ধর্ম নিয়ে যত কথা

ধর্ম নিয়ে যতো কথা (সংকলন) পরের অংশ ;

( ২ ) জব্বুর ; কথিত আছে, হজরত দাউদ(আ) নবীর উপর জব্বুর কেতাব অবতীর্ণ হইয়াছিল । অর্থাৎ তাঁহার আদেশ--উপদেশগুলিই জব্বুর নামে অভহিত । তাঁহার জন্ম খ্রী. পূ. ১০৩১ সালে এবং মৃত্যু খ্রী. পূ. ৯৭১ সালে । প্রায় ২৯৮৩ বছর আগে তাঁহার মৃত্যু হয়েছে, কাজেই জব্বুর গ্রন্থের সৃষ্টিকাল প্রায় উহাই । লক্ষাধিক নবী---আম্বিয়াগণ ,কিছু না কিছু ঐশ্বরিক বাণী প্রাপ্তির দাবি করিয়াছেন, এবং তাঁহাদের অনেকের বাণীই প্রাচীন বিধান বাইবেলে স্থান পাইয়াছে । কিন্তু যীশু খ্রীস্টের আগের কোনো নবীই হজরত মুসা (আ) এর ধর্ম বিধি ছাড়া অন্য ধর্ম মত প্রচার করেন নাই। বরং সকলেই ছিলেন হজরত মুসা (আ) এর সমর্থক ও পরিপূরক । এমনকি হজরত দাউদ (আ) ও স্বতন্ত্র কোনো ধর্ম মত প্রচার করে নাই ।

(৩) ইঞ্জিল ; ইঞ্জিলকে ঐশ্বরিক গ্রন্থ বলা হয় । কিন্তু ইহা তৌরিতের মতো মহাপ্রভুর (স্রষ্টার) নিজের মুখের বাণী নহে, যীশুর মুখের বাণী । তিঁনি কুমারী মরিয়মের গর্ভে জন্মগ্রহন করেন । যীশুর আদেশ--উপদেশ ও বিধি--নিষেধসমূহকে ঈসায়ীগন ঐশ্বরিক বাণী রূপে গ্রহন করিয়া থাকেন । যীশু ও মহাপ্রভুর দর্শন পাইয়াছিলেন । তিঁনি নদীতে বাপ্তাইজিত হইয়া জর্দান নদীর তীরে দেখিতে পাইলেন, একটি কবুতর পাখি উড়িয়া তাঁহার মাথার উপর আসিতেছে। তিনি ভাবিলেন, ঐ কবুতরটি ঈশ্বরের আত্না। আর তিনি শুনতে পাইলেন, কবুতরটি বলিয়া গেল , “ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, ইঁহাতেই আমি প্রীত” । এই বণীটির দ্বারাই যীশু পাইলেন ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব । যীশু পয়গম্বরী প্রাপ্ত হন ৩০ বৎসর বয়সে । তাঁর প্রচারিত ধর্মই খ্রীস্টিয়ান ধর্ম , এবং তাঁহার মতামতসমুহই নুতন নিয়ম বা ইঞ্জিল কেতাব , যার বয়স প্রায় এখন ২০০০বৎসর।


ধর্ম নিয়ে যতো কথা (সংকলিত) কতিপয় ধর্মগ্রন্থ, সৃস্টি র আরো কিছু অংশ;

(৩) জেন্দ--আভেস্তা; পারসিকদের ধর্মগ্রন্থ, পারসিকেরা উহাকে ঐশ্বরিক গ্রন্থ বলেন । তাঁহাদের ধর্মগুরু জোরওয়াস্টার একদা কোনো পর্বতশিখরে উপাসনায় আসীন থাকাকালে সেখানে বজ্রধ্বনি ও বিদ্যুতস্ফূরণের মধ্যে তাঁহার আরাধ্য দেবতা ‘ অহুর মজদা’র আবির্ভার হয় এবং তাঁহার নিকট হইতে তিনি জেন্দা--আভেস্তা গ্রন্থখানা প্রাপ্ত হন। উহার আবির্ভাবকাল প্রায় খ্রী. পূ. ৬১৯৩ সাল । বেরোসাসের মতে খ্রী. পূ. ১৭৯৩, স্পিগেলের মতে খ্রী .পূ. ১৯২০ সাল , মোটামোটি ইহার বয়স প্রায় পৌনে চারি হাজার বৎসর । তাদের মতে , ঈশ্বর অদ্বিতীয়, এবং সৎকাজের উদ্যোক্তা অহুর মজদা, তাদের ঈশ্বর ,এবং অসৎকাজের সৃস্টিকর্তা আহরিমান , (বর্তমানের শয়তান)

