ধর্ম নিয়ে যতো কথা;-প্রসঙ্গ হিন্দু বা বৈদিক ধর্ম এবং ইহুদি ধর্মের কিছু মৌলিক তথ্য প্রসঙ্গে কিছু কথা :
বিভিন্ন ধর্ম
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পৃথিবীতে মানুষের জীবন যাপনের দিক নির্দেশনা এবং সাম্য-মৈত্রীর বানী নিয়ে যুগে যুগে বিভিন্ন ধর্মের আগমন ঘটেছে। মধ্যপ্রাচ্য এবং ভারতবর্ষ হচ্ছে ধর্মের আদিভূমি। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধর্মের নামে মানুষ রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছে আবার এই ধর্মই মানুষকে করেছে সুসংহত, মানবতাবাদী।
বিভিন্ন ধর্ম প্রসঙ্গ
(১) হিন্দু বা বৈদিক ধর্মের মৌলিক কিছু তথ্য প্রসঙ্গে ;-
ধর্ম গ্রন্থ বেদ হিন্দু বা বৈদিক ধর্ম অনুসারিদের কাছে তাদের ধর্মের মূল ধর্ম গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত ৷ , তাদের একান্ত বিশ্বাস, ভগবান ,অগ্নি , বায়ু , আদিত্য ও অঙ্গিরা , এই চার জন ঋষিদের হৃদয়ে অধিষ্ঠিত হয়ে , ঈশ্বর তাঁদের মুখ দিয়া , ঋক , সাম , যজু , ও অথর্ব নামক চারখানা বেদ প্রকাশ করেছেন । আবার কেহ কেহ বলেন যে , বেদ অনাদি অনন্ত ঈশ্বরর নিঃশ্বাসে সৃষ্ট , কোনো মানষ ইহার রচিয়িতা নন । বেদ অপৌরুষেয় , অর্থাৎ ঈশ্বর কর্তৃক প্রেরিত ধর্ম গ্রন্থ ।
তাই হিন্দু ধর্মের যাবতীয় একান্ত করণীয় সব বিষয়ই বেদে
বর্ণিত আছে । এই ধর্মের বর্তমান বয়স প্রায় ৫০০০বৎসর । মহর্ষি ব্যাস
মন্ত্র সংকলন ও বিভাগ করেন , এবং ইঁহার রচিত মহাভারত ‘পঞ্চম বেদ’ নামে ও কথিত ৷ এবং অষ্টাদশ পুরাণ ও ইঁহার রচিত বলে প্রচারিত হয়েছে । এই পুরাণাদি
গ্রন্থসমূহও হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ বলিয়া পরিগণিত হয়েছে । যদিও হিন্দু
ধর্মকে বৈদিক ধর্মবলা হয় , তথাপি বর্তমান হিন্দু ধর্ম হলো বৈদিক ও
পৌরাণিক ধর্ম মতের সং মিশ্রণ । যদিও পুরাণের শিক্ষার ফলে বৈদিক ধর্ম ঘোর
পৌত্তলিকায় পূর্ণ হয়েছে ৷ কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই যে বৈদিক বা পৌত্তলিক ধর্মের সঙ্গে পরবর্তি কিছু ধর্মের অনেক সাদৃশ্য ও দেখা যায় ৷ যাদের ভাষা ও রুপগত পার্থক্য থাকলেও ভাবগত
পার্থক্য তেমন নাই ।
নিম্নলিখিত বিষয়সমুহে অনেক সাদৃশ্য দেখা যায় । যথা--
