“ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ ৭৫ সালে ছিনতাই হয়ে গেছে ” ! এটা কি সঠক ?



     
                                     

        “ মুক্তিযুদ্ধের   বাংলাদেশ   ৭৫   সালে    ছিনতাই   হয়ে   গেছে   ” !   

                   গত  কয়েক   দিন   আগে     স্বাধীনতার   এই   মার্চ   মাসে   ঢাকা   বিশ্ববিদ্যালয়ের   এমেরিটাস   অধ্যাপক   ড . আনিসুজ্জান   একটি    অনুষ্টানে   এ কথাটি   বলেছেন   ৷  এ  তথ্যটি   অবশ্যই   সত্য   ,  কিন্তু   তা   এতদিন   পরে   প্রকাশ   করা   হলো   কেন  ?   না ,   তিনি   সহ   অনেকেই   আগেও    অনেকবার   এ   ষোলআনা    সত্য   কথাটি    প্রকাশ   করেছেন   বা   বিভিন্ন   ভাবে   তা   প্রকাশিত    হয়েছে   ৷  তবে   এবারে   এই   সত্যটা   প্রকাশের   ভিন্ন   প্রেক্ষাপট   নিশ্চয়    আছে  ৷  তাই   বোধহয়   ড. আনিসুজ্জামান    এ   সত্যটি   আবার   মুক্তিযুদ্ধের   চেতনা ধারণাকারীদের   স্মরণ   করে   দিয়েছেন   নতুন   ভাবে   ৷ 

          কারণ   বর্তমানে   বাংলাদেশে   যে   ভাবে   মৌলবাদ   ও   জঙ্গীবাদের   উথ্থান  ঘটেছে   এবং   দিন   দিন   তার   ডালপালা   প্রসারিত   হচ্ছে     সমাজের  প্রত্যেকটা   ক্ষেত্রে  ৷     আর   অন্যদিকে   আওয়ামী   লীগ   সহ   মুক্তিযুদ্ধের   বাংলাদেশে   বিশ্বাসী   দলগুলো  এবং   জোটের   সাংগঠনিক   শক্তি  যে  ভাবে  কমে   যাচ্ছে   ক্রমান্বয়ে ,   এবং   ক্ষমতাসীন   আওয়ামী   লীগে   যে   ভাবে   সুবিধাভোগী     একটি   শ্রেণীর    ক্ষমতা   ও   পদচারণা   বৃদ্ধি   পাচ্ছে    তার   জন্যেই ক্ষোভ  প্রকাশ   করতে   গিয়েই    নিশ্চয়   ড.  আনিসুজ্জান   এ   কথাটি    আবার   মনে   করেয়ে  দিতে   চেয়েছেন  সংশ্লিষ্ট    সবাইকে  ৷  অন্যদিকে   দেশে   বর্তমানে   মুক্তিযুদ্ধের    চেতনায়   বিশ্বাসীদের   মনে  ও  সংশয়   দেখা   দিচ্ছে   ক্ষমতাসীন    দলের   রাজনৈতিক   কর্মকাণ্ডে   ৷   ক্ষমতাসীনরা   এখনো   ঔপনিবেশিকোত্তর    ঔপনিবেশিক   মানসিকতা   থেকে   মুক্তি   অর্জন  করে   বের   হয়ে   আসতে   পারেননি   ৷   ফলে   দলের   মধ্যেও   বিভাজন   বাড়ছে   ৷  পুরাতনরা   নতুনদের   দলে   গুরুত্বপূর্ণ   স্থান   বা   পদ   দিতে   নারাজ  ৷  তাদের   সংকীর্ণ   মনোভাব   দলকে  অস্থিত্বের    সংকটে   ফেলতে   আরম্ভ   করেছে  ৷  তাই   নির্বাচনে  একই   নির্বাচনী   এলাকায়   একাধিক   প্রার্থীর   অংশগ্রহন  যেমন      বাড়ছে  তেমনি পরাজয়ের   হার  ও    বাড়ছে   ৷   বর্তমান  ক্ষমতাসীন   দলের  কেউই এখন  আর দেশের  বা  দলের         স্বার্থে    নিজের   ব্যক্তিগত   স্বার্থ   ত্যাগ   করতে   নারাজ  ৷     আর  তাই নির্বাচনের   বৈতরণী   পার  হতে   জামায়াতের   সমর্থনের    চেষ্টা   করতে ও  গত   নির্বাচনে   কাউকে   কাউকে   দেখা   গেছে   ৷  এখন  আবার  জামাতকে  আওয়ামী  লীগে  যোগদানের  সুযোগ  ও  দেয়া  আরম্ভ  হয়েছে  ৷  যেন  আওয়ামী  লীগে  যোগদিলে  জামায়াতিরা  অপরাধ  মুক্ত  হয়ে  যাবে  ৷  তাহলে  বিএনপি  কেন  দোষ  দেয়া  হয়  ? 

          গত বছর   বিএনপি   জামায়াতের   ঐক্যবদ্ধ   ও   অবিরাম   সন্ত্রাস   ও   সশস্ত্র   আন্দোলন    আওয়ামী  লীগ   তাদের  দলের   বা   জোটের  সাংগঠনিক   শক্তি   দ্ধারা   মোকাবেলা   করতে   ব্যর্থ   হয়েছে   ৷   নেতা   ও   কর্মীরা   কোনো  কোনো  স্থানে  তাদের  এলাকা   পর্যন্ত   ছেড়ে   দিতে   হয়েছিলো   ৷  তাই  সরকার   তাদের প্রশাসনিক    ক্ষমতা   প্রয়োগ   করে   বিরোধীদলের    সশস্ত্র   আন্দোলন   দমন   করতে   হয়েছে   ৷   আবার   কোনো   কোনো   স্থানে   প্রশাসনিক  ক্ষমতা  প্রযোগ   করেও   জনগণের   জানমাল   রক্ষাকরা   সম্ভব   হয়   নি  ৷  ক্ষমতায়   থাকা   অবস্থায়   যদি   এই   অবস্থা   হয়  ,  তবে   রাষ্ট্রক্ষমতায়   না   থাকতে   পারলে  যে  কী   হবে   তা   সহজেই   অনুমেয়   !

          বর্তমানে   ক্ষমতাসীন আওয়ামী   লীগের   ভেতরে   যে   অবস্থা   বিরাজমান   তা   থেকে  আন্দাজ   করা   যায়   যে   শেখ   হাসিনার   অনুপস্থিতে   দলের   অবস্থা   কি   হতে   পারে   । এ   রকম   কোনো   পরিস্থিতির   সৃষ্টি   হলে   তখন   দলের  অস্থিত্বের    সংকটে   পড়তে   হতে   পারে    যদি      দলকে   এখনই  ভালভাবে   সংগঠিত   করা   না   যায়   ৷

                       এখন   দেখা   যাচ্ছে  ,  ভোটের   রাজনীতি   করতে  গিয়ে  আওয়ামী   লীগ   ধর্মনিরপেক্ষতা , যুক্তিবাদ   ও   গণতন্ত্রকে   পাশ কাটিয়ে    ধর্মকে   ব্যবহার   করতে   গিয়ে ও   সম্পূর্ণ   ব্যর্থ   হয়েছে   ৷  উপজেলাতে   জামায়াতের   প্রার্থীর   নির্বাচনে   জয়লাভ   করাতে     তা   আবার   নতুন   ভাবে  প্রমাণিত   হয়েছে   ৷   তাই   নতুন   প্রজন্মের   গণজাগরণ   মঞ্চের   আন্দোলনের   ক্ষেত্রেও   শেষের   দিকে   সরকার   যে   ভূমিকা   নিয়েছিলো    তা   ও   এখন   প্রশ্নবিদ্ধ   হয়েছে   ৷   বরং   নতুন   প্রজন্মের   আন্দোলনে   সরকার   ব্যাপকভাবে  সমর্থন    দিলে   অনেক   লাভবান   হতে  পারতো    অন্তত   হেফাজতের   পেছনে   সময়   ব্যয়   না   করে   ৷

          বাংলাদেশের   মুক্তচিন্তায়   বিশ্বাসীরা   এখন   উপলব্ধি   করছেন   যে   ভোটের   রাজনীতির   কাছে   আওয়ামী   লীগ    দলের    ধর্মনিরপেক্ষতাকে    বিসর্জন   দিয়ে    কিছুই    অর্জন   করতে   পারেনি  ৷ 

                       বাংলাদেশের   সমাজব্যবস্থা   ধীরে   ধীরে   এক   পশ্চাৎপদ   ধর্মীয়   উন্মাদনার   জগতে   প্রবেশ   করতে    আরম্ভ   করছে   ৷   এখনই   তা   সর্বক্ষেত্রে   দৃশ্যমান   না   হলেও   অচিরেই   তা   এক   প্রকট   রূপ   ধারন   করতে   যাচ্ছে  ৷   যার   লক্ষণগুলো   এখনই   গ্রাম   অঞ্চলে   দেখা   যাচ্ছে   ৷   সাইদিকে   চাঁদে   পাঠানোর  বর্ষপূর্তি   পালিত   হয়েছে  ! তাই   এই   ধারাকে   এখনই   ঠেকাতে   হবে   !  এই   ধারাকে   আটকাতে   ব্যর্থহলে   নতুন   প্রজন্ম   সহ   সমাজের   সংখ্যাগুরু   সম্প্রদায়কেই   বহুকাল ধরে   এর   ফল   ভোগ   করতে   হবে   ৷ 

       আওয়ামী   লীগের   প্রতি   যেমন   মানুষের   ভালবাসা   আছে  ,  তেমনই   তাদের   বিভিন্ন   সময়ের   কার্যকলাপে   কিছু   মানুষের   ঘৃনাও   আছে   ৷  তাই   দলের   ক্যাডার   ভিত্তিক   কার্যক্রমের   সমাপ্তি   ঘোষণা   করে   দলের   সুবিধাভোগীদের   বাদ দিয়ে   মুক্তিযুদ্ধের   বাংলাদেশে   বিশ্বাসীদের   ঐক্যবদ্ধ   করে   দলকে   এখনই   পূণর্গঠিত   করতে   হবে ৷     জণগনের   চাহিদা   ও   আশা   আকাঙ্খার   প্রতি     এবং   মুক্তিযুদ্ধের   চেতনার   প্রতি   সম্মান   দেখিয়ে    এখনই  এর  বিরুদ্ধে  কার্যকারি  পদক্ষেপ  গ্রহণ  করতে     হবে  ৷  এ  ব্যাপারে  জনগণ  এখন  দলীয়  প্রধানের  তড়িৎ  হস্তক্ষেপ  দেখতে  চায়  ৷













মন্তব্যসমূহ