(৪) বইবেল ; ইহা ৬৬খানা ক্ষুদ্র পুস্তকের সমষ্টি এবং দুই ভাগে বিভক্ত । প্রথম ভাগকে বলা হয় পুরাতন নিয়ম (old Testament), ইহাতে পুস্তকের সংখ্যা ৩৯ এবং দ্বিতীয় ভাগকে বলা হয় নূতন নিয়ম(New Testament),ইহাতে পুস্তকের সংখ্যা ২৭ । মুসলমানরা যাহাকে তাউরাত(তোরিত) ও জব্বুর কেতাব বলেন, উহা পুরাতন নিয়মের অন্তর্ভুক্ত এবং নুতন নিয়মের অন্তর্ভুক্ত ইঞ্জিল কেতাব । যাঁহারা পুরাতন নিয়ম মানিয়া চলেন, তাঁহাদিগকে বলা হয় ইহুদি এবং যাঁহারা নুতন নিয়ম অনুসরণ করেন, তাঁহাদিগকে খ্রীস্টিয়ান বলা হয় । উভয় গ্রন্থাবলীকে ঐশ্বরিক মনে করা হয় ।
কিন্তু মুসলমানরা তৌরিত, জব্বুর ও ইঞ্জিল-- এ নাম কয়টিকে ঐশ্বরিক বলিয়া স্বীকার করেন, গ্রন্থকে নহে । কারণ, হাল আমলের গ্রন্থগুলো না-কী আসল নহে ,উহা কৃত্রিম ।
তৌরিত ; ইহুদিদের মতে, হজরত মুসা (আ) তূর পর্বতের চূড়ায় ভগবান জাভে (ইহুদিদের ঈশ্বর) এর দর্শন লাভ করেন ও তাঁহার বাণী শ্রবণ করেন জাভে-এর স্বহস্তে লিখিত দশটি আদেশ সম্বলিত দুইখানা পাথর প্রাপ্ত হন । উহাই তৌরিত গ্রন্থের মূলসুত্র।
অতঃপর বহুদিন বিভিন্ন সময়ে হজরত মুসা (আ) জাভের নিকট হইতে যে সমস্ত আদেশ -উপদেশ প্রাপ্ত হইয়াছেন, তাহাও উক্ত গ্রন্থে স্থান পাইয়াছে । পার্শি ধর্ম প্রবর্তক জোরওয়াস্টারও অনুরূপ বজ্র-বিদ্যুতের মধ্যে পাহারচুড়ায় তাঁহার ধর্ম বিধি জেন্দা-আভেস্তা গ্রন্থ খানা পাইয়াছিলেন ।



ধর্ম নিয়ে যতো কথা (সংকলিত) কতিপয় ধর্মগ্রন্থ, সৃস্টি র আরো কিছু অংশ;

(৩) জেন্দ--আভেস্তা; পারসিকদের ধর্মগ্রন্থ, পারসিকেরা উহাকে ঐশ্বরিক গ্রন্থ বলেন । তাঁহাদের ধর্মগুরু জোরওয়াস্টার একদা কোনো পর্বতশিখরে উপাসনায় আসীন থাকাকালে সেখানে বজ্রধ্বনি ও বিদ্যুতস্ফূরণের মধ্যে তাঁহার আরাধ্য দেবতা ‘ অহুর মজদা’র আবির্ভার হয় এবং তাঁহার নিকট হইতে তিনি জেন্দা--আভেস্তা গ্রন্থখানা প্রাপ্ত হন। উহার আবির্ভাবকাল প্রায় খ্রী. পূ. ৬১৯৩ সাল । বেরোসাসের মতে খ্রী. পূ. ১৭৯৩, স্পিগেলের মতে খ্রী .পূ. ১৯২০ সাল , মোটামোটি ইহার বয়স প্রায় পৌনে চারি হাজার বৎসর । তাদের মতে , ঈশ্বর অদ্বিতীয়, এবং সৎকাজের উদ্যোক্তা অহুর মজদা, তাদের ঈশ্বর ,এবং অসৎকাজের সৃস্টিকর্তা আহরিমান , (বর্তমানের শয়তান)