১, ঈশ্বর এক --একমেবাদ্বিতীয়ম( লা ইলাহা
ইল্লাল্লাহ) ।
২, বিশ্ব- জীবের আত্মাসমুহ এক সময়ের সৃষ্টি ।
৩ , মরণান্তে পরকাল এবং ইহকালের কর্মফল পরকালে
ভোগকরতে হবে ।
৪ , পরলোকের দুইটি বিভাগ --স্বর্গ ও নরক (বেহেস্ত
- দোজখ )
।
৫ , স্বর্গ সাত ভাগে এবং নরক সাত ভাগে বিভক্ত ।
৬ , স্বর্গ বাগানময় এবং নরক অগ্নিময় ।
৭ , স্বর্গ ঊর্ধদিকে অবস্থিত ।
৮ , পুণ্যবানদের স্বর্গপ্রাপ্তি এবং পাপীদের
নরকবাস ।
৯ , যমদূত (আজ্রাইল ফেরেস্তা ) কর্তৃক মানুষের
জীবন হরণ
।
১০ , ভগবানের স্থায়ী আবাস ‘ সিংহাসন’ (আরশ )
১১ , স্তব - স্তূতিতে ভগবান সন্তূষ্ট ।
১২ , মন্ত্র (কেরাত ) দ্বারা উপাসনা করা ।
১৩ , মানুষ জাতির আদি পিতা একজন মানুষ - মনু (আদম
)।
১৪ , নরবলি হইতে পশুবলির প্রথা প্রচলন ।
১৫ , বলিদানে পুণ্যলাভ (কোরবানী )।
১৬ , ঈশ্বরের নামে উপবাসে পুণ্যলাভ (রোজা)
।
১৭ , তীর্থভ্রমনে পাপের ক্ষয় -- কাশী - গয়া (
মক্কা - মদিনা
)।
১৮ , ঈশ্বরের দুত আছে (ফেরেস্তা ) ।
১৯ , জানু পাতিয়া উপাসনায় বসা ।
২০ , সাষ্টাঙ্গ প্রণিপাত (সেজদা ) ।
২১ , করজোড়ে প্রার্থনা (মোনাজাত ) ।
২২ , নিত্য উপাসনার নির্দিষ্ট স্থান --মন্দির
(মসজিদ) ।
২৩ , মালা জপ (তসবিহ্ পাঠ ) ।
২৪ , নির্দিষ্ট সময়ে উপাসনা করা - ত্রিসন্ধ্যা
(পাঁচ ওয়াক্ত ) ।
২৫ , ধর্মগ্রন্থপাঠে পুণ্য লাভ ।
২৬ , কার্যারম্ভে ঈশ্বরের নামোচ্চারণ - নারায়ণং
সমস্কৃত্যং নবৈষ্ণব
নরোত্তমম (বিসমিল্লা-হির রাহমানির রাহিম ) ।
২৭ , গুরুর নিকট দীক্ষা (তাওয়াজ ) ।
২৮ , স্বর্গে গণিকা আছে - গন্ধর্ব, কিন্নরী, অপ্সরা (হুর - গেলমান )
।
২৯ , উপাসনার পূর্বে অঙ্গ ধৌত করা (অজু ) ।
৩০ , দিগনির্ণয়পূর্বক উপাসনায় বসা বা দাঁড়ান ।
৩১ , পাপ -পুণ্য পরিমাপে তৌলযন্ত্র ব্যবহার (মিজান
)।
৩২ , স্বর্গগামিদের নদী পার হওয়া -বৈতরণী
(পোলছিরাত ) ইত্যাদি ।
আরো কিছু সাদৃশ্য -যথা মিথ্যা বলিবে না , চুরি করিবে না মাতা -পিতার সেবা করিবে ইত্যাদি বিষয় ও পরের ধর্ম গুলোতেও আছে । তাই প্রশ্ন
আসে, পূর্বের ধর্মের অনেক কিছু ,পরের
আবির্ভাব হওয়া ধর্মে ও দেখা যায় কি জন্যে ? কিন্তু ইহা নিশ্চিত যে , পূর্ববর্তীগণের
নিকট থেকে ই পরবর্তীগণ গ্রহন করিয়াছে । তাহলে সব ধর্মের উৎস কী এক ?
এই লেখাটির সঙ্গে প্রসঙ্গিক হওয়ায় ইনটারনেট থেকে সংগ্রহ করা কিছু অপ্রমাণিত তথ্য সংযুক্ত করা হল এই লেখাটির সঙ্গে ;
আসেপাশের বিভিন্ন ধর্ম থেকে এতো কিছু ইসলামে সংযোজন একটা জিনিস নিঃসন্দেহে প্রমান করে যে ইসলামের মহান পয়গম্বর হজরত মুহাম্মদ ছিলেন তার সময়ের তুলনায় অগ্রগামী মানুষ এবং সত্যিকার অর্থেই একজন অসাধারন মুক্তমনা।
২।৫ ওয়াক্ত সালাত – জরাথ্রুস্থবাদ
৩।সওম ( রোজা) – আরব প্যাগান
৪। যাকাত – ভারতীয় দর্শন
৫।কালেমা – প্রাচীন মিশরিয় একেশ্বরবাদ (সম্রাট ইখনাটন)
৭। ফেরেশতা - জরাথ্রুস্থবাদ
৮। মিরাজ - জরাথ্রুস্থবাদ
৯। অজু - জরাথ্রুস্থবাদ
১০। বেহেশতো দোজখ - জরাথ্রুস্থবাদ
১১। পুল সিরাত - জরাথ্রুস্থবাদ
১২। শয়তান - জরাথ্রুস্থবাদ
১৩। পাপপুন্য মাপার স্বর্গীয় দাড়িপাল্লা - প্রাচীন মিশরীয় বহুশ্বরবাদি ধর্ম (বুক অফ ডেড)
এই লেখাটির সঙ্গে প্রসঙ্গিক হওয়ায় ইনটারনেট থেকে সংগ্রহ করা কিছু অপ্রমাণিত তথ্য সংযুক্ত করা হল এই লেখাটির সঙ্গে ;
আসেপাশের বিভিন্ন ধর্ম থেকে এতো কিছু ইসলামে সংযোজন একটা জিনিস নিঃসন্দেহে প্রমান করে যে ইসলামের মহান পয়গম্বর হজরত মুহাম্মদ ছিলেন তার সময়ের তুলনায় অগ্রগামী মানুষ এবং সত্যিকার অর্থেই একজন অসাধারন মুক্তমনা।
১। হজ্ব- আরব প্যাগান
২।৫ ওয়াক্ত সালাত – জরাথ্রুস্থবাদ
৩।সওম ( রোজা) – আরব প্যাগান
৪। যাকাত – ভারতীয় দর্শন
৫।কালেমা – প্রাচীন মিশরিয় একেশ্বরবাদ (সম্রাট ইখনাটন)
৬। পুনোরুত্থান ও শেষ বিচার - প্রাচীন মিশরীয় বহুশ্বরবাদি ধর্ম (বুক অফ ডেড)
৭। ফেরেশতা - জরাথ্রুস্থবাদ
৮। মিরাজ - জরাথ্রুস্থবাদ
৯। অজু - জরাথ্রুস্থবাদ
১০। বেহেশতো দোজখ - জরাথ্রুস্থবাদ
১১। পুল সিরাত - জরাথ্রুস্থবাদ
১২। শয়তান - জরাথ্রুস্থবাদ
১৩। পাপপুন্য মাপার স্বর্গীয় দাড়িপাল্লা - প্রাচীন মিশরীয় বহুশ্বরবাদি ধর্ম (বুক অফ ডেড)
ইহুদি ধর্মের কিছু মৌলিক তথ্য প্রসঙ্গে (২)
পবিত্র বাইবেল গ্রন্থের পুরাতন নিয়ম (Old Testament) যাঁরা মেনে চলেন , তাদেরকে বলা হয় ইহুদি , তাঁদের ঐশ্বরিক গ্রন্থের নাম তৌরিত ও জব্বুর , মুসলমানরা যাহাকে তাউরাত ও জব্বুর কেতাব বলেন ।
ইস্রাইল বংশীয় হজরত মূসা(আঃ) মিসর দেশে জন্ম গ্রহন
করেন খ্রী. পূ. ১৩৫১ সালে এবং তূর পর্বতে খোদাতা’লার নূর
দেখতে পান এবং তুর পর্বত থেকেই আল্লাহ্ র বাণী শুনতে পান এবং সেই সঙ্গে ও দশ আদেশ ( Ten Commands ) খচিত প্রস্তরফলক পান খ্রী.পূ.১২৮৫ সালে । অতঃপর ৫৪ বৎসর কাল স্বীয় ধর্মমত (ইহুদি ধর্ম
) প্রচার করে নিবো পাহাড়ে দেহত্যাগ করেন
খ্রী.পূ.১২৩১ সালে ৷ এবং সুতরাং তৌরিত গ্রন্থের বর্তমান বয়স প্রায় ৩২৫০ বৎসর ।
ইহুদিদের মতে , একদা হজরত মুসা(আ) তূর পর্বতের চূড়ায় ভগবান
জাভে (ইহুদিদের ঈশ্বর) এর দর্শন লাভ করেন ও তাঁহার বাণী শ্রবণ করেন এবং
জাবে- আল্লাহ্ র(!) স্বহস্তে লিখিত দশটি আদেশ সম্বলিত দুইখানা প্রস্তরফলক প্রাপ্ত হন । উহাই তৌরাত
গ্রন্থের মূলসুত্র । অতঃপর বহুদিন
যাবত বিভিন্ন সময়ে জাভের নিকট হইতে যে সমস্ত আদেশ-উপদেশ প্রাপ্ত হইয়াছেন , তাহাও উক্ত গ্রন্থে স্থান পেয়েছে ৷
তৌরিত গ্রন্থের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় এই ; --
১, ত্বকচ্ছেদ- অর্থাৎ পুরুষর লিঙ্গাগ্রের চর্ম
কর্তন করা । ইহা ইহুদিদের জাতীয় চিহ্ন ।
২, খাদ্য ও অখাদ্য নির্ণয়--“ পশুগণের মধ্যে যে কোনো পশু সম্পর্ণ দ্বিখন্ড
খুর বিশিষ্ট ও জাবর কাটে , তাহা , তবে শূকর ছাড়া , শূকর জাবর কাটে না তাই । জলজন্তুদের মধ্যে -ডানা ও আঁইশ বিশিষ্ট জন্তুরা সব তোমাদর খাদ্য । পক্ষীদের মধ্যে নিষেদ-ঈগল ,কাক ইত্যাদি প্রায় ২১\২২ টা,ছাড়া অন্য সব পক্ষী ৷
৩, অশুতা;- স্ত্রী সন্তান
প্রসবের পর সাত দিন অশুচি থাকিবে…..রজস্বলা অবস্তায় সাত দিন অশুচি থাকিবে
ইত্যাদি ,
৪, রেতস্খলন--হলে সমস্ত শরীর ধৌত ও স্ত্রী
সহবাসে করলেে উভয়কেই জলে স্নান করিতে হবে ৷
৫, বিবাহ করতে যে সব নিষিদ্ধা নারী - তৌরাত গ্রন্থে নিম্নলিখিত আত্নীয়া
রমণীগনের বিবাহ নিষিদ্ধ;
1, মাতা,
2, বিমাতা,
3, ভগিনী,
4, নাতিনী,
5, বৈমাত্র ভগিনী,
6, পিসী,
7, মাসী,
8,চাচী,
9, পুত্রবধু,
10, ভ্রাতৃবধূ,
11, স্ত্রীর নাতিনী,
( পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত)
12, স্ত্রীর কন্যা (পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত)
13, শশুড়ী ।
2, বিমাতা,
3, ভগিনী,
4, নাতিনী,
5, বৈমাত্র ভগিনী,
6, পিসী,
7, মাসী,
8,চাচী,
9, পুত্রবধু,
10, ভ্রাতৃবধূ,
11, স্ত্রীর নাতিনী,
( পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত)
12, স্ত্রীর কন্যা (পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত)
13, শশুড়ী ।
৬, অশৌচকালে যৌনমিলন নিষিদ্ধ,
৭, ঈশ্বরের নামের নিন্দায় প্রাণদন্ডের বিধান ,( BLASS FEMI )
৮, খুনের বদলে খুন,
৯ ,সুদের নীতি-ভ্রাতার কাছ থেকে সুদ কিম্বা বৃদ্ধি না লওয়া ,
১০, মানত করা যাইবে সদাপ্রভুর নামে ,
৮, খুনের বদলে খুন,
৯ ,সুদের নীতি-ভ্রাতার কাছ থেকে সুদ কিম্বা বৃদ্ধি না লওয়া ,
১০, মানত করা যাইবে সদাপ্রভুর নামে ,
১১, উৎসর্গ- পশু দান,ইত্যাদি করা যাবে সদাপ্রভুর নামে,
১২, উত্তরাধিকার ,-বিধান ;-
১২, উত্তরাধিকার ,-বিধান ;-
“ তুমি উহাদের পিতৃকুলের ভ্রাতাদিগের মধ্যে
উহাদিগকে স্বত্বাধিকার দিবে ও উহাদের পিতার অধিকার উহাদিগকে সমর্পণ করিবে ।
