৭১- এ প্রণপাত করা বিজয়ী বীরদের জানাই সশ্রদ্ধ সম্মান ;


    
                  ৭১-  এর   প্রাণপাত   করা   বিজয়ী   বীরদের   জানাই   সশ্রদ্ধ   সালাম  ;

                বাংলাদেশের    মানুষের   মধ্যে   এদানিং  ধর্ম   ছাড়াও   আরো   একটা   মানসিক   সমস্যা   দেখা   যাচ্ছে   যে  তারা  সবকিছুকেই   একদৃষ্টিতে   দেখেন   বা   বিচার   করে     থাকেন    ,  বিশেষ   করে   রাজনীতির   ক্ষেত্রে   ৷    প্রায়ই   দেখা   যায়   ৭১- এর   স্বাধীনতার   পক্ষের   এবং   মুক্তিযুদ্ধের   চেতনার   পক্ষের   মানুষ   ও   রাজনৈতিক      দলগুলোকে  ,  পরবর্তীকালে   জন্মনেয়া   সাম্প্রদায়িক  ও  ধর্মীয়   রাজনৈতিক   দল   সহ      বহুদলীয়   গনতন্ত্র   প্রতিষ্ঠার   দাবীদার   মুক্তিযুদ্ধের   চেতনা   ধ্বংসকারী  ও  সুবিধাভোগী     যে   সব   রাজনৈতিক   দল   ৭৫-এর   পট-পরিবর্তের   পর  গড়ে   ওঠেছে  ,  তাদের   সঙ্গে   এক  পাল্লায়   মুক্তিযুদ্ধে   অংশ   গ্রহনকারী    রাজনৈতিক   দলকে   একই   মাত্রায়    তুলনা   করা   ৷ 

               বর্তমানে   দেশে   বিরাজমান   এক   শ্রেণীর   সুশীল   বুদ্ধিজীবীরা   দেশে   গণতন্ত্র   ও   সুশাসনের   কথা   বলেন    আর   জামায়াত   এর   মত   ধর্মীয়   সাম্প্রদায়িক   রাজনৈতিক   দলকেও   গণতান্ত্রিক   দল   মনে   করেন   আর   এই   সঙ্গে   তারা  বর্তমান   ক্ষমতাসীন  রাজনৈতিক  দলকে   অগণতান্ত্রিক   এবং   সুশাসনের   পরিপন্থি   একটি   রাজনৈতিক   দল   হিসেবে   প্রতিষ্ঠিত   করতে   প্রয়াস   পান  ৷

               আর   এর   সঙ্গে   যুক্ত   হয়েছে   নতুন   আর  এক    গোষ্ঠীর ,   যাকে      অধ্যাপক ,  ড . আবুল   বারকাত   নাম   দিয়েছেন  “  ফাও   খাওয়া   শ্রেণী  ”  ৷

               এই  সব সুবিধাভোগী   শ্রেণী   সহ   পাকিস্তানের  ভাবধারায়  বিশ্বাসী  ও   ধর্মীয়   সাম্প্রদায়িকতায়   বিশ্বাসী   রাজনৈতিক   দলগুলোর   কাছে   বাংলাদেশের   স্বাধীনতা  যুদ্ধের   চেতনা   এখন   আর   বড়  কিছু   নয়  ? অবশ্য   পূর্বেও   ছিলো   না   ৷ তাদের   কাছে   রাজনৈতিক  পার্টির   ভোটের   গণতন্ত্রই   বড়  (  সাধারণ  মানুষের   গণতান্ত্রিক   অধিকার     নয়  )   যার  মাধ্যমে   তারা   আবার   রাষ্টীয়   ক্ষমতা   দখল   করে   মুক্তিযুদ্ধের   চেতনা   ধ্বংস   করে ,  আবার  বাংলাদেশকে   ৭১-এর   পরবর্তী   পর্যায়ে   ফিরিয়ে   নিতে  সক্ষম  হয়   ৷  তাই   তাদের   কাছে   এখন   গণতন্ত্রই   বড়   ,  ভোটের  রাজনীতির  অধিকারই   বড়   ৷  কিন্তু  তারা   ক্ষমতায়   থাকতে   দেশে  যে  কতটুকু   গণতন্ত্র   ও   সুশাসন   অবশিষ্ট   ছিলো  বা  বিদ্যমান  ছিলো  ,  সাধারণ   মানুষ   ভূলে   গেলেও   ভূক্তভোগীরা   এখনও   ভূলতে   পারেন  নাই  ৷ 

               ৭৫-এর  ক্ষমতার   পট-পরিবর্তনের   পরের    বেনিফিসিয়ারীরাই   এখন  নতুন   ফাও   খাওয়া   শ্রেণী   সহ   যে   সব   শ্রেণী    ও   দল  এখন  মুক্তিযুদ্ধের   চেতনার   বিপরিত   আদর্শে   বিশ্বাসী    তারাই  সে  সব  রাজনৈতিক   দলের      সদস্য   বা  সমর্থনকারী   ৷

                    তারা    আগে  ভিন্নভাবে    ক্ষমতা   দখল   করতে   ব্যর্থ   হয়েছে   ,  এমনকি  এক   পর্যায়ে   যখন   তারা   ধর্ম   ও   হেফাজতী      ইসলামীকে   ও    ব্যবহার   করে ও  ক্ষমতা   দখল   করতে   পারে   নাই   ৷  তাই   এখন   তারা   অত্যন্ত   সুকৌশলে   ধর্মের   মত
     গণতন্ত্র   ও   সুশাসনের     কথা   বলে  এবং   কিছু   মিডিয়া   ও   বুদ্ধিজীবীকে   ক্রয়   করে   তাদের   পক্ষে   প্রচারণা   চালাচ্ছে   আর      জণগনকে   তাদের   রাজনৈতিক   আন্দোলনের    পক্ষে   অংশ   গ্রহনে  অংশীদার   করতে   সব   ধরণের   প্রচেষ্টায়   ব্যস্ত   আছে   ৷  এখন   তারা   গণতন্ত্রের   কথা   বলে   মুক্তিযুদ্ধের   বিপক্ষের   শক্তিকে  সঙ্গে   নিয়ে  আবার   রাষ্ট্রীয়   ক্ষমতা   দখল  করতে   চাচ্ছে  ৷  কারণ   তাদের   মাইন্ড   সেট   হয়ে   আছে  অন্যভাবে  ,  অন্য   চেতনায়   যা   তারা   গত   ৪৩   বছরে   স্বাধীন   বাংলাদেশে   বসবাস   করে  , স্বাধীন  দেশের  সকল   ধরনের  সুযোগ   সুবিধা   গ্রহন  করেও   তা   বিসর্জ্জন   দিতে   পারেন   নাই   ৷

            ৪৩  বয়সী  স্বাধীন   বাংলাদেশ  যে   সাফল্যে   অর্জন   করছে   আর  তার   জন্যে   যাদের   অবদান   তা   যদি   আমরা   ভূলে   গিয়ে   আবার   পুরাতন   পথে   ফিরে   যেতে   চাই ,  তবে   তা   হবে  ,  জাতি  হিসেবে  আমরা  একটি    অকৃতজ্ঞ  জাতি  ৷    কিন্তু   কোনো   অকৃতজ্ঞ   মানবগোষ্ঠীর   সকল   সাফল্যই   ম্রিয়মান   হয়ে   পড়ে   যখন   তারা  মানুষ্যত্বের   বিচারে   অকৃতকার্য্য  বা   ব্যর্থ  হয়ে   পড়ে  ৷  এই   আশংকা   করেই   বঙ্গবন্ধু   ৭৪  এর  দিকে   নিজের   প্রাণপ্রিয়   দল   আওয়ামী   লীগকে   বিলুপ্ত   করে   সকল   জণগনের   অংশ  গ্রহনের   সুযোগ   রেখে   বাকশাল   নামের  একটি রাজনৈতিক   দল   গঠন   করেছিলেন বা   করতে  চেয়েছিলেন  ৷   যাতে  জণগনের   ৭১-এর   অর্জন   কেউ   ছিনতাই   না   করতে   পারে  ৷  কিন্তু   তাকে  এ  কাজে  সফল   হতে   না   দিয়ে   যারা   তাকে   সপরিবারে   হত্যা   করেছিল  ,   এখন   তারাই   আবার   গণতন্ত্র   ও   সুশাসনের   কথা   বলে   ক্ষমতা   দখলের   প্রচেষ্টায়   আন্দোলন     চালাচ্ছে  ৷  তাই  সাময়িকভাবে   একতরফা   ইলেকশন  করে   মুক্তিযুদ্ধের   পক্ষের   দলকে  আবার   ক্ষমতায়   আসতে   হয়েছে  ৭১-এর   ছিনতাই   করা   মুক্তিযুদ্ধের   চেতনাকে   অক্ষত  রাখতে  ৷   তাই   জণগনকে   এটা   উপলব্দি  করতে  হবে  যে   বর্তমান   সরকার  যা   করছেন  তা   স্বাধীন   বাংলাদেশের   স্বার্থেই   করছেন  মুক্তিযুদ্ধের   চেতনা   রক্ষা  করতে   এটা   তাদেকে   করতে   হয়েছে  ৷    ৭১-এর  চেতনাকে   ধরে   রাখতে   এটা   করতে   মুক্তিযুদ্ধের   পক্ষের   শক্তি   তাদেরকে   কিছু  একটা   করে  হলেও   ক্ষমতায়   এসে  ৭১-এর   ধারা   রক্ষা   করতে   বাধ্য   করেছে   ৷  তাই  শুধু   তারা   ক্ষমতা   দখলের  জন্যে   একতরফা এই  নির্বাচন   করেন   নাই  ৷  দেশের  স্বাধীনতার  বিপক্ষের   শক্তিকে  অনেকটা   নতুন  এক রাজনৈতিক  কৌশল  অবলম্বন  করে     ক্ষমতাসীন   মুক্তিযুদ্ধের   পক্ষের  দল  বর্তমান  পর্যায়ে  তাদেরকে   ক্ষমতা   দখল     করতে   না    দিয়ে   আওয়ামী   লীগ    আবার   ৭১-এর  ধারায়  বিশ্বাসী  জণগনের   আস্থা   আর্জনে  সক্ষম   হয়েছে  বলে   সংশ্লিষ্টরা  এখন  মনে   করেন     ৷
               বর্তমান   আওয়ামী  লীগের   এক   অংশ   ও   কিন্তু   মুক্তিযুদ্ধের   চেতনা   আগের   মত   ধারন   করেন  না  ,   ইহা   তাদের  কার্যকলাপ   থেকে  প্রমানিত   হচ্ছে ,  আজকাল   জণগনের   কাছে  । তাই   এদেরকেও  দলের   মধ্যে   থেকে   এবং   দলের   বাহিরের   মুক্তিযুদ্ধের   পক্ষের   লোকজনরা   চাপের   মধ্যে   রাখতে  হবে   ৷   
                তাই   বাংলাদেশ   নামক   স্বাধীন   ভূখন্ডের   অস্তিত্ব   সৃষ্টির   সেই   দিনগুলোকে   স্মরণ   করি  এবং   সম্মান   করি ,  আর   আজীবন   তা   ধরে   রাখার   শপথ   করে স্বাধীনতা   ও   মুক্তিযুদ্ধ   সহ   অন্যান্য   গণ-আনদোলনে   প্রাণত্যাগ   করা   বিজয়ী   বীরদের   জানাই   সশ্রদ্ধ   সম্মান  ৷  মুক্তিযুদ্ধের   মাধ্যমে   অর্জিত     স্বাধীন   বাংলার   জয়   হোক   ৷


























মন্তব্যসমূহ