(৪) বইবেল ; ইহা ৬৬খানা ক্ষুদ্র পুস্তকের সমষ্টি এবং দুই ভাগে বিভক্ত । প্রথম ভাগকে বলা হয় পুরাতন নিয়ম (old Testament), ইহাতে পুস্তকের সংখ্যা ৩৯ এবং দ্বিতীয় ভাগকে বলা হয় নূতন নিয়ম(New Testament),ইহাতে পুস্তকের সংখ্যা ২৭ । মুসলমানরা যাহাকে তাউরাত(তোরিত) ও জব্বুর কেতাব বলেন, উহা পুরাতন নিয়মের অন্তর্ভুক্ত এবং নুতন নিয়মের অন্তর্ভুক্ত ইঞ্জিল কেতাব । যাঁহারা পুরাতন নিয়ম মানিয়া চলেন, তাঁহাদিগকে বলা হয় ইহুদি এবং যাঁহারা নুতন নিয়ম অনুসরণ করেন, তাঁহাদিগকে খ্রীস্টিয়ান বলা হয় । উভয় গ্রন্থাবলীকে ঐশ্বরিক মনে করা হয় ।
কিন্তু মুসলমানরা তৌরিত, জব্বুর ও ইঞ্জিল-- এ নাম কয়টিকে ঐশ্বরিক বলিয়া স্বীকার করেন, গ্রন্থকে নহে । কারণ, হাল আমলের গ্রন্থগুলো না-কী আসল নহে ,উহা কৃত্রিম ।
তৌরিত ; ইহুদিদের মতে, হজরত মুসা (আ) তূর পর্বতের চূড়ায় ভগবান জাভে (ইহুদিদের ঈশ্বর) এর দর্শন লাভ করেন ও তাঁহার বাণী শ্রবণ করেন জাভে-এর স্বহস্তে লিখিত দশটি আদেশ সম্বলিত দুইখানা পাথর প্রাপ্ত হন । উহাই তৌরিত গ্রন্থের মূলসুত্র।
অতঃপর বহুদিন বিভিন্ন সময়ে হজরত মুসা (আ) জাভের নিকট হইতে যে সমস্ত আদেশ -উপদেশ প্রাপ্ত হইয়াছেন, তাহাও উক্ত গ্রন্থে স্থান পাইয়াছে । পার্শি ধর্মপ্রবর্তক অনুরূপ ভাবে জেন্দা-আভেস্তা গ্রন্থখানা ও পাইয়াছিলেন।



ধর্ম নিয়ে যতো কথা (সংকলিত ) আরজ আলী মাতুব্বর এর সৃষ্টী রহস্য বই থেকে কিছু উদ্ধৃতি ; কতিপয় ধর্মগ্রন্থ সৃষ্টি প্রসঙ্গে ;

(৮) “ সভ্য মানব সমাজে ধর্ম বহু এবং ধর্ম গ্রন্থ ও অনেক। উহার মধ্যে কয়েকটিকে বলা হয় ঐশ্বরিক গ্রন্থ । এইখানে কয়েকখানা প্রসিদ্ধ ধর্মগ্রন্থ এর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হইল ।
(১) বেদ ; হিন্দুদের মূল ধর্মগ্রন্থ বেদ ।এই দেশের আর্ষ হিন্দুদের একান্ত বিশ্বাস যে, পরমপিতা ভগবান অগ্নী, বায়ু, আদিত্য ও অঙ্গিরা--এই চারিজন ঋষিকে সর্বাপেক্ষা বিশুদ্ধচিত্ত দেখিয়া ইঁহাদের হৃদয়ে অধিষ্ঠিত হইয়া, এই চারিজনের মুখ দিয়া ঋক, সাম, যজু ও অর্থব এই চারি বেদ প্রকাশ করিয়াছেন । আবার কেহ কেহ বলেন যে , বেদ সেই অনাদি অনন্ত ঈশ্বরের নিঃশ্বাসে সৃষ্ট, কোনো মানুষ ইহার রচয়িতা নহেন । বেদ ঐশ্বরিক ।
হিন্দু ধর্মের যাবতীয় একান্ত করণীয় বিষয়ই বেদে বর্ণিত আছে।..ঐতিহাসিকদের
মতে, বেদ ঐশ্বরিক পুঁথি নহে । কেননা ইহা, প্রাচীন মুনি-ঋষিদের ও আর্ষ সভ্যতার ইতিহাস মাত্র । আবার বেদের যাবতীয় কারবার ভারতবর্ষেই সীমাবদ্ধ । ঋগ্বেদে ২১৪ জন ঋষির নাম পাওয়া যায় , ১২ জন স্ত্রীলোক সহ, এবং বোধ হয় যে উহারাই বেদের কোনোও না কোনোও অংশের রচয়িতা । এবং উহার লিখিত শ্লোকগুলো তৎকালীন আর্য ঋষিদের ধ্যান--ধারণা, অভিজ্ঞতা ও কল্পনার সৃষ্টি ।
অধুনাতন পাশ্চাত্য পন্ডিতগণ বেদ কে পৃথিবীর আদিগ্রন্থ বলিয়া নির্দেশ করেন ।

(২) আমদুয়াত, ফটক ও মৃতের গ্রন্থ ;
প্রাচীন মিশরীয়দের ধর্মপুস্তক ছিল আমদুয়াত গ্রন্থ, ফটকের গ্রন্থ ও মৃতের গ্রন্থ । প্রাচীন মিশরীয়রা এগুলিকে ঐশ্বরিক গ্রন্থ বলিয়া মনে করিত , এগুলার কোনো প্রত্যক্ষ রচয়িতা নাই বলিয়া । গ্রন্থত্রয়ের আলোচ্য , পারলৌকিক জীবন বিষয়ক বলে তারা মনে করত, ইহা মানবীয় জ্ঞানে লিখা সম্ভব নয় । ইহা অতিমানবের রচনা ।প্রাকপিরামিড যুগের মিশরবাসীগন তাহাদের সমাধিমন্দিরগুলির গায়ে অথবা প্যাপিরাসে লিখিয়া বা অঙ্কিত করিয়া রাখিত মৃতের পরলোক বিষয়ক নানা রকম কল্পিত চিত্র ।কালক্রমে ঐগুলির লেখক বা রচিয়তা কে বা কাহারা, তাহা র কোনো হাদিস পাওয়া যাইত না বলে এগুলিকে দৈব বা ঐশ্বরিক বাণী মনে করা হইত । উহা খ্রী.পূ. ৩০০০বছর আগের রচনা বা তারও আগের রচনা হিসাবে ধরা হয় ।



ধর্ম নিয়ে যতো কথা (সংকলিত) আরজ আলী মাতুব্বর এর কথার পরের অংশ,
(৮) “ কেবল যে বিভিন্ন ধর্মে বিভিন্ন মত এমন নয়। একই ধর্মের ভিতরেও মতভেদের অন্ত নেই । হিন্দু ধর্মের বেদ যাহা বলে, উপনিষদ সকল ক্ষেত্রে তার সঙ্গে একমত নয়। বাইবেলের পুরাতন নিয়ম ও নুতন নিয়মে অনেক পার্থ্যক্য । আবার প্রোটেষ্ট্যান্ট ও ক্যাথলিকদের মধ্যে ও অনেক মতানৈক্য রয়েছে। পবিত্র কোরানপন্থীদের মধ্যে মতবৈষম্য কম নয় ? শিয়া , সুন্নী, মুতাজিলা, ওহাবী, কাদিয়ানী, খারিজী ইত্যাদি সম্প্রদায়ের মত ও এক নয় , অবার একই সুন্নি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হানাফী, শাফী ইত্যাদি চার মজহাবের মতামতও এক নয় । হানাফী মজহাবের পীরদেরও রয়েছে বিভিন্ন রেছালা । আবার সকল সম্প্রদায়ের ধর্মযাজকেরা এই কথাই বলে থাকেন যে , তাঁদের আপন আপন ধর্মই একমাত্র সত্যধর্ম, অন্য কোন ধর্মই সত্য নয় । তাই তৌরিত, জব্বুর, ইঞ্জিল, কোরআন, বেদ-পুরাণ, জেন্দ-আভেস্তা ইত্যাদি ঐশ্বরিক পুঁথি কি না, জানি না ,কিন্তু এগুলোকেই সত্য গ্রন্থ বলা হয়ে থাকে, এবং যে, এগুলোকে মিথ্যা বলে, তাকে মিথ্যাবাদী ,অবিশ্বাসী, পাপী ও নারকী বলা হয়ে থাকে।
ধর্মের মূল ভিত্তি বিশ্বাস , কিন্তু এর উৎপত্তির কারণ ধর্ম অনুসন্ধান করে না । জ্ঞানের সহিত বিশ্বাসের ঘনিষ্ঠতম সম্পর্ক । জ্ঞানমাত্রেই বিশ্বাস । তবে যে কোন বিশ্বাস জ্ঞান নয় । প্রত্যক্ষ ও অনুমান, এই দু-টির উপর বিশ্বাস বা জ্ঞান প্রতিষ্ঠিত। যে বিশ্বাসের মুলে প্রত্যক্ষ বা অনুমান নেই, তাহা খাঁটি বিশ্বাস নয়, তাহা অন্ধ বিশ্বাস । বিজ্ঞান প্রত্যক্ষ ও অনুমানের উপর প্রতিষ্ঠিত। তাই বৈজ্ঞানিক তত্ত্বে সন্দেহ হয় না । কিন্তু অধিকাংশ ধর্ম এবং ধর্মের অধিকাংশ তথ্য অন্ধ বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত ।
রাষ্টের ন্যায় ধর্মসমুহের আয়ত্তে তোপ-কামান-ডিনামাইট বা এটমবোম নেই, যার দ্ধারা একে অন্যের ধ্বংস সাধন করতে পারে। ধর্মের হাতে আছে মাত্র দু-টু অস্ত্র--আশীর্বাদ ও অভিশাপ । এহেন অস্ত্র সমুহ ব্যক্তিবিশেষের উপর ক্রিয়াশীল কিনা, জানি না, কিন্তু কোন সম্প্রদায় বা জাতির উপর একেবারেই অকেজো ,” । চলবে….




ধর্ম নিয়ে যতো কথা (সংকলিত)
(৬) আরজ আলী মতুব্বর বাংলাদেশের এক বিস্ময়কর ব্যক্তিত্ব । গ্রামে মানবেতর জীবন যাপন করতেন ।এক ধর্মীয় ও সামাজিক আঘাতের পর নিজের প্রচেষ্টায় লেখা পড়া শিখে , প্রায় সত্তর বছর জ্ঞান সাধনা করেছেন । তিনি ধর্মের নামে, কুসংস্কার সত্য , না বিজ্ঞানলব্ধ জ্ঞান সত্য ? এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে , বিপুলভাবে ধর্ম , দর্শন , ও বিজ্ঞানের গ্রন্থ অধ্যায়ন করেন । আজ থেকে ৬০ বছর আগে , সত্যের সন্ধান ও সৃষ্টি রহস্য নামে দু-টি বই লেখেন । বর্তমানে ঐ বই দু-টি বাঙলা দেশে লৌকিক দর্শনের বই হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে । এখানে তার বই ও চিন্তাধারার কিছু উদ্ধৃত করা হলো ।
তিনি মনে করেন, ধর্ম যুগে যুগে মানুষকে সুশৃঙ্খল করে শুভ ও মঙ্গলের পথে নিয়ে যেতে চেয়েছে । পৃথিবীতে এমন কোন ধর্ম নেই যা মানুষকে অমঙ্গলের পথে নিয়েছে। তাই ধর্মের একটা প্রগতিশীল ভূমিকা ছিল । কিন্তু কালে কালে এক শ্রেণীর মানুষ ধর্মকে কুসংস্কারে আচ্ছন্ন করে মানুষ্যত্ব বিবর্জিত করে ফেলেছে এবং বর্তমান মনুষ্যত্বহীন ও ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তার যোতো অভিযোগ। তিনি বিশ্বাস করেন, একটা দেশের সমাজ অশিক্ষা ও কুসংস্কার থেকে মুক্ত হলে, সে দেশের রাজনীতি ও স্বচ্ছ হয় ।
তিনি বলেছেন ; “ জগতে এমন অনেক বিষয় আছে, যে সব বিষয়ে দর্শন, বিজ্ঞান, ও ধর্ম এক কথা বলে না । আবার ধর্মজগতেও মতানৈক্যের অন্ত নাই। যেখানে একই কালে দুইটি মত সত্য হতে পারে না, সেখানে শতাধিক ধর্মে প্রচলিত শতাধিক মত সত্য হবে কিরূপে ? যদি বলা হয় যে সত্য হবে একটি ; তখন প্রশ্ন হবে কোনটি এবং কেন ? অর্থাৎ সত্যতা বিচারের মাপকাঠি (criterion of truth) কী ? সত্যতা প্রমাণের উপায় (test of truth) কি এবং সত্যের রূপ(nature of truth) কী ?”
তিনি মনে করেন; “ সাধারণত আমরা যাকে ‘ধর্ম’ বলি তা হলো মানুষের কল্পিত ধর্ম। যুগে যুগে মহাজ্ঞানীগন এই বিশ্বসংসারের স্রষ্টা ঈশ্বরের প্রতি মানুষের কর্তব্য কি তাহা নির্ধারণ করার প্রয়াস পেয়েছেন । স্রষ্টার প্রতি মানুষের কি কোন কর্তব্য নেই ? নিশ্চয় ই আছে ,-এ রূপ চিন্তা করে তাঁরা ঈশ্বরের প্রতি মানুষের কর্তব্য কি তাহা নির্ধারণ করে দেন। অধিকন্তু মানুষের সমাজ ও কর্মজীবনের গতিপথও দেখায়ে দিলেন সেই মহাজ্ঞানীগণ। এই রূপে কল্পিত ধর্মের আবির্ভাব । কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন মনীষী বা ধর্মগুরুদের মতবাদ হইলো ভিন্ন ভিন্ন ।




ধর্ম নিয়ে যতো কথা (সংকলিত)

(৬) মরমী কবি হাসন রাজা বলেছেন, তার এক গানে; “ আমা--হতে আল্লাহ্, রসুল, আমা--হতে নূর”…।
মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রার্থনা হচ্ছে ‘ অন্তর মম বিকশিত কর অন্তরতর হে’ । কিন্তু এই প্রার্থনাই আমাদের জন্য হারাম, নিষিদ্ধ । অন্তরকে বিকশিত না ক’রে চেপে মারার জন্য আমরা বেশী প্রস্তুত । একটা সম্প্রদায়ের পক্ষে এ অত্যন্ত মারাত্নক ব্যবস্থা । মানব--মঙ্গল ও লোকস্থিতির দ্যোতনায়ই শাস্ত্রের সৃষ্টি । অন্তরকে প্রাধান্য না দিয়ে শাস্ত্রকে প্রাধান্য দেওয়ায় শুভবুদ্ধিটুকুও আমাদের অনুভবে আসে না। সঙ্গীত চর্চা ,ছবি আকাঁ, ইত্যাদির জন্যে ও খোঁজো শাস্ত্রের আদেশ ,দেখ শরীয়ত কি বলে ; বিশ্ব কবি গ্যেটে বলেছেন --‘ All your ideals shall not prevent me from being genuine and good and bad like nature- ‘ আকুতোভয় মানুষের এই চরম আদর্শ হওয়া উচিত নয় কী ?
শাস্ত্রের প্রধান্য হৃদয়ের অন্ধকারে দুরীভূত করে না , ঘনীভূতই করে । এ ব্যাপারে কবি রবীন্দ্রনাথ বলেছেন ; ‘ আমরা বাইরের শাস্ত্র থেকে যে ধর্ম পাই সে কখনো আমার ধর্ম হয়ে উঠে না ।তার সঙ্গে কেবল মাত্র একটা অভ্যাসের যোগ জন্মে ; ধর্মকে নিজের মধ্যে উদ্ভুত ক’রে তোলাই মানুষের চিরজীবনের সাধনা ? চরম বেদনায় তাকে জন্মদান করতে হয় ।…..যা মুখে ব’লছি, যা লোকের মুখে শুনে প্রত্যহ আবৃত্তি ক’রছি তা যে আমার পক্ষে কতই মিথ্যা তা আমরা বুঝতে পারি নে । ……অন্যান্য বিষয়ের মত ধর্ম ব্যাপারেও মৌলিক হ’তে না পারলে বিশেষ মূল্য থাকে না । সত্যকার ধার্মিকের ধর্ম বাইরে থেকে পাওয়া নয় , সে তার নিজের এক সৃষ্টি--তাঁর কল্পনা , তপস্যা মহৎ ও সুন্দর হ’বার বাসনা, কাজ করেছে পেছনে । সে এক সজীব জিনিষ ।“
তাই বোধ হয় কবি লিখেছেন --“ সীমার মাঝে, অসীম,তুমি
বাজাও আপন সুর ।
আমার মধ্যে তোমার প্রকাশ
তাই এত মধুর ।….
আমার মধ্যে তোমার শোভা এমন সুমধুর ।“




ধর্ম নিয়ে যতো কথা (সংকলিত)

(৫) “ সতেরো শতক বিজ্ঞানের সুবর্ণযুগ । এই সময়ই মহাবিজ্ঞানী নিউটনের আবির্ভাব হয়েছিল । নিউটনই হচ্ছেন এ- যুগ পরিবর্তের নায়ক । তাঁর আবিষ্কারে, সারা দুনিয়া প্রাকৃতিক নিয়মে চলছে, এ কথা স্বীকৃতি লাভ করল । ফলে, ধর্মের নামে যে সমস্ত অলৌকিক ঘটনা অস্বাভাবিকভাবে সংঘটিত হয় বলে সাধারন মানুষ এতদিন বিশ্বাস করত, সে ধারণা পাল্টে গেল । কিন্তু ঈশ্বরে বিশ্বাস অটুটই রইল । নিউটন বোঝালেন, প্রকৃতির নিয়মগুলো ঈশ্বরের ইচ্ছারই প্রকাশ ।
কিন্তু দু’-শ’ বছর যেতে না যেতেই বিজ্ঞানের ক্রমিক বিবর্তনের ফলে এই বিজ্ঞানসম্মত বিশ্বাসবাদের ভিত্তি আস্তে আস্তে ভেঙ্গে শিথিল হ’ল । চার্লস ডারউইন ১৮৫৯ খৃষ্টাব্দে যখন তার “অরিজিন অব স্পিসিজ” ও ১৮৭১ খৃস্টাব্দে “ ডিসেণ্ট অব ম্যান” - এ নানা গবেষণার পর মানুষকে বানরেরই অধস্তন পুরুষ বলে ঘোষণা করলেন, তখন সে বৈজ্ঞানিক বিশ্বাসের নুতন ইমারৎ ধ্বসে পড়ল ও ধর্ম ঘাজক সম্প্রদায়ে বিশেষ চাঞ্চল্য জাগল । ১৫৪৩ খৃষ্টাব্দে কোপারনিকাস , চার্চের প্রচলিত মতের বিরুদ্ধে , লিখেছিলেন- সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে না -- পৃথিবীই সূর্যের চারদিকে ঘোরে, সেদিন এর অর্ধেক চাঞ্চল্যও জাগেনি । ইহুদী --পুরাণে আছে, ঈশ্বর ছয় দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করে সপ্তম দিনে সৃষ্টির আনন্দমুখর ক্লান্তি বিশ্বরামের দ্বারা দুর করেছিলেন । তাঁর ইচ্ছায় জগতের বিভিন্ন প্রাণীজাতি সৃষ্টি হয়েছিল--এক জাতির অন্য জাতিতে রূপান্তর হয় নি । আর সে সৃষ্টির
মধ্যে সেরা । ডারউইনের বিবর্তনবাদ ইহুদী পুরাণের সৃষ্টি--কাহিনীকে উড়িয়ে দিয়েছিল।
ইহুদী পুরাণের সৃষ্টি--কাহিনী প্রচলিত খৃষ্টধর্মেরও ভিত্তি । ডারউইনের ক্রমবিকাশবাদ প্রণীজগতে সীমাবদ্ধ ছিল--এক প্রাণীজাতির অন্য প্রাণীজাতিতে--রূপান্তর , তাঁর মূল বক্তব্য । ডারউইনের প্রায় সমসাময়িক হার্বার্ট স্পেনসার সমগ্র বিশ্বের ওপর বিবর্তনবাদ প্রযোগ করলেন । …….দেখাতে চেষ্টা করলেন, সারা বিশ্বই ক্রমবিকাশের পরিণতি। এই ভাবে উনিশ শতকে স্রষ্টা সৃষ্টি--কাহিনী থেকে বাদ পড়ে গেলেন “ । আর এযুগেই হেগেলীয় আধ্যাত্নবাদের আওতা থেকে বেরিয়ে এসে কার্লমার্কস্ গতিবাদী দ্ধন্দূমূলক জড়বাদ ও বিপ্লবের সাহায্যে শ্রেণীবিহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা প্রচার করলেন।



ধর্ম নিয়ে যোতো কথা ( সংকলিত)..

(৩) “ ধর্মের বই গুলো সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়, এগুলো আদিম মানুষের কল্পনাও পরবর্তীদের সুপরিকল্পিত মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত । পুরাণ ও ধর্মের এ- সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে বুঝা যায় , মানুষই ভূল কল্পনার পর ভূল কল্পনা ক’রে সৃষ্টি করেছে এগুলো । ধর্মের বই গুলো ঋণী মানুষের আদিম পুরাণগুলোর কাছে । মানুষ কতটা মিথ্যা বলতে ও বিশ্বাস করতে পারে, তার অসামান্য উদাহরণ জেসাস বা খ্রিস্ট । জেসাস মানুষের শ্রেষ্ঠ কল্পচরিত্র ; গত দু- শো বছরের বাইবেলবিজ্ঞানীরা , যাদের অনেকেই ধার্মিক পুরোহিত, প্রমাণ করেছেন যে জেসাস নামে কেউ ছিলো না । জেসাসকে সৃষ্টি করা, তাকে ঘিরে পুরাণ, ও একটি নুতন ধর্ম বানানোর সমস্ত কৃতিত্ব খ্রিস্টান সুসামাচারপ্রণেতাদের । ক্রাইস্ট এক কিংবদন্তি বা পুরাণ ।
ডেভিড স্ট্রাউস- লাইফ অফ জেসাস ক্রিটিক্যেলি এক্জ্রামিন্ড- (১৮৩৫) এ বলেছেন গসপেল বা সুসামাচারগুলো জেসাসের ঐতিহাসিক জীবনী নয় ; তাঁরা চেয়েছিলেন ধর্মীয় পুরান লিখে তাঁদের প্রবর্তিত ধর্মে মানুষদের দীক্ষিত করতে। স্ট্রাউসের মূল কথা মিসাইআ বা ত্রাতার আগমন সম্পর্কে ইহুদিরা দীর্ঘকাল ধ’রে যে প্রত্যাশা ক’রে আসছিলো, গল্পগুলো তারই গল্পায়ন । সুসামাচারগুলো উপন্যাসের থেকে সত্য নয় , জেসাসও সত্য নন উপন্যাসের নায়কের থেকে” ।
(৪) টমাস পেইন- এইজ অফ রিজন বা যুক্তির যুগ গ্রন্থে বলেছেন ; “ প্রত্যেক জাতীয় গির্জা বা ধর্ম এটার ভান করে নিজকে প্রতিষ্ঠিত করেছে যে সেটি পেয়েছ ঈশ্বরের বিশেষ বাণী, যা জ্ঞাপন করা হয়েছে বিশেষ বিশেষ ব্যক্তির কাছে । ইহুদির আছে মোজেস ; খ্রিস্টানদের আছে জেসাস ক্রাইস্ট, তার শিষ্য ও সন্তরা ; এবং তুর্কিদের আছে তাদের মাহোমেট, যেনো ঈশ্বরের পথ সব মানুষের জন্য খোলা নয় । ……. ইহুদিরা বলে ঈশ্বর মুসার কাছে , মুখোমুখি দাঁড়িয়ে , দিয়েছেন তাদের ঈশ্বরের বাণী ; খ্রিস্টানরা বলে তাদের ঈশ্বরের বাণী এসেছে ঐশ্বরিক অনুপ্রেরণার মধ্য দিয়ে ; এবং তুর্কিরা বলে তাদের ঈশ্বরের বাণী স্বর্গ থেকে নিয়ে এসেছে একজন দেবদুত । ওই গর্জাগুলো একটি অন্যটিকে অবিশ্বাসী ব’ লে অভিযুক্ত করে , এবং আমি নিজে এগুলোর প্রত্যেকটিকে অবিশ্বাস করি” ।


ধর্ম নিয়ে যতো কথা (সংকলিত)
(১) বিজ্ঞানী আইনষ্টাইন ১৯৫৪ সালে এক চিঠিতে লিখেছেলেন ;
“ ঈশ্বর (GOD) শব্দটি আমার কাছে মানুষের দুর্বলতার বহির্প্রকাশ ও দুর্বলতা থেকে উৎপাদিত বস্ত্তর চেয়ে বেশি কিছু মনে হয় না । বাইবেল গ্রন্থটি খুবই ন্যায়পরায়ন, তবে আদিম কিংবদন্তির বেশি কেছু নয় । তার চেয়ে বড় কথা , খুবই শিশুসুলভ এগোলো ।

(২) বার্ট্র্যান্ড রাসেল, আমি কেনো খ্রষ্টান নই বইটি’তে বলেছেন; “ সব ধর্মই ক্ষতিকর” । কোনো অলৌকিক জগত থেকে কেউ ধর্ম পাঠায় নি, যদিও এটা বিশ্বাস করার নির্দেশ দিয়ে ভয় দেখানো হয় । কোনো অলৌকিক জগত নেই, মানুষ নিয়ে কোনো অলৌকিক সত্তার কোনো উদ্বেগ নেই । মহাবিশ্বে মানুষ খুব ক্ষুদ্র………. ধর্ম লৌকিক- মানুষ প্রণীত ।
তিনি আরো বলেছেন ; “ আমার মনে হয় ক্রাইস্টের নৈতিক চরিত্রে রয়েছে একটি বড়ো ত্রুটি ; আর তা হচ্ছে যে তিনি বিশ্বাস করতেন নরকে । আমি মনে করি না যে গভীরভাবে মানবিক কোনো ব্যক্তি চিরশাস্তিতে বিশ্বাস করতে পারেন । সুসমাচারে ক্রাইস্টকে যেভাবে চিত্রিত করা হয়েছে তাতে এটা স্পষ্ট যে তিনি চিরশাস্তিতে বিশ্বাস করতেন । তাঁর কথায় যারা বিশ্বাস করে না তাদের বিরুদ্ধে একটা প্রতিহিংসামূলক ক্রোধ ধর্ম প্রচারকদের মধ্যে সব সময়ই দেখা যায়”।
রাসেল আরো বলেছেন ; “ ধর্ম , আমার মনে হয়, প্রথমত ও প্রধানত দাঁড়িয়ে আছে ভয়ের ওপর ভিত্তি ক’রে । এর অংশবিশেষ অজানার সন্ত্রাস, এবং অংশ বিশেষ হচ্ছে এমন বোধ যে আমার রয়েছে এক জ্যেষ্ঠভ্রতা, যে বিপদে আপদে আমার পাশে এসে দাঁড়াবে । সম্পূর্ণ ব্যাপারটির ভিত্তি হচ্ছে ভয়-অলৌকিকের ভয়, পরাজয়ের ভয়, মৃত্যুর ভয় । ভয় নিষ্ঠুরতার জনক, এবং এতে বিস্ময়ের কছু নেই যে নিষ্ঠুরতা ও ধর্ম এগিয়েছে হাতে-হাত ধ’ রে”। প্রার্থনার বিষয়ে তিনি বলেছেন ; “ প্রার্থনা বা বিনয়ের সাহায্যে আপনি নিজের ইচ্ছেমতো কিন্তু কিছুই বদল করতে পারেন না, কিন্তু পারেন প্রাকৃতিক নিয়ম সম্মন্ধে জ্ঞানলাভ ক’রে,……প্রার্থনার রয়েছে বিশেষ সীমা ,কিন্তু বিজ্ঞানের শক্তির কোনো,
সীমা নেই এবং সবাই বিজ্ঞানের কথা ও শক্তি বিশ্বাস ক’রে”।





মন্তব্যসমূহ