…..কেহ যদি অপুত্রক হইয়া মরে ,তবে তাহার অধিকার কন্যকে দিবে ,কন্যা না থকলে, ভ্রাতৃগণকে তাহার অধিকার দিবে, ভ্রাতা না থাকিলে পিতৃব্যদিগকে, আর পিতৃব্য না থাকিলে তাহার গোষ্ঠীর নিকটস্থ জ্ঞাতিকে অধিকার দিবে”।
…..কেহ যদি অপুত্রক হইয়া মরে ,তবে তাহার অধিকার কন্যকে দিবে ,কন্যা না থকলে, ভ্রাতৃগণকে তাহার অধিকার দিবে, ভ্রাতা না থাকিলে পিতৃব্যদিগকে, আর পিতৃব্য না থাকিলে তাহার গোষ্ঠীর নিকটস্থ জ্ঞাতিকে অধিকার দিবে”।
১৩ , বিজাতি বিদ্ধেষ-পরাজিতকে দয়া না করে আঘাত
করার বিধান ,
১৪, বলিদানে কলঙ্ক মূক্ত গরু বা মেষ হতে হবে ,
১৫, ব্যাভিচারের ফল ;-অবৈধ মিলনের শাস্তি -প্রস্তরাঘাতে হত্যা , ধর্ষনের শাস্তি-কন্যার পিতাকে পঞ্চাশ রৌপ্য ,( শেকেল) দিবে, মানভ্রষ্টাকে যাবজ্জীবন স্ত্রী হিসাবে রাখিতে হইবে বাধ্যতামূলক ভাবে ।
১৫, ব্যাভিচারের ফল ;-অবৈধ মিলনের শাস্তি -প্রস্তরাঘাতে হত্যা , ধর্ষনের শাস্তি-কন্যার পিতাকে পঞ্চাশ রৌপ্য ,( শেকেল) দিবে, মানভ্রষ্টাকে যাবজ্জীবন স্ত্রী হিসাবে রাখিতে হইবে বাধ্যতামূলক ভাবে ।
১৬, স্ত্রীত্যাগ- বিয়ের পর অনুপযুক্ত বা পসন্দ
না হইলে , ত্যাগপত্র দিয়া বাড়ী থেকে বিদায় করার বিধান পুরুষ কে দেওয়া হইয়াছে ।
১৭ , দশ আদেশ; -( 10 -Command ) কী ?
1, আমার সাক্ষাতে তোমার অন্য খোদা না থাকুক,
2 , তুমি খোদিত প্রতিমা বানাইও না ,
3, তুমি অনর্থক ঈশ্বরের নাম লইও না ,
4 , বিশ্রামদিন পালন করিও ,
5 , মাতাপিতাকে সমাদর করিও,
6, নরহত্যা করিও না ,
,
7, ব্যাভিচার করিও না ,
8 , চুরি করিও না ,
9 , প্রতিবেশীর বিরীদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিও না ,
10 , প্রতিবেশীর গৃহে লোভ করিও না ।
2 , তুমি খোদিত প্রতিমা বানাইও না ,
3, তুমি অনর্থক ঈশ্বরের নাম লইও না ,
4 , বিশ্রামদিন পালন করিও ,
5 , মাতাপিতাকে সমাদর করিও,
6, নরহত্যা করিও না ,
,
7, ব্যাভিচার করিও না ,
8 , চুরি করিও না ,
9 , প্রতিবেশীর বিরীদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিও না ,
10 , প্রতিবেশীর গৃহে লোভ করিও না ।
বিখ্যাত দশ আদেশ ভুক্ত তৃতীয় আদেশটি কোনো
কোনো মহলে বিস্ময় উৎপাদন করে বটে , কিন্তু অধুনা ঐ আদেশটি ব্যাপকভাবে ই
প্রতিপালিত হইতেছে ।
more information ;-
লিখেছেন: পৃথু স্যন্যাল ( সৌজন্য ;-ইস্টিশন ব্লগ )
-
more information ;-
লিখেছেন: পৃথু স্যন্যাল ( সৌজন্য ;-ইস্টিশন ব্লগ )
জরথ্রুস্টঃ
ইরানের প্রাচীন ধর্ম
লিখেছেন: পৃথু স্যন্যাল — বুধ, 08/31/2016 - 20:22
পৃথিবীতে হাজারো ধর্মের মতই জরথ্রুস্ট একটি ধর্ম। তবে, এটি ঐতিহাসিক দিক দিয়ে বেশ পুরাতন একটি ধর্ম।
বর্তমানে ইরানের জরথ্রুস্ট এবং ভারতের পার্সিদের মধ্যে এ ধর্মের চর্চার সন্ধান পাওয়া যায়।
জোরোয়াষ্টার বা জরথ্রুস্ট্রা (এভেস্টান), অথবা জরথ্রুস্ট নামক একজন প্রাচীন পারস্যীয় ধর্ম প্রচারক এর হাত ধরে এ ধর্ম মতের প্রবর্তন ঘটে পৃথিবীতে। ভারতীয় উপমহাদেশে এটি পারসিক বা পার্সি ধর্ম নামেও পরিচিত।
ধর্ম প্রচারক জরথ্রুস্ট সাধারনভাবে স্বীকৃত একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব, কিন্তু তার সমসাময়িক কাল সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে তেমন কিছুই জানা যায়না। অনেক পন্ডিতের মতানুসারে তিনি আনুমানিক ১২০০ খ্রীস্ট পূর্বাব্দ সময়ের একজন মানুষ, যিনি প্রাচীন ধর্মমত প্রবর্তকদের অন্যতম, যদিও অন্য অনেকের মতে তিনি ১৮০০ খ্রীস্ট পুর্বাব্দ হতে ৬ষ্ঠ খ্রীস্ট পূর্বাব্দ মধ্যবর্তী সময়ের একজন ধর্ম প্রচারক ছিলেন।
জরথ্রুস্ট ধর্মের নামকরণ নিয়ে বেশ কিছু মত প্রচলিত আছে।
তবে “জোরোয়াস্টার” নামটি মূলত দুটি এভেস্টিয়ান ভাষা’র শব্দ সমষ্টি, যা এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়ঃ জোরো- ("পুরাতন") + আস্ট্রা ("উট)," অর্থ "বুড়ো উটওয়ালা"। অন্যদিকে আধুনিক পার্সীতে জারেড যার অর্থ হলো "হলুদ" বা "সোনালী"। এ অর্থে জোরয়াস্টার এর অর্থ দাঁড়ায় "হলুদ উটওয়ালা" বা "সোনালী উটওয়ালা। আবার জারা অর্থ উজ্জ্বল, স্বর্ণ বা আলো, তুস্ট এর অর্থ দাঁড়ায় বন্ধু বা প্রেমিক। অর্থাৎ জরথ্রুস্ট মানে যে আলো ভালবাসে। হলুদ আর লাল যাই হোক না কেন, প্রবর্তক যে হলুদ উটের মালিক হয়েছিল বা হবার চেষ্টা করেছিল তার কিছু ইঙ্গিত এই নামের মধ্যেই পাওয়া যায়।
যদিও ৩য় শতাব্দীর মধ্যে জরথুস্ত্রবাদ এবং তার মতবাদ সমস্ত মধ্যপ্রাচ্য ব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে, তথাপি জোয়ারাস্টার অর্থাৎ প্রবর্তকের জীবনকাল নিয়েও অনেক মতভেদ রয়েছে। সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য মত হলো জোয়ারাস্টার খ্রীস্টপূর্ব ১৪০০ থেকে ১০০০ খ্রীস্টপূর্ব এর কোন এক সময়ে বর্তমান ছিলেন। এর পক্ষে জোরালো মত দেন মেরি বয়েস তার “ এ হিস্ট্রি অব জোয়ারস্ট্রিজম” গ্রন্থে। এইচ, এস, নাইবার্গ তার “প্রাচীন ইরানের ধর্ম” গ্রন্থে প্রমান করার প্রয়াস পান যে ৪৫৮ খ্রীস্ট পূর্ব সময় থেকে জোয়ারাস্টারের ধর্ম প্রচারিত হতে থাকে। অন্যদিকে, বুন্দাহিসন বা সৃষ্টি নামক জোয়ারাস্ট্রান ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ন লিখনিতে উল্লেখ পাওয়া যায় যে আলেকজান্ডার’এর পারস্য আক্রমণ এর ২৫৮ বছর পূর্বে জোরোয়াস্টার বর্তমান ছিলেন, অর্থাৎ তদানুসারে ৫৮৮ খ্রীস্ট পূর্বাব্দ জোয়ারাস্টারের সময়কাল। ঊনবিংশ শতাব্দীর অনেক পন্ডিত এই “জোরোয়াস্টার এর ঐতিহাসিক সময়কাল” সাথে একমত পোষন যাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন তাগিজাদেহ এবং ডব্লিউ. বি. হেনিং। যদিও ডার্মেসটিটার এর মত কিছু কিছু পন্ডিত এর সাথে দ্বিমত পোষন করেন এবং যুক্তি দেখান যে, জোরোয়াস্টার মূলত ১০০ খ্রীস্ট পূর্বাব্দ এর সমসাময়িক, যদিও এই মতবাদ এখন ব্যাপক আকারেই আগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত।
আদিকাল হতে বার্থহোলোমিয়া এবং ক্রিস্টেনসেন এর মতো পন্ডিতেরা “ঐতিহ্যগত সময়” নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেন মূলত ভাষাগত সমস্যা হতে যা উৎসরিত। ঐতিহ্য হতে দেখা যায় জোরোয়াস্টার ১৮ টি কবিতা লিখেন, যার সমন্বয়ে এভেস্টা’র পুরাতন খন্ড, গ্রাথাস গ্রথিত হয়েছে। “গ্রাথাস” এর ভাষা এবং রচনা সাধারণত “ইয়াসনা হাপ্তানগাইতি” কে বলা হয় পুরাতন “এভেস্টান” বা গাথিক এভেস্টান, এবং যা এভেস্টার পরবর্তী খন্ডগুলোর ভাষা হতে অনেকটাই সেকেলে। শব্দের ব্যুৎপত্তিগত দিক থেকে গাথিক এভেস্টান এর সাথে বৈদিক সংস্কৃত’র ঋগবেদ প্রচুর মিল রয়েছে।
যদিও ঋগবেদের এর সংস্কৃতের সাথে গাথিক এভেস্টানের এর ভাষা কিছুটা বেশি মাত্রায় রক্ষণশীল, ধারণা করা হয় যে এভেস্টা ঋগবেদের এর কয়েক শতক পরে গ্রথিত হয়েছে। ধারণা করা হয় ঋগবেদ গ্রথিত হয়েছে ১৫০০ খ্রীস্ট পূর্বাব্দ হতে ১২০০ খ্রীস্ট পূর্বাব্দ এর মধ্যবর্তী সময়ে। সে অনুসারে গাথিক এভেস্টান গ্রথিত হয়েছে ১০০০ খ্রীস্ট পূর্বাব্দ হতে ২০০ বছর সময়কালের এর মধ্যে।
জরথ্রুস্ট ধর্ম মতে প্রধান পূজ্য বা স্রষ্টার নাম হলো আহুরা মাজ্দা (হোরমজ্দ)। জরাথ্রুস্টীয়বাদীগণকে প্রধানত অগ্নি উপাসক নামে সংজ্ঞায়িত করা হলেও জরথ্রুস্ত্রিয়বাদীদের অগ্নি উপাসনার ধারণাটি মূলত জরাথ্রুস্ট্রবাদ-বিরোধী বিতর্ক থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। প্রকৃতপক্ষে, অগ্নিকে জরাথ্রুস্ট্র ধর্মে শুদ্ধতার প্রতিনিধি এবং ন্যায় ও সত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এমনকি তাদের ফায়ার টেম্পল বা অগ্নি মন্দিরেও (জরাথ্রুস্ত্রীয় পরিভাষাটি আরও বিস্তৃত যার সরল অর্থ হল হাউজ অব ফায়ার বা আগুনের ঘর) এই একই ধারণা পোষণ করা হয়। । বর্তমানকালে এই বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এভাবে যে অগ্নি প্রজ্বলনের কারণ হল তা সর্বদা যে কোন ঊর্ধ্বমুখী বস্তুবিশেষকে পুড়িয়ে ফেলে এবং তা কখনোয় দূষিত হয় না। তা সত্ত্বেও, সাদেহ এবং চাহারশানবে সুরি হল বৃহত্তর ইরানের সর্বত্র উদযাপিত দুটি অগ্নি-সম্পর্কিত উৎসব এবং এই দুটি উৎসবে সেই সময়ের রীতিতে ফিরে যাওয়া হয় যে সময়টিতে জরাথ্রুস্ট্রীয় ধর্ম অঞ্চলের সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী ধর্ম ছিল।
জরাথ্রুস্টবাদে, পানি (আপো, আবান) এবং আগুন (আতার, আযার) হল ধর্মীয় পবিত্রতার প্রতিনিধি এবং এ-সম্পর্কিত শুদ্ধিকরণ আচার-অনুষ্ঠানসমূহকে ধর্মীয় জীবনব্যবস্থার ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জরাথ্রুস্টীয় সৃষ্টিতত্ত্ব অনুসারে, পানি এবং আগুন হল যথাক্রমে দ্বিতীয় এবং সর্বশেষ সৃষ্ট প্রভাবশালী পদার্থ, এবং তাদের ধর্মীয় গ্রন্থে পানিকে সৃষ্টিগতভাবে আগুনের মূল উৎস মনে করা হয়েছে। আগুন এবং পানিকে জীবন ধারণের জন্য অপরিহার্য বলে মনে করা হয়, এবং আগুন ও পানি উভয়কেই ফায়ার টেম্পলের চারপাশে প্রতীকীরুপে তুলে ধরা হয়। জরাথ্রুস্টবাদীগণ বিভিন্নভাবে প্রজ্বলিত আগুনের (যাকে যে কোন ধরনের আলোতে স্পষ্টভাবে দেখা যায়) উপস্থিতিতে উপাসনা করে থাকেন, এবং উপাসনার মৌলিক কর্মের চূড়ান্ত আচারটি "জলরাশির শক্তি"রূপে সংযুক্ত হয়। আগুনকে একটি মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যার মাধ্যমে আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও অন্তর্দৃষ্টি অর্জিত হয়, এবং পানিকে সেই জ্ঞানের উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
খ্রিস্টীয় ২০০০ সন এর প্রাক্কলন অনুযায়ী পৃথিবীতে এই ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১৪৫,০০০ যা সাম্প্রতিক হিসাব অনুসারে প্রায় ২৬ লক্ষ। ধারণা করা হয়, গত একদশকে জরাথ্রুস্টবাদ বা পার্সি ধর্মের অনুসারির সংখ্যায় এই ব্যাপক পরিবর্তন প্রকৃত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে হয়নি, বরং এ সময়কালে উদ্ভূত অবাধ তথ্যপ্রবাহের সুবিধার ফলে পার্সি জনগোষ্ঠীর সংখ্যা সম্পর্কিত তথ্যউপাত্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অনেকেই নিজেদের জরাথ্রুস্টবাদ বা পার্সি ধর্মের অনুসারি হিসেবে সনাক্ত করেছেন। তবে মধ্যপ্রাচ্যে অঞ্চলে পার্সিগণ ঐতিহাসিকভাবেই নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছে বলে প্রকৃত পার্সি জনসংখ্যা কত তা এখনো সঠিকভাবে নির্ণয় করা কঠিনসাধ্য।
( সূত্র;-আরজ আলী
মাতুব্বর রচিত সূষ্টি রহস্য বই থেকে
নেওয়া তথ্য দিয়ে এই লেখাটি তৈরি করা হয়েছে । এবং ইস্টিশন ব্লগ থেকে একটি সম্পূর্ণ লেখা তুলে ধরা হয়েছে এই লেখার সঙ্গে ৷ সৌজন্য ;-: পৃথু স্যন্যাল এই লেখাটির লেখক ৷ )
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন