চার্টার অব মদিনা বা মদিনা সনদ প্রসঙ্গে ; -
আজকাল রাজনৈতিক
নেতাদের , বিশেষ
করে , আওয়ামী লীগের
প্রধান শেখ হাসিনাকে প্রায়ই তার বক্তৃতায়
মদিনা সনদ প্রসঙ্গে
কথা বলতে দেখা যায় ৷ তিনি আগে মাঝে মধ্যে কোরান
ও সুন্নাহ্ র ভিত্তিতে
রাষ্ট্র পরিচালনার কথা ও বলতেন
৷ যখনই দেশে
কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠীর
কার্য্যকলাপ এবং দাবীদাওয়া বেড়ে যায় এবং সরকারের ওপর চাপের সৃষ্টি
হয় তখনই তিনি
দেশ পরিচালনায় মদিনা
সনদ এর উল্লেখ
করলেই ঐ সব ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর
আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে ৷ বোধহয় মদিনা
সনদে এমন কিছু
আছে , যার জন্য ধর্মীয়
ও সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক
গোষ্ঠীর মুখে কালি
পড়ে ? মদিনা সনদে এমন
কি
আছে ? তার একটি সংক্ষৃপ্ত
বর্ণনা দেয়ার প্রয়াসে
এই লেখার সূত্রপাত
৷
মহানবী হজরত
মোহাম্মদ ( স : ) ৫৭০ সালে , আজ থেকে
প্রায় ১৪১৪ বছর আগে , পবিত্র মক্কা
নগরীতে জন্ম গ্রহন
করেন এবং জন্মের
পর পর তিনি তাঁর পিতা
ও মাতাকে হারিয়ে
এতিম হয়ে পড়েন ৷ তখন তার দাদা
তাকে লালন পালন
করে বড় করে তুলেন ৷ প্রায়
২৫
বছর বয়সে তিনি ৪০ বছর বয়সের
বিধবা ও ব্যবসায়ি
খাদিজার সঙ্গে বিবাহ
বন্ধনে আবদ্ধ হন ৷ আর ৪০ বছর বয়সে
, ৬১০
সালে প্রথম আল্লাহ্ র
তরফ থেকে ওহী প্রাপ্তির মাধ্যমে
নবু্য়্যতী অর্জন
করেন ৷ এর প্রায়
দুই বছর পর থেকে মক্কা
নগরীতে জনসম্মূখে তার উপর নাজীলকৃত ইসলাম ধর্ম
প্রচার করা আরম্ভ করেন
৷
প্রথমে তাঁর
দাদা আবদুল মোতাল্লেব
এর আশ্রয়ে ও পরে চাচার
আশ্রয়ে থেকে এবং সর্বশেষে স্ত্রী
বিবি খাদিজার আশ্রয়
গ্রহন করে ইসলাম
ধর্মমত প্রচার করতে
থাকেন ৷ তখন মক্কার প্রচলিত
নিয়ম ছিল যে কেউ নতুন কিছু
করতে হলে , ক্ষমতাবান কেউ তাকে আশ্রয়
ও প্রশ্রয় দিতে
হত এবং সব ধরণের সাহায্য
ও সহায়তা ও প্রদান করতে
হত ৷
কিন্তু প্রথমে
তাঁর দাদা ইন্তেকাল
করলে চাচা আবু তালেবের আশ্রয়ে
থেকে ধর্ম প্রচার
করতে ছিলেন । হঠাৎ করে তার ইন্তেকালের পর স্ত্রী বিবি খাদিজার আশ্রয়ে
চলে যান এবং তার ইসলাম
ধর্মের আদর্শ প্রচার
করতে থাকেন ৷ তখন মক্কায়
বিবি খাদিজা ও ক্ষমতাবান ব্যবসায়ী মহিলা
হিসেবে পরিচিত ছিলেন
৷ কিন্তু এক পর্যায়ে এসে একে একে তাঁর
দাদা , চাচা
ও স্ত্রী ইন্তেকাল
করলে মক্কায় তাঁর
আর কোনো ক্ষমতাবান
আশ্রয় দাতা অবশিষ্ট
থাকলো না , যে তাকে সাহসের
সঙ্গে আশ্রয় দিতে
পারে ৷ তখন যারা তাঁর
প্রচারিত ইসলাম ধর্ম
গ্রহন করতে চায়নি , সে সব অবিশ্বাসীরা তাকে
সীমাহীন অত্যাচার আরম্ভ
করলে তিনি নিরাপদ
কোনো স্থানে গিয়ে
ইসলাম ধর্ম প্রচারে
মনোনিবেশ করতে আগ্রহী
হয়ে উঠেন ৷
এই সময়ে
কয়েকজন মদিনাবাসী হজ্বের মৌসুমে ( তখনও হজ্বের প্রচলন
ছিল , কিন্তু হজ্ব করার নিয়মাবলী
ভিন্ন ছিল , মহানবী
(স: ) মক্কা জয়ের
পর আগের পদ্ধতিকে
পরিবর্তন করে হজ্ব পালনের বর্তমান নিয়মাবলীর পর্যায়ে
এনেছেন ) হজ্ব পালন করতে মক্কা নগরে
গমন করেন ৷ তখন তারা
লোক মুখে মহানবী
( স: ) এর নাম আর তাঁর নবু্য়্যতী প্রাপ্তির
খবর সহ তাঁর ইসলাম ধর্ম প্রচারের সংবাদ পেয়ে যান ৷
তখন তারা ইসলাম
ধর্মে বিশ্বাস স্থাপন
করেন আর গোপনে মোহাম্মদ
( সঃ ) এর সঙ্গে
সাক্ষাত করেন এবং তাঁর প্রতি
আনূগত্য প্রকাশ করেন
এবং তাঁকে তারা মদিনায়
হিজরত করতে অনুরোধ
করেন ৷ তারা আরো বলেন যে তিনি যদি মদিনায় গমন করেন , তবে তারাসহ মদিনাবসীরা তাঁর
প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থার
করতে পারবেন এবং তা করার প্রতিশ্রুতি ও দেন ৷ মদিনায়
তখন বিভিন্ন গোত্র
ও সম্প্রদায়ের মধ্যে
প্রায়ই যুদ্ধ
ও হানাহানি লেগেই
থাকতো ৷ মদিনাতে
তখন শক্তিশালী গোত্র
বনু আউস এবং বনু খাযবামের
মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে যুদ্ধ ও অশান্তি চলে আসছিলো এবং দিন দিন এর ব্যাপকতা
বৃদ্ধি পাচ্ছিল ৷
তাই মদিনা
থেকে আগতদের ধারণা
হয়েছিলো যে কোনো
তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতিতে মদিনায় বিদ্যমান
তখনকার যুদ্ধ , মারামারি ও বিবাদের অবসান হতে পারে ৷ তাই
তারা নবীর বিপদে
তাঁর পাশে দাঁড়ানোর
আশ্বাস দিয়ে তাকে মদিনাতে হিজরতের অনুরোধ
করেন ৷
এক সময় যখন
মক্কায় নবীজির অবস্থান করা অসম্ভব হয়ে পড়ে তখন তিনি
তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে
পরামর্শ করে মক্কা
ত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহন
করেন এবং কিছু
নাটকিয়তার মধ্যে দিয়ে
গোপনে মক্কা ত্যাগ
করে প্রায় ১৫ দিন পায়ে
হেঁটে এবং লোকচক্ষু এড়িয়ে ২৯৬ মাইল দূরে
মদিনার উপকণ্ঠে কু’বা
নামক উপস্থিত হন ৷
পরবর্তীতে মহানবীসহ
তাঁর সঙ্গী ও সাথীরা মিলে মদিনা মনোয়ারার কু’বায় বসতী
স্থাপন করেন এবং একটি মসজিদ
স্থাপন করেন , যা বর্তমানে
মসজিদুন নববী নামে
খ্যাত হয়েছে ৷
মোহাম্মদ ( সঃ )
ধীরে ধীরে কু’বায় মসজিদ
কেন্দ্রিক একটি স্বাধীন
নগর রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা
করেন , আর যা কয়েক বছরের মধ্যেই
একটি পূর্নাঙ্গ কল্যাণমূলক
রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পরবর্তি কয়েক
বছরে ইহা ইয়ামেন
থেকে দামেস্ক পর্যন্ত
বিস্তৃতি লাভ করে ৷
তবে প্রাথমিক
পর্যায়ে এই নগর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সেখানে
স্থানীয়ভাবে বসবাসকারী মদিনার
ইয়াহুদী ধর্ম অনুসারী
ও ইসলামে
বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসী সহ এ অঞ্চলের
অধিবাসী যারা একে অন্যের সঙ্গে
সব সময়ে যুদ্ধে
লিপ্ত থাকতো , সে সব সম্প্রদায়ের
এবং গোত্রের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা
ও শলাপরামর্শ শেষে
তাদের সকলের সম্মতি
নিয়ে ঐ নগর রাষ্ট্র পরিচালনার
জন্যে নীতিমালার আকারে যে চার্টার অব এক্ট ( যা বর্তমান কালের
শাসনতন্ত্রের অনুরূপ ) প্রণয়ন
করেন তাতে ঐ অঞ্চলে বসবাসরত
সকল ধর্ম , বর্ণ , সম্প্রদায় ও গোত্রের নেতৃস্থানীয়
ব্যক্তিগণ নবীজির
সঙ্গে সাক্ষর
করেন এবং তা অক্ষরে
অক্ষরে মেনে চলতে
বাধ্য থাকবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেন ৷ সেই চার্টার
অব এক্টকেই চার্টার অব মদিনা বা মদিনা সনদ বলা হয় ৷ ইসলামী
বিশ্বে এই মদিনা
সনদকে পৃথিবীর ইতিহাসে
সর্বপ্রথম লিখিত শাসনতন্ত্র
হিসেবে গণ্য করা হয় ৷ এ ছাড়াও
মদিনা সনদকে ইসলাম
ধর্মের বিশ্বাসীরা বিশ্বমানবের
ইতিহাসে প্রথম
লিখিত চার্টার অব লিবার্টি বা মানুষের স্বাধীনতার
সনদ নামে অবিহিত
করে থাকেন ৷ কারণ এই সনদের ধারা-উপধারা
সহ মোট ৫৭টি ধারার বা এক্টের আওতাভূক্ত অঞ্চলে স্থানীয় অধিবাসী যারা বিভিন্ন
ধর্মের , গোত্রের এবং বিশ্বাসী
ও অবিশ্বাসী সকলে এই সনদ মানতে বাধ্য
ছিল । আর ক্ষেত্রবিশেষে এই সনদের বিপক্ষে
অবস্থান নিয়ে কেউ শান্তির পরিপন্থি
যে কোনো কার্যকলাপে
জড়িয়ে গেলে তা দন্ডনীয় অপরাদ
হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির
আওতায় আনার ও ব্যবস্থা ছিলো সনদের বিভিন্ন
ধারায় ৷
এ সনদের
সারমর্মের কিছু এরকম যে
, এ সনদের শর্ত ভঙ্গ করে কেউ যদি দুষ্কৃতিকারীদের সাহায্য
করে বা আশ্রয়
দান করে , তবে ইসলাম ধর্মে
বিশ্বাসীদের জন্যে বরাদ্ধ
ছিলো আল্লাহ্ র
গযব এবং যা রোজ হাসরের
দিন সে আল্লাহ্ র
ঐ আজাবে নিপতিত
হবে ৷ (
মানুষ দিতে পারে এই রকম কোনো শাস্তির
উল্লেখ না করে তা আল্লাহ্
র উপর
ছেড়ে দেয়া হয়েছে
) তবে বিশ্বাসীরা
কিছু অপরাধ করে তার দোষের জন্যে ক্ষতিপূরণ দিতে
চাইলে তার অপরাধ খন্ডিত হবে না
, এরকম অনেকগুলো ব্যাপার
এই সনদের বিভন্ন
ধারায় বিদ্যমান ছিল ৷ আবার অবিশ্বাসীদের অপরাদের
শাস্তির পরিমাণ কিছুটা
আলাদা এবং ভিন্ন ছিল তাদের সামাজিক নিয়ম ও বিশ্বাস অনুসারে ইত্যাদি ৷
আমাদের বর্তমান
সামাজিক অবস্থার তুলনায়
তখনকার সমাজব্যবস্থা কত পশ্চাদপদ ছিলো
, তবুও মদিনা
সনদ যে ভাবে প্রণয়ন করা
হয়েছিলো তাতে দেখা
যায় যে , ঐ সনদের
বিভিন্ন ধারায় বর্ণিত
ধারাগুলোতে মানুষের প্রকৃত
স্বাধীনতার স্বরূপ বিভাসিত
হয়েছে ৷ অন্ততঃ
সে সময়ের সঙ্গে
তুলনা করলে এ কথা অনায়াসে
বলা যায় ৷
তখন সে সনদে মানুষে
মানুষে বিভাজের বিরুদ্ধে
এবং অন্যান্য ও সামাজিক
এবং রাজনৈতিক সন্ত্রাস
সহ বিশ্বাস ঘাতকতার
মাধ্যমে সমাজে অশান্তি
সৃষ্টি করার প্রয়াসের বিরুদ্ধে
ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াবার
নির্দেশনা ও বিদ্যমান
ছিলো ৷
তবে আজকালকার
নতুনভাবে আবিষ্কৃত ঈমানী
বিশ্বাসের কথা বলে ভিন্ন মতের ও পথের লোকদের
খতম বা কাতল করার কোনা
নির্দেশনা ছিলো না সে সময়ের সেই সনদে ৷ ইসলামের
ইতিহাসের পণ্ডিতরা পরবর্তীকালে
বিভিন্ন সময়ে তাদের
বিশ্লেষণে এই সনদের
ধারাতে বর্ণিত বিষয়গুলোতে
অসাম্প্রদায়িকতার , গণতন্ত্রের
এবং মানবাধিকার
রক্ষার সব উপাদান
খুঁজে পেয়েছেন বলে থাকেন ।অর্থাৎ এই সনদকে তখনকার
সময়ের প্রেক্ষিতে একটি
অসাম্প্রদায়িক ও অনেকটা
ধর্ম বিশ্বাস নিরপেক্ষ সনদ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা
তাদের বিভিন্ন বিশ্লেষণে
উল্লেখ করেছেন ।
এই সনদের
৫৪ নং ধারায়
দাবী করা হয়েছে
যে এই সনদটি
আল্লাহ্ কর্তৃক অনুমোদিত
৷ অন্যদিকে পবিত্র
কোরানের ১১৪ টা সুরার অধিকাংশ সুরা (প্রায় ৯২ টা) পবিত্র মক্কা নগরীতে
অবতীর্ন হয়েছে এবং সব সুরাই
প্রায় নবিজীর মদিনায়
হিজরতের পূর্বেই নাজীল হয়েছে ৷ এই পর্যায়ের পর অর্থাৎ নবীর নবু্য়্যতী প্রাপ্তির ১২ বছর শেষে মদিনায় হিজরত করার পরে মদিনা
সনদ প্রণয়ন করা হয়েছিল এবং তা আল্লাহ্ এর অনুমোদনও রয়েছে
বলে ঐ সনদের ৫৪ নং উপ ধারায় উল্লেখিত
হয়েছে ৷
তাই এই সনদ নিশ্চয়
কোরান ও হাদিস
এবং সুন্নাহ্ র সমতুল্য
হিসেবে গণ্য করা যেতেই পারে ।
তাই বোধহয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন কোনো সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় ইস্যুর আন্দোলনের প্রেক্ষিতে মদিনা সনদ বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ
করেন , তখন আন্দোলনকারীরা
কিছু না বলে কিছু সময়ের
জন্যে হলেও তাদের দাবীদাওয়া আদায়ের ব্যাপারে নিরবতা
অবলম্বনকে আন্দোলনের চেয়ে
শ্রেয় মনে করেন ।
কারণ , তবে কি ধর্ম নিয়ে
বেশি নাড়াচাড়া করলে , বা
বাড়াবাড়ি করলে , এসব ব্যাপার নিয়ে
নাজিতকৃত কোরানের সেই বিখ্যাত
১০৯ নং সুরা “কাফিরুন ”
এর ব্যাপক ব্যাখ্যায়
চলে আসতে পারে
সাধারণ মানুষের সম্মূখে
? যে সুরার
শেষ ৬ নং আয়াতে
বলা হয়েছে ;- “ তোমাদের
ধর্ম তোমাদের , আমার ধর্ম
আমার ” , আর তা হলে তো সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মকে ব্যবহার
করে ইসলামী আন্দোলনের রাজনীতি
বন্ধ হয়ে যাবে ? তাই
মাঝে মধ্যে শেখ হাসিনা
ইসলামী দাবীদাওয়া আদায়ের আন্দোলনে বেশি বিপদে
পড়লে তা দমন করতে বোধহয় সেই বিখ্যাত মদিনা সনদের কথা উল্লেখ
করতে বাধ্য হন ?
আগ্রহীদের জন্যে
মদিনা সনদের ইংরেজি
অনুবাদ , যা ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত এবং “ খালিফাহ্
আল - আলম আল - ইসলা মী ” সাইট থেকে সংগ্রহ
করে পেইষ্ট করে দেয়া হলো ৷
বিঃ দ্রঃ ;-
ভূল ত্রুটি
মার্জনীয় আর কাউকে
হীন প্রমান করতে এই লেখাটা তৈরি
করা হয় নি , শুধু আগ্রহী পাঠকদের
কিছু তথ্য জানাতে
এ লেখাটি তৈরি
করা হয়েছে ৷ ধন্যবাদ ।
Khilafah
al-'Alam al-Islami
|
Full Text of
the Madina Charter
1. This
is a document from Muhammad the Prophet (may Allah bless him and grant him
peace), governing relations between the Believers i.e. Muslims of Quraysh and
Yathrib and those who followed them and worked hard with them. They form one
nation -- Ummah.
2.
The Quraysh Mohajireen will continue to
pay blood money, according to their present custom.
3.
In case of war with any body they will
redeem their prisoners with kindness and justice common among Believers. (Not
according to pre-Islamic nations where the rich and the poor were treated
differently).
4.
The Bani Awf will decide the blood
money, within themselves, according to their existing custom.
5.
In case of war with anybody all parties
other than Muslims will redeem their prisoners with kindness and justice
according to practice among Believers and not in accordance with pre-Islamic
notions.
6.
The Bani Saeeda, the Bani Harith, the
Bani Jusham and the Bani Najjar will be governed on the lines of the above
(principles)
7.
The Bani Amr, Bani Awf, Bani Al-Nabeet,
and Bani Al-Aws will be governed in the same manner.
8.
Believers will not fail to redeem their
prisoners they will pay blood money on their behalf. It will be a common
responsibility of the Ummat and not of the family of the prisoners to pay blood
money.
9.
A Believer will not make the freedman of
another Believer as his ally against the wishes of the other Believers.
10. The
Believers, who fear Allah, will oppose the rebellious elements and those that
encourage injustice or sin, or enmity or corruption among Believers.
11. If
anyone is guilty of any such act all the Believers will oppose him even if he
be the son of any one of them.
12. A
Believer will not kill another Believer, for the sake of an un-Believer. (i.e.
even though the un-Believer is his close relative).
13. No
Believer will help an un-Believer against a Believer.
14. Protection
(when given) in the Name of Allah will be common. The weakest among Believers
may give protection (In the Name of Allah) and it will be binding on all
Believers.
15. Believers
are all friends to each other to the exclusion of all others.
16. Those
Jews who follow the Believers will be helped and will be treated with equality.
(Social, legal and economic equality is promised to all loyal citizens of the
State).
17. No
Jew will be wronged for being a Jew.
18. The
enemies of the Jews who follow us will not be helped.
19. The
peace of the Believers (of the State of Madinah ) cannot be
divided. (it is either peace or war for all. It cannot be that a part of the
population is at war with the outsiders and a part is at peace).
20. No
separate peace will be made by anyone in Madinah when Believers are fighting in
the Path of Allah.
21. Conditions
of peace and war and the accompanying ease or hardships must be fair and
equitable to all citizens alike.
22. When
going out on expeditions a rider must take his fellow member of the Army-share
his ride.
23. The
Believers must avenge the blood of one another when fighting in the Path of
Allah (This clause was to remind those in front of whom there may be less
severe fighting that the cause was common to all. This also meant that although
each battle appeared a separate entity it was in fact a part of the War, which
affected all Muslims equally).
24. The
Believers (because they fear Allah) are better in showing steadfastness and as
a result receive guidance from Allah in this respect. Others must also aspire
to come up to the same standard of steadfastness.
25. No
un-Believer will be permitted to take the property of the Quraysh (the enemy)
under his protection. Enemy property must be surrendered to the State.
26. No
un-Believer will intervene in favour of a Quraysh, (because the Quraysh having
declared war are the enemy).
27. If
any un-believer kills a Believer, without good cause, he shall be killed in
return, unless the next of kin are satisfied (as it creates law and order
problems and weakens the defence of the State). All Believers shall be against
such a wrong-doer. No Believer will be allowed to shelter such a man.
28. When
you differ on anything (regarding this Document) the matter shall be referred
to Allah and Muhammad (may Allah bless him and grant him peace).
29. The
Jews will contribute towards the war when fighting alongside the Believers.
30. The
Jews of Bani Awf will be treated as one community with the Believers. The Jews
have their religion. This will also apply to their freedmen. The exception will
be those who act unjustly and sinfully. By so doing they wrong themselves and
their families.
31. The
same applies to Jews of Bani Al-Najjar, Bani Al Harith, Bani Saeeda, Bani
Jusham, Bani Al Aws, Thaalba, and the Jaffna , (a clan of the
Bani Thaalba) and the Bani Al Shutayba.
32. Loyalty
gives protection against treachery. (loyal people are protected by their
friends against treachery. As long as a person remains loyal to the State he is
not likely to succumb to the ideas of being treacherous. He protects himself
against weakness).
33. The
freedmen of Thaalba will be afforded the same status as Thaalba themselves.
This status is for fair dealings and full justice as a right and equal
responsibility for military service.
34. Those
in alliance with the Jews will be given the same treatment as the Jews.
35. No
one (no tribe which is party to the Pact) shall go to war except with the
permission of Muhammed (may Allah bless him and grant him peace). If any wrong
has been done to any person or party it may be avenged.
36. Any
one who kills another without warning (there being no just cause for it)
amounts to his slaying himself and his household, unless the killing was done
due to a wrong being done to him.
37. The
Jews must bear their own expenses (in War) and the Muslims bear their expenses.
38. If
anyone attacks anyone who is a party to this Pact the other must come to his
help.
39. They
(parties to this Pact) must seek mutual advice and consultation.
40. Loyalty
gives protection against treachery. Those who avoid mutual consultation do so
because of lack of sincerity and loyalty.
41. A
man will not be made liable for misdeeds of his ally.
42. Anyone
(any individual or party) who is wronged must be helped.
43. The
Jews must pay (for war) with the Muslims. (this clause appears to be for
occasions when Jews are not taking part in the war. Clause 37 deals with
occasions when they are taking part in war).
44. Yathrib
will be Sanctuary for the people of this Pact.
45. A
stranger (individual) who has been given protection (by anyone party to this
Pact) will be treated as his host (who has given him protection) while (he is)
doing no harm and is not committing any crime. Those given protection but
indulging in anti-state activities will be liable to punishment.
46. A
woman will be given protection only with the consent of her family (Guardian).
(a good precaution to avoid inter-tribal conflicts).
47. In
case of any dispute or controversy, which may result in trouble the matter must
be referred to Allah and Muhammed (may Allah bless him and grant him peace),
The Prophet (may Allah bless him and grant him peace) of Allah will accept
anything in this document, which is for (bringing about) piety and goodness.
48. Quraysh
and their allies will not be given protection.
49. The
parties to this Pact are bound to help each other in the event of an attack on
Yathrib.
50. If
they (the parties to the Pact other than the Muslims) are called upon to make
and maintain peace (within the State) they must do so. If a similar demand (of
making and maintaining peace) is made on the Muslims, it must be carried out,
except when the Muslims are already engaged in a war in the Path of Allah. (so
that no secret ally of the enemy can aid the enemy by calling upon Muslims to
end hostilities under this clause).
51. Everyone
(individual) will have his share (of treatment) in accordance with what party
he belongs to. Individuals must benefit or suffer for the good or bad deed of
the group they belong to. Without such a rule party affiliations and discipline
cannot be maintained.
52. The
Jews of al-Aws, including their freedmen, have the same standing, as other
parties to the Pact, as long as they are loyal to the Pact. Loyalty is a
protection against treachery.
53. Anyone
who acts loyally or otherwise does it for his own good (or loss).
54. Allah
approves this Document.
55. This
document will not (be employed to) protect one who is unjust or commits a crime
(against other parties of the Pact).
56. Whether
an individual goes out to fight (in accordance with the terms of this Pact) or
remains in his home, he will be safe unless he has committed a crime or is a
sinner. (i.e. No one will be punished in his individual capacity for not having
gone out to fight in accordance with the terms of this Pact).
57. Allah
is the Protector of the good people and those who fear Allah, and Muhammad (may
Allah bless him and grant him peace) is the Messenger of Allah (He guarantees
protection for those who are good and fear Allah).
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন