকারীদের ইসলাম ধর্মত্যাগী বলে ঘোষণা দিয়ে তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার যোগ্য বলে দাবী করে বসেন ৷ তার এই বিশ্বাস সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য না হলেও সপ্তম শতাবদীতে ইসলামের পদার্পণের সময় থেকে এই প্রথম ইসলামী বিশ্বে ইসলামী আদর্শের উপর ভিত্তি করে একটি আলাদা ইসলামী ধর্ম বিশ্বাসের সৃষ্টি হয় ৷ যাকে পরবর্তীতে বর্তমান বিশ্বের ইসলামী মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদী ধারার উৎসের মূল সূত্র হিসেবে গণ্য করা হয় ৷ তাই মৌলবাদীরা তাঁর আগ্রাসী কৌশল সমূহের কিছু কিছু ধারা বর্তমানে (মৌলবাদী ও জঙ্গীবাদীরা ) গ্রহণ করে ব্যবহার করছে আর এরসঙ্গে মৌলবাদী ও জঙ্গীবাদীদের আরো অনেক নতুন উদ্বোধন করা কৌশল এর সঙ্গে যুক্ত করেছে ৷
ইস্তাম্বুল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তিনি আরব ও পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে এক সল্পমিয়াদী রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে ও সক্ষম হন ৷ রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে তিনি ইবনে তাঈমিয়াহ্ র ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনেন এবং ঐ ঐতিহ্য অনুযায়ী তিনি ধর্মের টিপিক্যাল সংস্কার আরম্ভ করেন ৷ আর এর সঙ্গে তার নিজের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক ধারাকেও যুক্ত করেন ৷
ফলে তিনি দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাদী এবং প্রতিষ্ঠিত ইসলাম ধর্মের তখনকার প্রচলিত ধারার বিপরিতে অবস্থান নেন ৷ তিনি ইসলামকে তার ধর্মীয় রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে গণ্য করতেন ৷ তিনি কোরান ও সুন্নাহ্ কে ইসলামের প্রাথমিক মৌলবাদী অবস্থায় ফিরিয়ে নেন ৷ এবং ইহা কার্যকর করতে গিয়ে গত ১২/১৩ শত বছরে ইসলাম ধর্মের যে সব প্রগতিশীল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল তার সবকটি বাতিল করে দেন ৷ অর্থাৎ তিনি ইসলামের মধ্যযুগীয় ফিকাহ্ , অতীন্দ্রিয়বাদ , ইসলামিক ফালসাফাহ্ ( ইসলামিক দর্শন ) মাযহাব ইত্যাদি যাহা ইসলামের প্রাথমিক অবস্থার পর গড়ে উঠেছিল তাহা সব বাতিল ঘোষণা করে তার নিজের প্রতিষ্ঠিত ধারাকে কার্যকর করেন ৷
তখনকার অটোমান সুলতানগণ যেহেতু প্রকৃত ইসলাম সম্পর্কে তাঁর ফতওয়া বা ভাষ্য মেনে নেননি ৷ তাই আব্দ আল-ওয়াহ্হাব সুলতানদের এবং তাদের সমর্থনকারীদের ইসলাম ধর্মত্যাগী বলে ঘোষণা দিয়ে তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার যোগ্য বলে দাবী করে বসেন ৷ তার এই বিশ্বাস সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য না হলেও সপ্তম শতাবদীতে ইসলামের পদার্পণের সময় থেকে এই প্রথম ইসলামী বিশ্বে ইসলামী আদর্শের উপর ভিত্তি করে একটি আলাদা ইসলামী ধর্ম বিশ্বাসের সৃষ্টি হয় ৷ যাকে পরবর্তীতে বর্তমান বিশ্বের ইসলামী মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদী ধারার উৎসের মূল সূত্র হিসেবে গণ্য করা হয় ৷ তাই মৌলবাদীরা তাঁর আগ্রাসী কৌশল সমূহের কিছু কিছু ধারা বর্তমানে (মৌলবাদী ও জঙ্গীবাদীরা ) গ্রহণ করে ব্যবহার করছে আর এরসঙ্গে মৌলবাদী ও জঙ্গীবাদীদের আরো অনেক নতুন উদ্বোধন করা কৌশল এর সঙ্গে যুক্ত করেছে ৷
ওয়াহ্হাবীবাদ একটা কিছু পরিবর্তিত
রূপ আজও সৌদি আরবে অনুসৃত হচ্ছে যা শুধু কোরানের
আক্ষরিক অর্থের ব্যাখ্যা এবং ইসলামের
প্রাথমিক যুগের ইসলামী
ট্র্যাডিশনভিত্তিক নিয়ম কানুন এর ওপর ভিত্তি করে ইসলাম ধর্মকে
অনুসরণ করা হয় ৷ তবে এর
সঙ্গে রাজতন্ত্রটাকে যুক্ত করা হয়েছে শাসক শ্রেণীর ব্যক্তি
স্বার্থে ৷
অন্যদিকে জঙ্গী ও মৌলবাদীরা ওয়াহ্হাবীবাদের
কিছু পরিতক্ত নীতিকে
নতুন ভাবে গ্রহণ করেছে এবং এর ভূল ব্যাখ্যার মাধ্যমে
কম শিক্ষিত এবং একমূখি শুধু ধর্মীয় শিক্ষায়
শিক্ষিতদেরকে বিভিন্ন কৌশলে এবং আর্থিক
সহায়তা দিয়ে তাদের মস্তিষ্কে অন্ধ ধর্ম বিশ্বাসের ভাইরাস স্থাপন
করতে সক্ষম হয়েছে ৷ এই সব অন্ধ বিশ্বাসীদের ধর্মের
যুদ্ধে বা আত্মঘাতী জঙ্গী আক্রমনে অৎশ নিয়ে ইন্তেকাল করলে শহীদ হয়ে সরাসরি আখেরাতের
বিচারের আগেই স্বর্গবাসী
হয়ে গিয়ে স্বর্গের
যাবতীয় সুবিধা প্রাপ্ত
হয়ে সূখে শান্তিতে সেখানে অনন্তকাল
বসবাস করতে থাকবে আর জীবিত থাকলে
গাজী হয়ে অঢেল সম্পদ ও সম্মানের
অধকারী
হবে এবং মৃত্যুর
পর সরাসরি বেহেস্তে চলে যাবে ৷
এই রকম
নানাবিধ মিথ্যা আশা দিয়ে কিছু লোককে বিপথগামী
করে মৌলবাদীরা ব্যবহার
করছে ৷ তাদের মূল উদ্দেশ্য
রাষ্টক্ষমতা দখল করা সাধারণ
মানুষের ধর্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে
৷ আর তারা সাধারণ মানুষকে বুঝায় যে , ইবনে তাঈমিয়াহ্ এবং আব্দ আল-ওয়াহ্হাব
তাদেরকে এই শিক্ষাই
দিয়ে গেছেন ইসলাম ধর্মের সংস্কারের নামে , আর এই ধারাই ইসলামের মূল ধারা ৷ আর কৌশলে তারা প্রচার করে বলে যে ইসলামের এই ধারাই সঠিক এবং মৌলিক এবং আসল ইসলামিক ধারা , যা কিছু শিয়া বুদ্ধিজিবীরা নষ্ট করে ফেলেছিল ৷
তারা এখন ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদের মধ্যে এই বিশ্বাস প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে ৷ মৌলবাদীরা এখন হাজার বছরের ক্রমপ্রগতিশীল ইসলাম ধর্মকে প্রাথমিক মৌলবাদের ধারায় আবার ফিরিয়ে নিতে চাচ্ছে ৷ পবিত্র ইসলাম ধর্মগ্রন্থকে তারা শুধু আক্ষরিক অর্থে ব্যাখ্যা করে তার প্রয়োগ কার্যকর করতে চাচ্ছে ৷ যাতে ধর্মকে তারা তাদের রাজনৈতিক এবং রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে ৷ কিছু কিছু অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল ও এখন মৌলবাদীদের ভোট প্রাপ্তির আশায় মৌলবাদীদেরকে রাজনৈতিকভাবে সহায়তা করছে ৷ তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক জোট বেধে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে চাচ্ছে ৷ অন্যদিকে যারা বর্তমানে রাষ্ট্রক্ষমতায় আছে তারাও কৌশলে মৌলবাদীদেরকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে ক্ষমতায় তাদের মেয়াদ পর্যন্ত ঠিকে থাকতে চাচ্ছে ৷
আর মৌলবাদীরা অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলকে কৌশলে ব্যবহার করে তাদের মৌলবাদী ধারার রাজনীতিকে শক্তিশালী করছে , ক্ষেত্রবিশেষে তারা আর্থিক সহায়তা বা ঘুষ দিয়ে হলেও তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ আদায় করে নিচ্ছে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে ৷
মোটামোটি ইসলাম ধর্মকে বর্তমান জঙ্গী ও মৌলবাদী ধারায় রূপান্তরের ইহাই মূল ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক কারণ ৷ তবে এগুলো একমাত্র কারণ নয় ৷ অন্যান্য কিছু কারণ ও দিন দিন এই সব কারণের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে , যুক্ত হচ্ছে মৌলবাদীদের নতুন নতুন উদ্ভাবিত রাজনৈতিক কৌশল ৷ মৌলবাদীদের আশা এই ভাবে বাংলাদেশে তারা একসময় রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে সক্ষম হবে ৷ যে ভাবে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলো দূর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়েছে সে ধারা থেকে মুক্তি পেতে দেশের মানুষ একপর্যায়ে এসে মৌলবাদকে মেনে নিয়ে তাদেরকেই রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চাইবে ৷ এই আশাই এখন শুনানো হচ্ছে যারা মৌলবাদকে সমর্থন করে তাদেরকে ৷ তবে তা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনকারী একটি দেশে কতটুকু সম্ভব হবে তা ভবিষ্যতই নির্ধারণ করবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন ৷
তারা এখন ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদের মধ্যে এই বিশ্বাস প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে ৷ মৌলবাদীরা এখন হাজার বছরের ক্রমপ্রগতিশীল ইসলাম ধর্মকে প্রাথমিক মৌলবাদের ধারায় আবার ফিরিয়ে নিতে চাচ্ছে ৷ পবিত্র ইসলাম ধর্মগ্রন্থকে তারা শুধু আক্ষরিক অর্থে ব্যাখ্যা করে তার প্রয়োগ কার্যকর করতে চাচ্ছে ৷ যাতে ধর্মকে তারা তাদের রাজনৈতিক এবং রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে ৷ কিছু কিছু অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল ও এখন মৌলবাদীদের ভোট প্রাপ্তির আশায় মৌলবাদীদেরকে রাজনৈতিকভাবে সহায়তা করছে ৷ তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক জোট বেধে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে চাচ্ছে ৷ অন্যদিকে যারা বর্তমানে রাষ্ট্রক্ষমতায় আছে তারাও কৌশলে মৌলবাদীদেরকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে ক্ষমতায় তাদের মেয়াদ পর্যন্ত ঠিকে থাকতে চাচ্ছে ৷
আর মৌলবাদীরা অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলকে কৌশলে ব্যবহার করে তাদের মৌলবাদী ধারার রাজনীতিকে শক্তিশালী করছে , ক্ষেত্রবিশেষে তারা আর্থিক সহায়তা বা ঘুষ দিয়ে হলেও তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ আদায় করে নিচ্ছে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে ৷
মোটামোটি ইসলাম ধর্মকে বর্তমান জঙ্গী ও মৌলবাদী ধারায় রূপান্তরের ইহাই মূল ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক কারণ ৷ তবে এগুলো একমাত্র কারণ নয় ৷ অন্যান্য কিছু কারণ ও দিন দিন এই সব কারণের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে , যুক্ত হচ্ছে মৌলবাদীদের নতুন নতুন উদ্ভাবিত রাজনৈতিক কৌশল ৷ মৌলবাদীদের আশা এই ভাবে বাংলাদেশে তারা একসময় রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে সক্ষম হবে ৷ যে ভাবে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলো দূর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়েছে সে ধারা থেকে মুক্তি পেতে দেশের মানুষ একপর্যায়ে এসে মৌলবাদকে মেনে নিয়ে তাদেরকেই রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চাইবে ৷ এই আশাই এখন শুনানো হচ্ছে যারা মৌলবাদকে সমর্থন করে তাদেরকে ৷ তবে তা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনকারী একটি দেশে কতটুকু সম্ভব হবে তা ভবিষ্যতই নির্ধারণ করবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন ৷
( সূত্র ; ক্যারেন আর্মস্ট্রং
ইসলাম
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
অনুবাদ ; শওকত হোসেন )
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন